ফলহারিনী কালীপূজোর মাহাত্ম্য: জৈষ্ঠ্য মাসের অম্যাবস্যা তিথিতে ফলহারিনী কালীপুজো করা হয়। মনে করা হয়, এই অমাবস্যা তিথিতে দেবীর আরাধনায় মোক্ষফল প্রাপ্তির যোগ তৈরি হয়। উল্লেখ্য, মা তারা এ দিন ফলহারিনী দেবী রূপে পূজিত হন। কথিত আছে, এই দিন মা কালী মানুষের সমস্ত খারাপ কর্মফলকে নিজের মধ্যে ধারণ করেন। পাশাপাশি কর্ম অনুযায়ী মা কালী ফল দান করেন। হিন্দুশাস্ত্র মতে এই তিথিতে দেবীর পুজো করলে অশুভ কর্মফলের নাশ এবং শুভ ফল প্রাপ্তি হয়।


ফলহারিণী পুজোর নির্ঘন্ট:  ১৮ ই মে (৩রা জৈষ্ঠ্য) রাত্রি ৯.১৩ মিনিট ৩৬ সেকেন্ড থেকে শুরু হয়ে ১৯ মে (৪ জৈষ্ঠ্য) রাত্রি ৮.৪৩ মিনিট ২৩ সেকেন্ড পর্যন্ত থাকবে অমাবস্যা তিথি। তবে ১৮-তে নয়, ১৯ মে ফলহারিণী কালী পুজো করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। 


কথিত আছে শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব তাঁর স্ত্রী শ্রী মা সারদা কে দশমহাবিদ্যার অন্যতম রূপ দেবী ষোড়শী রূপে পুজো করেছিলেন। তাই এই ফলহারিণী কালীপূজা আজও রামকৃষ্ণমঠ ও আশ্রমে ষোড়শী পুজো  নামে পরিচিত।


ফলহারিণী কালীপুজো নিয়মবিধি পুজোবিধি: জ্যোতিষ মতে এই দিন মনস্কামনা পূরণের জন্য মা কালীর উদ্দেশে নিজের পছন্দের ফল রেখে মনস্কামনা জানাতে হয় এবং  সেই মনস্কামনা পূরণ না হওয়া পর্যন্ত সেই ফলটি অন্য কাউকে দান করতে নেই এবং নিজেকেও সেই ফল খেতে নেই। এক বছরের মধ্যে মনস্কামনা পূরণ হলে সেই ফল গঙ্গায় ভাসিয়ে পরের দিন থেকে তা খাওয়া যেতে পারে।


কী বলা হয়েছে: শব্দকল্পদ্রুমে বলা হয়েছে, ‘জ্যৈষ্ঠ-পঞ্চদশ্যাং বহুফলাদ্যুপহারৈঃ পূজনীয়া’ - অর্থাৎ জ্যৈষ্ঠমাসের অমাবস্যায় সাধক নানাবিধ ফলের উপহার সহযোগে দেবীর পুজো করবেন। আবার অন্য একটি বিধান ক্রিয়াকাণ্ড বারিধিতে বলা হয়েছে, ‘জ্যৈষ্ঠ্যে মাসি তথামায়াং সফলং কালিকার্চনম - অর্থাৎ জ্যৈষ্ঠমাসের অমাবস্যায় বিশেষভাবে নানাবিধ ফল দিয়ে কালিকাদেবীর পুজো করতে হয়। এ-প্রসঙ্গে মায়াতন্ত্রের ১৭ পর্বে আরও বলা হচ্ছে, জ্যৈষ্ঠ মাসি অমায়াং বৈ মধ্যরাত্রে মহেশ্বরিপূজয়েত কালিকাং দেবীং নানাদ্রব্যোপহারকৈঃ ’ অর্থাৎ, জ্যৈষ্ঠমাসের অমাবস্যা তিথির মহানিশায় সাধক নানা দ্রব্যের উপহার সহযোগে শ্রীশ্রীকালিকাদেবীর জ্যৈষ্ঠ করবেন। এখানে মহানিশা কথাটি উল্লেখ করা হয়েছে কারণ, ফলহারিণী কালীপূজা গভীর রাত্রে করতে হয়।


আরও পড়ুন: Falharini Kali Puja 2023: সামনেই ফলহারিণী কালী পুজো, কবে- কখন শুভ যোগ রয়েছে?