মুর্শিদাবাদ: মুর্শিদাবাদের রানিনগর থানায় ভাঙচুর (Murshidabad Violence), পুলিশকে মারধর ও তৃণমূল পার্টি অফিসে হামলার অভিযোগে কংগ্রেস নেতা-সহ ৩৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ (Police)। ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন কংগ্রেস নেতা ও রানিনগর ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কুদ্দুস আলি। তবে গোটা ঘটনার জন্য  শাসকদলকেই নিশানা করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী (Adhir Chowdhury)। 


এবার রানিনগর পঞ্চায়েত সমিতিতে জয়ী হয় কংগ্রেস।  সেই উপলক্ষ্য়ে গতকাল কংগ্রেসের ডাকে বিজয় সমাবেশের আয়োজন করা হয়। উপস্থিত ছিলেন অধীর চৌধুরী ও সিপিএমের জেলা সম্পাদক। সমাবেশের পর রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় রানিনগর। থানায় ইটবৃষ্টি, ভাঙচুর চলে। তৃণমূল পার্টি অফিসে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে কংগ্রেসের কর্মী, সমর্থকদের বিরুদ্ধে। গতকালের অশান্তির জন্য পুলিশকেই দায়ি করেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। গোটা ঘটনার জন্য শাসকদলকে নিশানা করে  অধীর চৌধুরী বলেছেন, 'তৃণমূলের মদতে অশান্তি হয়েছে রানিনগরে। পঞ্চায়েত সমিতি কংগ্রেসের হাত থেকে কেড়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্র।' তবে রানিনগরের ঘটনায় সরাসরি অধীর চৌধুরীকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস।


প্রসঙ্গত, রানিনগরে অশান্তির ঘটনায় উত্তাল মুর্শিদাবাদের রাজনৈতিক পরিস্থিতি। মূলত এবারের ভোটে, রানিনগর পঞ্চায়েত সমিতিতে জয়ী হয় কংগ্রেস।  সেই উপলক্ষ্য়ে এদিন, বোধনপাড়ার মাঠে কংগ্রেসের ডাকে বিজয় সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন অধীর চৌধুরী। ছিলেন সিপিএমের জেলা সম্পাদকও। অভিযোগ, সেই জমায়েতে যোগ দিতে আসা বাম-কংগ্রেস কর্মীদের বাধা দেয় তৃণমূল। কংগ্রেসের অভিযোগ, তৃণমূলকে মদত দেয় পুলিশ। এরপরই সম্মেলন শেষের পর, ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে কংগ্রেস কর্মীরা। তাণ্ডব চালানো হয় রানিনগর বাজারে তৃণমূলের এই পার্টি অফিসে। চেয়ার-আসবাব ভাঙচুর, গুড়িয়ে দেওয়া হয় AC মেশিন। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় পার্টি অফিসের সামনে। রানিনগর থানা লক্ষ্য় করেও ছোড়া হয় একের পর এক থান ইট, আধলা। এরপর, ঘটনাস্থলে আসে বিশাল পুলিশ বাহিনী। শুরু হয় ধরপাক়ড়। লাঠিচার্জ। 


আরও পড়ুন, 'মানুষ মমতার উন্নয়নে বিশ্বাস রেখেছে..', ধূপগুড়ি জয়ে প্রতিক্রিয়া অভিষেক ও ফিরহাদের


প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী এ প্রসঙ্গে বলেছেন, 'আমাদের মিছিল শুধু পুলিশ বাধা দিয়েছে তা নয়, নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে, কয়েকজন কংগ্রেস কর্মীকে পুলিশ মারধর করে। সেখানকার কংগ্রেস কর্মীরা যোগ দিতে পারে নি। বেরিয়ে আসার পর শুনছি, যারা সভা থেকে ফিরছিল, থানার সামনে জড়ো হয়। শোনে শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশের হামলা। এটা কখনও কাম্য় নয়। বলছি না, হামলা করে ঠিক করেছে। কিন্তু কেন হামলা, সেটা পুলিশের দেখা দরকার। কেন মারতে গেল, সেটা পুলিশের ভেবে দেখা দরকার। পুলিশের অদক্ষতা এর জন্য় দায়ী। পুলিশের দুর্বিনীত ব্য়বহারে সেখানকার মানুষ অতিষ্ঠ।' যদিও পুলিশের দাবি, কংগ্রেসের সভা থেকেই থানায় হামলায় প্ররোচনা দেওয়া হয়। তারপরই এই ঘটনা। পুলিশের পক্ষ থেকে আরও দাবি করা হয়েছে, হামলার জেরে আহত হয়েছেন বেশ কয়েক জন পুলিশ কর্মী।