ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা : অ্যাডিনো-আতঙ্কের মাঝেই কাল রাত থেকে আজ সকালের মধ্যে কলকাতার দুটি সরকারি হাসপাতালে ৪ শিশুর মৃত্যু হল। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজেও ( Kolkata Medical College ) ২ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। চুঁচুড়ার হামিদপুরের ৭ মাসের শিশুর জ্বর, শ্বাসকষ্টের সমস্যা থাকায় ১৯ ফেব্রুয়ারি, চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতাল থেকে রেফার করা হয়। আজ ভোরে মৃত্যু হয় একরত্তির। ওই শিশুর জন্মগত হার্টের সমস্যা ছিল। শরীরে অ্য়াডিনো ভাইরাস মেলে। হাসপাতালের দাবি, অ্যাডিনোর জেরে নিউমোনিয়া সংক্রমণ মিটলেও, হার্টের সমস্যার কারণেই ওই শিশুর মৃত্যু হয়েছে।


কলকাতা মেডিক্যালে মৃত দ্বিতীয় শিশুর বয়স ২২ দিন। হাওড়ার বাগনানের বাসিন্দা। জ্বর-শ্বাসকষ্ট থাকায়, ১৬ ফেব্রুয়ারি উলুবেড়িয়া হাসপাতাল থেকে রেফার করা হয়। অ্যাডিনো ভাইরাস সংক্রমণ মেলে। গতকাল রাতে ওই শিশুর মৃত্যু হয়। 


একের পর এক মৃত্যু: একের পর এক শিশু মৃত্যু আতঙ্ক বাড়াচ্ছে শহরে। গতকাল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের মাদার অ্যান্ড চাইল্ড হাবে আরও দুই শিশুর মৃত্যু হল। হাসপাতাল সূত্রে খবর, দুই শিশুরই নিউমোনিয়া হয়েছিল। এদের মধ্যে মধ্যমগ্রামের ৬ মাসের শিশুর অ্যাডিনো ভাইরাস সংক্রমণ থাকায় ভেন্টিলেটরে রাখা হয়েছিল। পরিবার সূত্রে খবর, প্রথমে আরজি করে ভর্তি ছিল ওই শিশু। সুস্থ বলে ছেড়ে দেওয়ার পর, বাড়িতে গিয়ে ফের অসুস্থ হয়ে পড়ায় কলকাতা মেডিক্যালে ভর্তি করা হয়। এরপর গতকাল সকাল ৮টা নাগাদ মৃত্যু হয় ওই শিশুর। অন্যদিকে, হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরের ১ বছর ৮ মাসের শিশুকে জ্বর, শ্বাসকষ্ট, গায়ে র‍্যাশ ছিল। ওই শিশুকে উদয়নারায়ণপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে কলকাতা মেডিক্যালে রেফার করা হয়। আজ সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ মৃত্যু হয় ভেন্টিলেটরে থাকা ওই শিশুর। 


স্বাস্থ্য দফতরের অ্যাডভাইসরি: শিশুদের মধ্যে শ্বাসকষ্ট, সর্দি-কাশি আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায়, অ্যাডভাইসরি জারি করেছে স্বাস্থ্য দফতর। ২৪ ঘণ্টার ক্লিনিক চালু করতে বলার পাশাপাশি, হাসপাতালে পৃথক আউটডোর চালু করতে বলা হয়েছে। হাসপাতাল প্রধান বা অধ্যক্ষের অনুমতি ছাড়া করা যাবে না রেফার। 


করোনার সময় রোগীর চাপে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার যেরকম টালমাটাল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। অ্যাডিনো ভাইরাসও স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে কার্যত নাড়িয়ে দিচ্ছে। হাসপাতালে হাসপাতালে উপচে পড়ছে আক্রান্ত শিশুর ভিড়।পেডিয়াট্রিক ICU-র অবস্থাও মারাত্মক। এই পরিস্থিতিতে, নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে স্বাস্থ্য-সচিব এবং মুখ্যসচিবের বৈঠক হয়। সূত্রের দাবি, সেই বৈঠকে উদ্বেগপ্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কোভিডের সময় যেভাবে কাজ করা হয়েছে। এক্ষেত্রেও যেন সেই রকম ব্যবস্থা করা হয়। অক্সিজেনের অভাব যাতে না হয় সেই বিষয়ে নজর রাখতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিনই, ১০ দফা অ্যাডভাইসরি জারি করেছে স্বাস্থ্য দফতর।