কলকাতা : বাড়িতে কোনও বিয়ের অনুষ্ঠান (marriage) হোক বা অন্নপ্রাশন। কোনও ধর্মীয় অনুষ্ঠান বা উৎসব উদযাপন। কিংবা কোথাও ভ্রমণে যাবেন। এসবের জন্য শুভক্ষণ দেখে নেওয়ার একটা চল রয়েছে হিন্দুধর্মে। আর তার রেফারেন্স হল- পঞ্জিকা (panjika) বা পাঁজি। এই বইয়ে উল্লেখ থাকে- কালবেলাদি, কালরাত্রি ও যাত্রা-র কথা । কাজেই, গৃহস্থের বাড়িতে একটি পাঁজি থাকবে না, এমনটা সচরাচর দেখাই যায় না।


কিন্তু, এই পাঁজি (paji) লেখা হয় কীভাবে ? এই বই আসলে অনেকটা জ্যোতিষ-শাস্ত্র অবলম্বন করে লিপিবদ্ধ হয়। তাই অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই বইয়ে ব্যবহৃত কিছু শব্দবন্ধনী অনেকেরই বোধগম্য নাও হতে পারে। কিন্তু, জ্যোতিষীরা সেগুলি বুঝতে পারেন সহজেই। বিভিন্ন গ্রহ-নক্ষত্রের প্রভাবে, মানুষের যে ভাগ্য লেখা হয়ে যায় জন্মানোর সঙ্গে সঙ্গেই, সেসবের সুসময়, অসময়, কীভাবে এগোলে ভাল ফল মিলতে পারে-এইসব যাবতীয় তথ্য তুলে ধরা হয় বিভিন্ন পাঁজিতে। তার ওপর ভিত্তি করেই তৈরি হয় ভাগ্যচক্র। তাই, নতুন বছরের শুরুতেই বাঙালির গৃহস্থের বাড়িতে ঢুকে পড়ে একটা পাঁজি। আমাদের এই প্রতিবেদনে এবার থেকে প্রতিদিনের - কালবেলাদি, কালরাত্রি ও যাত্রা-সহ বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরা হবে।


আজ ৩ আশ্বিন, ২১ সেপ্টেম্বর -


সূর্যোদয়- সকাল ৫টা ২৮ মিনিট


সূর্যাস্ত- সন্ধে ৫টা ৩৩ মিনিট


কালবেলাদি- ২:৩২ গতে ৫:৩৩ মধ্যে


কালরাত্রি- ১১:৩১ গতে ১:০ মধ্যে


যাত্রা- শুভ দক্ষিণে নিষেধ, দিবা ৬:৩৭ গতে পশ্চিমেও নিষেধ, দিবা ১০:১৩ গতে মাত্র দক্ষিণে নিষেধ, দিবা ১২:৫৬ গতে পূর্বেও নিষেধ


শুভকাজ- দিবা ১০:১৩ মধ্যে দীক্ষা, ভূমি ক্রয়-বিক্রয়, দিবা ১২:৫৬ মধ্যে গ্রহপুজো, শান্তিস্বস্ত্যয়ন, দিবা ১২:৫৬ গতে ২:৩২ মধ্যে সাধভক্ষণ


(তথ্যসূত্র : বেণীমাধব শীল)


সরল স্বভাবের মানুষকে দুর্বল ভাবার ভুল করবেন না, এটা তাঁর সংস্কার; উল্লেখ গীতায়


শ্রীমদ্ভাগবত গীতায় ভগবান কৃষ্ণের সেই উপদেশগুলির বর্ণনা রয়েছে, যেগুলি তিনি মহাভারতের যুদ্ধের সময় অর্জুনকে দিয়েছিলেন। গীতায় বর্ণিত উপদেশে আজও একই রকম প্রাসঙ্গিক। জীবনযাপনের সঠিক পথ দেখায়। গীতায় ১৮টি অধ্যায় এবং ৭০০ শ্লোক রয়েছে, যাতে ধর্মের পথে চলার সময় ভাল কাজ করার শিক্ষা দেওয়া হয়েছে।


জীবনের সমস্ত দ্বিধা ও সমস্যার সমাধান গীতায় পাওয়া যায়। এটা মনে করা হয় যে, গীতার বাণী অনুসরণ করলে জীবন বদলে যায় এবং একজন মানুষ প্রতিটি কাজে সফল্য পান। আসুন জেনে নিই শ্রীমদ্ভাগবত গীতার অমূল্য ভাবনা সম্পর্কে।


গীতার গুরুত্বপূর্ণ উপদেশ-



  • শ্রীকৃষ্ণ গীতায় বলেছেন, মনের সত্যতা ও ভাল দিক কখনোই বৃথা যায় না। এই সেই উপাসনা যা স্বয়ং ভগবান অনুসন্ধান করেন।

  • বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা বুঝতে পারি যে, আমরা অকারণে সেই সমস্ত মানুষকে গুরুত্ব দিয়েছি যাদের আমাদের জীবনে কোনও অবদান ছিল না।

  • গীতায় লেখা আছে যে, জয় যদি শক্তির মাধ্যমে পাওয়া যেত, তাহলে অর্জুনের সারথি ভীম হতেন, শ্রীকৃষ্ণ নন। 

  • গীতায় শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, যে কোনও পরিস্থিতিতে ক্রোধ নিয়ন্ত্রণ করা শিখতে হবে। রাগ হলে মানুষ প্রায়ই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে শেষমেশ ভুল পদক্ষেপ নিয়ে ফেলে। ভবিষ্যতে যে কারণে আফসোসও করতে হয়। 

  • গীতায় লেখা আছে যে, সরল স্বভাবের মানুষকে দুর্বল ভাবার ভুল করবেন না। সরল স্বভাব তাঁর সংস্কার, দুর্বলতা নয়।

  • শ্রীমদ্ভাগবত গীতা অনুযায়ী, প্রত্যেক মানুষকে অবশ্যই আত্মমন্থন করতে হবে। তাতেই বোঝা যাবে, তাঁর মধ্যে কী গুণ আছে, আর কী অবগুণ। তাই, কিছুক্ষণ একা থেকে অবশ্যই আত্মনিরীক্ষণ করা প্রয়োজন।

  • শ্রীকৃষ্ণের উপদেশ অনুসারে, মানুষের তাঁর নিজের কর্ম অনুযায়ী ফল মেলে। তাই, ফলের কথা না ভেবে প্রত্যেককে নিজের কর্মের উপর মনোনিবেশ করা উচিত।


এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, বাড়িতে শ্রীমদ্ভাগবত গীতা রাখার এবং পাঠ করার সময় কিছু বিষয় মাথায় রাখা উচিত, তবেই আপনি সম্পূর্ণ ফল পাবেন। শ্রীমদ্ভাগবত গীতা গ্রন্থ একটি অত্যন্ত পবিত্র গ্রন্থ। এটি সর্বদা পুজোর স্থানে রাখুন। স্নান না করে এই বই স্পর্শ করবেন না। 


যে কোনও সময় গীতা পাঠ করা যেতে পারে, তবে আপনি যদি কোনও অধ্যায় শুরু করে থাকেন, তবে তা মাঝখানে না রেখে শেষ করেই আসন থেকে উঠবেন। পাঠ শুরু করার আগে ভগবান গণেশ এবং শ্রী কৃষ্ণকে স্মরণ করুন। আপনি যে ভঙ্গিতে প্রতিদিন আবৃত্তি করেন সেই ভঙ্গি ব্যবহার করুন। শ্রীমদ্ভাগবত গীতা নীচে বা মাটিতে রেখে পাঠ করা উচিত নয়। এর জন্য পুজোর চৌকি বা কাঠ (কাঠের স্ট্যান্ড) ব্যবহার করুন।