অরিন্দম সেন, আলিপুরদুয়ার: সৌরকণা নিয়ে গবেষণা করতে ক্যালিফোর্নিয়া (California) পাড়ি দিচ্ছেন আলিপুরদুয়ারের (Alipurduar) যুবক সৌভিক বসু (Soubhik Basu)। NASA এবং লকহিড মার্টিন সোলার এণ্ড অ্যাস্ট্রো ফিজিক্স ল্যাবরেটরির যৌথ গবেষণায় অংশ নেবেন বাঙালি তরুণ। পরিবারে খুশির হাওয়া। গর্বিত আলিপুরদুয়ারবাসী।


“হতাশায় নিজের হাঁটুতে মাথা গুঁজে থেকো না। বরং মাথা উঁচু করে নক্ষত্রদের দিকে তাকাও। এই ব্রহ্মাণ্ড কীভাবে বিরাজ করছে, তা দেখে বিস্মিত হও। কৌতূহলী হও। জীবন যত কঠিনই হোক না কেন, সব সময় এমন কিছু না কিছু আছে, যা তুমি করতে পারবে এবং তাতে সফলও হবে। হাল ছেড়ে দিয়ে বসে থেকো না।’’ কিংবদন্তী ব্রিটিশ পদার্থবিজ্ঞানী স্টিফেন হকিংয়ের বিখ্যাত উক্তি। এই উক্তির প্রতিটা শব্দ যেন মিলে গিয়েছে তাঁর জীবনে। চন্দ্র-সূর্য-তারাদের দিকে চেয়ে থেকেছেন, ভেবেছেন, গবেষণা করেছেন। এবার সৌরকণা নিয়ে গবেষণা করতে ক্যালিফোর্নিয়া পাড়ি দিচ্ছেন আলিপুরদুয়ারের সৌভিক বসু। অংশ নেবেন নাসা (NASA) ও মার্কিন সংস্থা লকহিড মার্টিনের সোলার এণ্ড অ্যাস্ট্রো ফিজিক্স ল্যাবরেটরির যৌথ গবেষণায়।


আলিপুরদুয়ারের বাসিন্দা মহাকাশ গবেষক সৌভিক বসু বলেন, “আমি রিসার্চ সায়েন্টিস্ট হিসেবে নাসা-লকহিড মার্টিনে যৌথ পজিশন. সেখানে রিসার্চ করতে চলেছি. আমার বিষয় সূর্যকণা। গবেষণাটা ঠিক কী, তা যেন বাইটে থাকে।’’ সৌভিকের বাবা সৌমেন বসুর কথায়, “ও যখন স্কুলে পড়ত ছোট থেকেই চাঁদ তারার ওপর খুব আগ্রহ ছিল। সব সময় আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকত। শিক্ষক শিক্ষিকার সাপোর্ট করেছেন ওর কাজে। আমার আশা ও আরও বড় হবে।’’


আলিপুরদুয়ার শহরের নিউটাউন এলাকার বাসিন্দা সৌভিক বসু। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি থেকে পাস করেছেন ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং ।  বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ অ্যাসট্রোফিজিক্স থেকে এম টেক। নরওয়ের অসলো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সোলার অ্যাস্ট্রো ফিজিক্স নিয়ে পিএইচডি। ছেলে নাসায় ডাক পাওয়ায় খুশি বাবা-মা। সৌভিকের মা চন্দ্রা বসুর কথায়, বরাবরই সিরিয়াস। পড়াশোনা নিয়ে থাকত। কোনও দিন বলতে হয়নি পড়।



সৌভিকের কৃতিত্বকে কুর্নিশ জানিয়েছে আলিপুরদুয়ার পুরসভা। পুরসভার প্রশাসক প্রসেনজিৎ কর বলেন, “আমাদের অত্যন্ত আনন্দের দিন। আলিপুরদুয়ারের মতন জায়গায় ছোট ভাই সৌভিক বোস আজ নাসায় যে সুযোগ পেয়েছে, আমরা গর্বিত। উৎসাহিত করেতে আজ সংবর্ধনা দিলাম। এরপর যেন দেশ ও বিশ্বের মুখ উজ্জ্বল করে।’’আলিপুরদুয়ারের তরুণের কথায়, তাঁর শহর যতই প্রান্তিক হোক না কেন, ইন্টারনেটের দুনিয়ায় এখন সবই ভুবনডাঙা।