অরিন্দম সেন, আলিপুরদুয়ার: জঙ্গলের জীববৈচিত্র বাড়াতে ৮৬ টি স্পটেড হরিণ ছাড়া হয়েছে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গলে (Buxa Tiger Reserve Forest )। বীরভূমের (Birbhum) অভয়ারণ্য থেকে আনা হয়েছে হরিণগুলিকে।তবে এবারই প্রথম নয়, এর আগেও একাধিকবার বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গলে ছাড়া হয়েছে হরিণ।


 জানা গিয়েছে, বীরভূমের বল্লভপুর ওয়াল্ড লাইফ সেনচুয়ারি থেকে আনা হয়েছে এই হরিণগুলি। বন দফতর সূত্রে খবর, মোট ৩টি গাড়িতে সুরক্ষার ব্যবস্থা করেই আনা হয়েছিল। আগামীদিনে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পে বাঘ এনে ছাড়ার পরিকল্পনা চলছে। এবং সেই পরিকল্পনার কথা প্রকাশ্যে জানিয়েছিলেন বনমন্ত্রী জোতিপ্রিয় মল্লিকও। ফলে সেইসূত্রে জঙ্গলের জীববৈচিত্র বাড়াতে ধাপে ধাপে পদক্ষেপ নিচ্ছে বনদপ্তর। এমনকি জঙ্গল সংলগ্ন বনবস্তির মানুষকে ক্ষতিপূরণের মাধ্যমে তাঁদের অন্যত্র সড়িয়ে নেবার পরিকল্পনাও অনেকদূর এগিয়েছে বলে, বনদফতর সূত্রে খবর। সেইসূত্র ধরেই  এই উদ্যোগ বলে বন দফতর সূত্রে খবর। 


একদিকে যেমন জীববৈচিত্র এবং বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য রাখতে হরিণ ছাড়া হল এবার। তেমনই সেখানে বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য বজায় থাকে বাঘের সংখ্যার উপরেও।  প্রসঙ্গত, বছরটা ২০২১। আলিপুরদুয়ারের (Alipurduar)  বক্সার জঙ্গলের (Buxa Forest) ভিতরে মিলেছিল বাঘের (Tiger) পায়ের ছাপ। বাঘের থাবার ছাপের পাশে পড়ে থাকা পেন ঘিরে দেখা দিয়েছিল রহস্য। একই বাঘের পায়ের ছাপ, নাকি আরও বাঘ রয়েছে, তা জানতে পায়ের ছাপ পরীক্ষার কাজ শুরু হয়েছিল।  নদীর পাড়ে  বাঘের আরও পায়ের ছাপ মিলেছিল বলে জানা গিয়েছিল। 


বক্সার জঙ্গলে বাঘের খোঁজে ড্রোন দিয়ে তল্লাশি চলে। ট্রাঙ্কুলাইজার নিয়ে বক্সার জঙ্গলে খোঁজ চালান বনকর্মীরা। ব্যবহার করা হয় ড্রোন ক্যামেরা। বাঘের অবস্থান জানার চেষ্টা চলে। সুরক্ষার জন্য সেসময় বন্ধ করে দেওয়া হয় জঙ্গল সাফারি। প্রাক্তন বনবিভাগের আধিকারিকরা মনে করেন, পায়ের ছাপ একটি বাঘের। কারণ, বাঘ তার এলাকায় ঘোরাফেরা করে। তবে বাঘিনী থাকার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেননি সেসময় তাঁরা।  


আরও পড়ুন, পঞ্চায়েত ভোটের আগে ফের সকেট বোমা উদ্ধার মুর্শিদাবাদে


প্রায় ২ যুগ পর বক্সায় রয়্যাল বেঙ্গলের দেখা মিলেছিল সেবার। এরপরই বাঘের উপযুক্ত বাসস্থান তৈরি করতে উদ্যোগী হয় বন দফতর। জঙ্গল সংলগ্ন এলাকা থেকে ২৩৪টি পরিবারকে অন্যত্র সরানোর ভাবনাচিন্তা চলে। বাঘের হাত ধরে এলাকায় পর্যটন ব্যবসা। সেই আশাতেই বাসস্থান পরিবর্তনে রাজি হন স্থানীয় বাসিন্দারা। মূলত বক্সার জঙ্গলের আশেপাশে ১৫টি গ্রামে বহু মানুষের বসবাস। সেখানকার বাসিন্দাদের নিরাপত্তা যাতে বিঘ্নিত না হয় তার জন্য এলাকা ঘিরে ফেলার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়।