অমিতাভ রথ, ঝাড়গ্রাম: মেখলিগঞ্জ, নন্দীগ্রাম, শালবাড়ির পর এবার ঝাড়গ্রামের (jhargram) চিচড়়া। কারচুপির প্রমাণ (evidence) লোপাট (tamper) করতে ফাইল সরানোর চেষ্টা চলছিল, এই অভিযোগে চিচড়া পঞ্চায়েত (panchayat) অফিসে (office) তালা লাগিয়ে দিলেন গ্রামবাসীরা। বিক্ষোভে সামিল গ্রামবাসীদের একাংশও। পরে পঞ্চায়েত প্রধানকে ঘিরে বিক্ষোভ চলে বলেও অভিযোগ।
কী হয়েছিল?
গত কাল গভীর রাত পর্যন্ত দুজন কর্মী চিচড়া পঞ্চায়েত দফতরে কাজ করছিলেন। সেটা দেখেই বিজেপি কর্মীরা কয়েক জন গ্রামবাসীকে নিয়ে সেখানে জড়ো হন। তাঁদের অভিযোগ, বিভিন্ন কারচুপি ঢাকতে ফাইল লোপাটের জন্যই গভীর রাতে কাজ করছিলেন ওঁরা। এর পর রাতেই পুলিশ ডেকে পঞ্চায়েত অফিসে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়। আজ সেই তালা খোলেনি। যদিও পঞ্চায়েতের তরফে জানানো হয়েছে, কোভিডের জন্য সমস্ত পরিষেবা চালু থাকলেও দফতরের কাজ বন্ধ ছিল। সেই কাজ গোছাতেই অতিরিক্ত সময় কাজ করে নথিপত্র তৈরি করা হচ্ছিল। এই মুহূর্তে পঞ্চায়েতের কাজকর্ম খতিয়ে দেখতে কেন্দ্রীয় টিম ঝাড়গ্রাম জেলায়। সেই জন্যই দুর্নীতির প্রমাণ লোপাটে তৎপরতা পঞ্চায়েত অফিসে, পাল্টা দাবি বিক্ষোভকারীদের। সঙ্গে সংযোজন, প্রশাসনের লোকজন এসে বিষয়টি নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিলে পরেই তালা খোলা হবে।
জেলায় জেলায় এক ছবি...
প্রথমে কোচবিহারের মেখলিগঞ্জ, তার পর নন্দীগ্রাম, পরে কোচবিহারের শালবাড়ি। পর পর এক ঘটনা কম-বেশি ঘটে চলেছে রাজ্যের নানা প্রান্তে। গত ১৩ অগস্ট বক্সিরহাটের শালবাড়ি ২ নম্বর পঞ্চায়েতের অফিসের ঘটনা সেই তালিকায় সাম্প্রতিক সংযোজন। শোনা যায়, রাত পর্যন্ত বেশ কয়েক জন পঞ্চায়েত কর্মী সেখানে কাজ করছিলেন। বিষয়টি লক্ষ্য করেন বিজেপি কর্মীরা। শুধু তা-ই নয়। অভিযোগ, পঞ্চায়েত অফিসে তালাও লাগিয়ে দেন। তাঁদের দাবি, যেহেতু কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলির আধিকারিকরা বিভিন্ন কাজ খতিয়ে দেখার জন্য জেলায় জেলায় ঘুরছেন, তাই দুর্নীতির প্রমাণ লোপাট করতেই রাত জেগে কাজ করছিলেন পঞ্চায়েত কর্মীরা। এ নিয়ে চাঞ্চল্য ছড়ালে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। তালা খুলে উদ্ধার করা হয় পঞ্চায়েত প্রধান ও বাকি কর্মীদের। গত রাতেই এই ঘটনায় গ্রেফতার ৩ বিজেপি কর্মী। তবে তাঁদের গ্রেফতারির প্রতিবাদে আজ বক্সিরহাট থানা ঘেরাও করে বিজেপি। তুফানগঞ্জের বিজেপি বিধায়ক মালতী রাভা রায়ের নেতৃত্বে বিক্ষোভ দেখানো হয়। ছিলেন ফালাকাটার বিজেপি বিধায়ক দীপক বর্মনও। ধৃত কর্মীদের অবিলম্বে মুক্তির দাবিতে ধর্নায় বসেন দুই বিধায়ক। উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে থানা-চত্বরকে। গেরুয়া শিবিরের কর্মীরা গেট ভেঙে থানায় ঢোকার চেষ্টা করলে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়। ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিশবাহিনী পৌঁছে তাঁদের অবশ্য সরিয়ে দেয়। শেষ যা জানা গিয়েছে তাতে, ওই তিন জন বিজেপি কর্মীকে তুফানগঞ্জ মহকুমা আদালতে পেশ করেছিল পুলিশ। তাঁদের ১৪ দিন বিচারবিভাগীয় হেফাজত হয়েছে।