কলকাতা: মুর্শিদাবাদের জেলা স্কুল পরিদর্শককে তার পদ থেকে ২ সপ্তাহের মধ্যে অপসারণের নির্দেশ। জেলা স্কুল পরিদর্শককে অপসারণের নির্দেশ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Justice Abhijit Ganguly)। তিনি অন্য দফতরে চাকরি করতে পারেন, কিন্তু ওই পদে থাকার যোগ্য নন, মন্তব্য আদালতের। অন্যদিকে, দক্ষিণ ২৪ পরগনার  DI-কেও অপসারণের নির্দেশ বিচারপতির।


অপসারণের নির্দেশ: কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে এবার আদালতের কোপে দুই জেলার দুই স্কুল পরিদর্শক। মুর্শিদাবাদ ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার দুই DI-কে অপসারণের নির্দেশ দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর পর্যবেক্ষণ, এবার বার্তা যাবে বাকি DI-দের কাছে। ২০২২ সালে সন্তানের অসুস্থতার কারণে বদলির আবেদন জানান মুর্শিদাবাদের বালি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা বনানি ঘোষ। যদিও তাঁর আবেদন মঞ্জুর করেননি জেলা স্কুল পরিদর্শক। কিন্তু তাঁর দাখিল করা রিপোর্ট আদালতকে সন্তুষ্ট করতে পারেনি। এই প্রেক্ষাপটে এদিন বিচারপতি ওই স্কুল পরিদর্শককে দুই সপ্তাহের মধ্যে অপসারণের নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, ওই DI অন্য দফতরে চাকরি করতে পারেন। কিন্তু ওই পদে থাকার যোগ্য তিনি নন। এদিন মামলাকারী শিক্ষিকাকে ৩ সপ্তাহের মধ্যে বাড়ির কাছের স্কুলে বদলির নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। ৫ ডিসেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানি।

অন্যদিকে, ২০১৯ সালে রবীন্দ্রনাথ হালদার নামে দক্ষিণ ২৪ পরগনার এক স্কুল শিক্ষকের মৃত্যু হয়। সেই শিক্ষকের দুটি বিয়ে ছিল। অভিযোগ, আদালত ওই শিক্ষকের দ্বিতীয় বিয়েকে অবৈধ বলা সত্ত্বেও তাঁকেই পেনশনের অনুমতি দেন সংশ্লিষ্ট স্কুল পরিদর্শক। এর জেরে মামলা করেন প্রথম স্ত্রী। সেই মামলায় এদিন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় প্রশ্ন তোলেন, দ্বিতীয় বিয়েকে আদালত অবৈধ বলা সত্ত্বেও কীভাবে তাকেই পেনশন দেওয়ার অনুমতি দিলেন DI? বিচারপতি বলেন, DI কি জমিদার? আজ থেকে তাঁর আর ওই পদে থাকার দরকার নেই। এদিন ওই DI-কে সরিয়ে প্রিন্সিপাল সেক্রেটারিকে অন্যকাউকে নিয়োগের নির্দেশ দেয় আদালত। তবে তাঁর চাকরি বাতিল করা হয়নি। মামলার পরবর্তী শুনানি ৬ অক্টোবর।


এদিকে নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে আদালতের প্রশ্নের মুখে পড়ল কলেজ সার্ভিস কমিশনও। কমিশনের নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে বিস্ময়প্রকাশ করলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। উঠে এল নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও SSC-র প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্যের নামও। ২০২০ সালে কলেজ সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নেন মোনালিসা ঘোষ নামে এক চাকরিপ্রার্থী। তাঁর দাবি, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় প্রবেশনারি মেরিট লিস্টে শুধুমাত্র নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়। কিন্তু মেধাতালিকায় কোনও নম্বর বিভাজন দেওয়া ছিল না। ফলে কীসের ভিত্তিতে তিনি বাদ গেলেন, তা জানতে চেয়ে আদালতে মামলা করেন ওই চাকরিপ্রার্থী। মঙ্গলবার সেই মামলার এদিন শুনানি ছিল বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে। বিচারপতি এদিন মন্তব্য করেন, স্বচ্ছতার প্রশ্নে প্রবেশনারি মেরিট প্যানেল নম্বর বিভাজন-সহ প্রকাশ করা উচিত। কলেজ সার্ভিসের মূল্যায়ন স্বচ্ছ হওয়া উচিত। এদিন কলেজ সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে বিস্ময়প্রকাশও করেন বিচারপতি।


আরও পড়ুন: Madan Mitra: 'দালালরাজ নিয়ে কেন থানায় অভিযোগ দায়ের করেননি?' প্রিন্সিপালকে হুমকি মদন মিত্রের