সুনীত হালদার, হাওড়া: ২০১৯-এর ১৫ ফেব্রুয়ারি, ঘড়ির কাঁটায় তখন দুপুর ৩টে ১৫। বিস্ফোরক ভর্তি একটি গাড়ি গিয়ে ধাক্কা মারে বেশ কয়েকজন সিআরপিএফ জওয়ান ভর্তি গাড়িতে। জঙ্গি হামলায় শহিদ হন ৪০ জন সিআরপিএফ জওয়ান। তালিকায় ছিলেন বাংলার বাবলু সাঁতরাও। দেখতে দেখতে পুলওয়ামার ৩ বছর পার। আজ চেঙ্গাইলের চককাশীর বাড়িতে শহিদ বাবলু সাঁতরার ছবিতে মাল্যদান করে শ্রদ্ধা জানান রাজ্যের পঞ্চায়েত ও জনস্বাস্থ্য কারিগরি মন্ত্রী পুলক রায়। উপস্থিত ছিলেন উলুবেড়িয়া পৌরসভার বিদায়ী চেয়ারম্যান অভয় দাস-সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। 


অন্যদিকে উলশহিদদের শ্রদ্ধা জানাতে আজ রাস্তায় নামলেন উপত্যকার ছাত্র-যুবরা। উত্তর কাশ্মীরের কুপওয়াড়া জেলার লোলাব উপত্যকার ছাত্র-যুবরা ধেরিয়ান ও ক্রুসানে মিছিল করেন। মিছিলের আয়োজক ছিল লোলাবের ছাত্র ও যুবরা।


এক প্রতিবাদকারী বলেন, ২০১৯ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি সমগ্র দেশের হৃদয় ভেঙে গিয়েছিল যখন পাকিস্তানের জঙ্গি গোষ্ঠীর কারণে ভারতের ৪০ জন বীর সেনা জওয়ান প্রাণ হারিয়েছিলেন। জইশ-ই-মহম্মদ পুলওয়ামায় নিরাপত্তা বাহিনীর একটি কনভয়ে হামলা চালিয়েছিল। আজ, সেই ঘটনার তিন বছর। পুলওয়ামায় শহিদ হওয়া সিআরপিএফ-এর সেই ৪০ জন জওয়ানের আত্মত্যাগকে স্মরণ করছে গোটা দেশ।


আজকের এই অনুষ্ঠানটি শুরু হয় প্রদীপ জ্বালিয়ে। শহিদদের উদ্দেশে দুই মিনিটের নীরবতা পালন করা হয়। এর পর বের হয় তেরঙ্গা মিছিল। পরে মিছিলে যোগদানকারী প্রত্যেকের জাতীয় সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শেষ হয়।


কী ঘটেছিল সেদিন ?


এ দিন ৭৮টি কনভয়ে যাচ্ছিলেন আড়াই হাজারের বেশি সিআরপিএফ জওয়ান। জম্মু থেকে শ্রীনগর যাচ্ছিলেন তাঁরা। ৪৪ নম্বর জাতীয় সড়ক দিয়ে কনভয় যাওয়ার সময় হামলা চালায় জঙ্গিরা। ৩টে ১৫ নাগাদ বিস্ফোরক ভর্তি একটি গাড়ি গিয়ে ধাক্কা মারে বেশ কয়েকজন সিআরপিএফ জওয়ান ভর্তি গাড়িতে। এই হামলায় ৪০ জন জওয়ান শহিদ হন। অনেকে আহত হন। হামলার দায় স্বীকার করে জইশ ই মহম্মদ। 


এই হামলার পাল্টা জবাব দেয় ভারত। সেবছরই ২৬ ফেব্রুয়ারি। বালাকোটে জইশের জঙ্গি শিবিরে অভিযান চালায় ভারতীয় বায়ুসেনা। তাতে খতম করা হয় প্রায় ৫০০ জঙ্গিকে। এই ঘটনার পর কেটে গেছে তিনটে বছর। কিন্তু, এই দিনটিকে ভারতে 'কালো দিন' হিসাবে দেখা হয়। বীর জওয়ানদের আত্মত্যাগ স্মরণ করে গোটা দেশ।