কৌশিক গাঁতাইত, পশ্চিম বর্ধমান: বকেয়া পুরভোটের (WB Municpal Polls) আগে আসানসোলে (Asansol) ফের বিজেপি-তে ভাঙন ধরাল তৃণমূল (TMC)। এ বার বিজেপি ছাড়লেন আসানসোল উত্তর বিধানসভার বিজেপির দু’নম্বর মণ্ডল সভাপতি সুদীপ চৌধুরী, বিজেপি মহিলা মোর্চার দুই নেত্রী-সহ শতাধিক বিজেপি কর্মী এবং সমর্থক।শনিবার দুপুরে মন্ত্রী মলয় ঘটকের (Moloy Ghatak) হাত ধরে তৃণমূলে যোগ দেন সকলে। আর জোড়াফুলে এসেই গেরুয়া শিবিরের প্রতি তীব্র ক্ষোভ উগরে দেন সুদীপ। বিজেপি-তে তাঁকে হারানোর চক্রান্ত চলছিল বলে অভিযোগ করেন।
তৃণমূলে যোগ দিয়েই এ দিন আসানসোলের বিজেপি নেতৃত্বের দিকে আঙুল তোলেন সুদীপ। তিনি জানান, পুরভোটে তাঁকে টিকিট দেওয়া হয়েছিল বিজেপি-র তরফে। কিন্তু তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন। কারণ জিতেন্দ্র (Jitendra Tiwari) এবং কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় চাইছিলেন তিনি হেরে যান। সুদীপের দাবি, ওই দুই নেতার ঘনিষ্ঠরা টিকিট পেয়েছেন। অথচ বিজেপি-র পুরনো কর্মীদের বঞ্চিত করা হয়েছে। তাই তিনি টিকিট প্রত্যাখ্যান করেন।
তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ময়লের উন্নয়নের ধারার শরিক হতেই তৃণমূলের হাত ধরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন সুদীপ। সুদীপ এবং তাঁর সহযোগীদের দলে স্বাগত জানিয়ে মলয় জানান, বিজেপি-র অনেকেই তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। তৃণমূলে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করছেন। মলয় বলেন, ‘‘অপেক্ষা করুন। আরও বড় চমক অপেক্ষা করছে।’’
আরও পড়ুন: Abhishek Banerjee: পুরভোট পিছিয়ে দেওয়ায় হাইকোর্ট ও কমিশনকে ধন্যবাদ জানালেন অভিষেক
তবে যাঁকে কাঠগড়ায় তুলে বিজেপি ছাড়লেন সুদীপ, সেই জিতেন্দ্রর বক্তব্য, ‘‘বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে বহু বিজেপি কর্মীকে হুমকি দিয়ে আসছে তৃমমূল। মিথ্যা মামলায় ফেঁসেছেন বিজেপি-র অনেক নেতা। আজকের দিনে সাহস না থাকলে, বিজেপি করা যাবে না।’’ সুদীপের অভিযোগের জবাবে জিতেন্দ্র বলেন, ‘‘আমি তো কিছু দিন আগে বিজেপি-তে যোগ দিয়েছি। আগে যাঁরা টিকিট পেয়েছিলেন তাঁদের মধ্যে কত জন জিতে দেখাতে পেরেছেন?’’
এ নিয়ে রাজ্য বিজেপি-র তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া না মিললেও, আসানসোলে দলে দলে নেতাদের তৃণমূলে যোগদানে অশনি সঙ্কেত দেখছেন এলাকার বিজেপি কর্মীরা।
আগামী ২২ জানুয়ারি রাজ্যের চার পৌরসভা আসানসোল, শিলিগুড়ি, বিধাননগর এবং চন্দননগরে পুরভোট হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনা কালে ভোট পিছনো নিয়ে আদালতে মামলা ওঠে। তার পর শুক্রবার দু’সপ্তাহের জন্য ভোট পিছনোর আর্জি নিয়ে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয় রাজ্য সরকার। তাতে সায় দিয়ে শনিবার নয়া বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে কমিশন। তাতে ২২ জানুয়ারির পরিবর্তে ১২ ফেব্রুয়ারি পুরভোট হবে বলে জানানো হয়েছে। ফলঘোষণা ঠিক হয়েছে ১৫ ফেব্রুয়ারি।