সোমনাথ মিত্র, পূর্ণেন্দু সিংহ, কোচবিহার : পুরকর বৃদ্ধি, স্টল হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা জারিকে কেন্দ্র করে কোচবিহার পুরসভা ও জেলা ব্যবসায়ী সমিতির সংঘাত চরমে উঠেছে। ১৩ মার্চ কোচবিহার শহরে ব্যবসা বন্ধের ডাক দিয়েছে ব্যবসায়ী সংগঠন। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, এর জেরে বাজারে পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছে পুরসভা। অভিযোগ অস্বীকার পুর কর্তৃপক্ষের। শুরু হয়েছে রাজনৈতিক টানাপোড়েন।
আলুর ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বাড়াতে হবে। পঞ্চায়েত ভোটের আগে এই দাবিতে সুর চড়াতে শুরু করেছে বামপন্থী কৃষক সংগঠন কৃষকসভা। কৃষি বিপণনমন্ত্রী জানিয়েছেন, সাড়ে ছশো টাকা ক্যুইন্টাল দরে ১০ লক্ষ মেট্রিক টন আলু কেনার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে রাজ্য সরকার। কিন্তু সেই দরে সন্তুষ্ট নন আলুচাষিদের একটা বড় অংশ।
খাবার পাতের আলু গড়াগড়ি খাচ্ছে রাস্তায়! আর সেই পড়ে থাকা আলুর পাশে বসে চলছে বিক্ষোভ, অবরোধ...। আলুর জন্য রাজ্য সরকার যে সহায়ক মূল্য ঘোষণা করেছে, তাতে কৃষকের চাষের খরচটুকুও উঠবে না। পঞ্চায়েত ভোটের আগে এই অভিযোগ তুলে সুর চড়াতে শুরু করেছে বামপন্থী কৃষক সংগঠন কৃষকসভা। আলুর ন্যূনতম সহায়কমূল্য বাড়ানোর দাবিতে, রবিবার সকালে, বাঁকুড়ার ওন্দা বাজারের চৌরাস্তা মোড়ে সংগঠনের তরফে বিক্ষোভ দেখানো হয়।
রাস্তায় আলু ফেলে বিক্ষোভ দেখানোর পাশাপাশি, সংগঠনের তরফে মিছিলও করা হয়। ওন্দা এরিয়া কমিটির সিপিএম সম্পাদক বিশ্বনাথ দে বলছেন, আলুচাষিরা লোকসানের মুখে। কোনও ফড়েকে দেওয়া হবে না। বাইরে রফতানির সুযোগ দিতে হবে। চলতি মরশুমে ক্যুইন্টাল প্রতি সাড়ে ছশো টাকা দরে আলু কেনার কথা ঘোষণা করেছে রাজ্যের কৃষি বিপণন দফতর।
কৃষি বিপণন মন্ত্রী বেচারাম মান্নার কথায়, ১০ লক্ষ মেট্রিক টন আলু কেনা হবে। ৬৫০ টাকা ক্যুইন্টাল দরে আলু কেনা হবে। গতবারের চেয়ে কিছুটা বেশি। আগে ছিল ৬০০ টাকা। তার আগে ছিল সাড়ে পাঁচশো টাকা রাজ্যে আলুর অন্যতম বড় উৎপাদনক্ষেত্র হিসেবে পরিচিত হুগলির সিঙ্গুর, হরিপালের মতো এলাকা। সেখানে এবার আলুর ফলন অনেকটাই বেশি। স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ, সাড়ে ছশো টাকা সহায়কমূল্যে চাষের খরচটুকুও উঠবে না।
সিঙ্গুরের আলুচাষি প্রদীপকুমার নস্কর বলছেন, সরকারি দাম অনুযায়ী এক বস্তা আলুর দাম পড়ছে ৩২৫ টাকা। সেটা কমপক্ষে ৪০০ টাকা হওয়া প্রয়োজন। নইলে চাষিদের লোকসান হবে। একবিঘা জমিতে জ্যোতি আলু চাষে প্রায় ৩০ হাজার টাকা খরচ। এক বিঘা জমিতে ৬০-৭০ প্যাকেট আলু হবে। সেক্ষেত্রে সরকার যদি ৪০০ টাকা প্রতি আলুর বস্তায় দাম দেয় তাহলে খরচটুকু উঠবে।
পঞ্চায়েত ভোটের আগে, আলুচাষিদের এই ক্ষোভকেই হাতিয়ার করছে কৃষকসভা। সংগঠনের তরফে, আগামী ১১ মার্চ রাজ্যজুড়ে জাতীয় ও রাজ্য সড়ক অবরোধের ডাক দেওয়া হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ প্রাদেশিক কৃষকসভার সহ সভাপতি ভক্তরাম পান বলছেন, আমরা দাবি করছি সরকার ১০০০ টাকা কুইন্ট্যাল প্রতি দাম ধার্য করুক। এটা দেউলিয়া সরকার। খেলা় মেলায় টাকা দেবে, কিন্তু চাষিদের আলু কেনায় টাকা নেই। হিমঘর মালিকদের দায়িত্ব দিয়েছে আলু কিনতে। হিমঘরে আলু সংরক্ষণে চাষিদের অগ্ৰাধিকার দেওয়া হোক। আলুর ন্যূনতম সহায়কমূল্য কুইন্টাল প্রতি ১০০০ টাকা করার দাবিতে জেলাশাসকের দফতরে ডেপুটেশন জমা দিয়েছে হুগলি জেলা কৃষক সমিতি।