কলকাতা : ওপার বাংলা থেকে ক্রমাগত হুমকি-হুঁশিয়ারি আসছে ভারতের উদ্দেশে। উত্তেজনা প্রশমনের পরিবর্তে পরিস্থিতি ক্রমশ ঘোরালো করে তুলছেন বিএনপি-র মতো দলের শীর্ষস্থানীয় নেতা। হুমকি দিয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত সেনা আধিকারিকও। এই পরিস্থিতিতে এবার বাংলাদেশ দখল করে নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেন এরাজ্যের সংখ্যালঘু নেতা। তাঁর পরিষ্কার হুঁশিয়ারি, "বর্ডার খুলে দিন ১৫ মিনিটের জন্য়, বাংলাদেশ দখল করে নেব আমরা।"


আগরতলা অভিমুখে BNP-র লং মার্চের আগে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিবের কথায় ফের যুদ্ধজিগির ! ফের ভারত-বিরোধিতার সুর শোনা গেল রুহুল কবীর রিজভি-র মুখে ! বিএনপি নেতা রুহুল কবীর রিজভি বলেন, "আমরা যে স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছি, এটা দিল্লির কাছে আমরা আত্মসমর্পণ করব ? আজকে যাঁরা এখানে অঙ্গীকারবদ্ধ বস্ত্র পরে রেখেছেন, তাঁদেরকে আমার মনে হয়েছে, বর্তমান যুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার।" তারা নাকি ৪ দিনে কলকাতা দখল করবে। বাংলাদেশের এক অবসরপ্রাপ্ত সেনা আধিকারিক বলেছিলেন, "আমরাও বলে দিচ্ছি, চার দিনের মধ্যে আমরা কলকাতা দখল করে নেব।" শুধু বাংলা নয়, সঙ্গে বিহার-ওড়িশা দখলেরও দাবি করেছেন BNP-র শীর্ষ নেতা রুহুল কবীর রিজভি। তিনি বলেছিলেন, "আমরাও দাবি করব, আমাদের নবাব সিরাজউদ্দৌলার বাংলা, বিহার, ওড়িশা ফেরত দাও আমাদেরকে।"


ভারত বিদ্বেষ দেখাতে গিয়ে কখনও নিজের স্ত্রীর ভারতীয় শাড়ি পুড়িয়েছেন, কখনও পুড়িয়েছেন রাজস্থানের জয়পুরের বেড কভার। ভারতীয় পণ্য় বয়কটের ডাক দিয়েছেন। আক্রমণ শানিয়েছেন মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়কে। মমতা বলেছিলেন, "এত বড় হিম্মত আপনাদের কেন, কারও নেই যে, বাংলা-বিহার-ওড়িশা সব নিয়ে নেবেন। আর আমরা বসে বসে ললিপপ খাব।" তাঁর মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে রুহুল কবীর রিজভি পাল্টা বলে হুঙ্কার ছেড়েছেন, "আপনারা যদি চট্টগ্রামের দিকে তাকান, দাবি করেন, আমরা কি আমলকি মুখে তুলব ?"


এই প্রেক্ষাপটে এবার বিএনপির শীর্ষ নেতা রিজভিকে কার্যত ফু দিয়ে উড়িয়ে দিলেন ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক। হুমায়ুন কবীর বলেন, "কখনও শাড়ি পোড়াচ্ছেন, কখনও বেডশিট পোড়াচ্ছেন, কখনও তিনি ভারতীয় জিনিস বয়কটের কথা বলছেন, আবার বাংলাদেশের লোকরাই এখানে নিউমার্কেটে এসে বিভিন্ন জায়গায় ভারতীয় বস্তু খরিদ করছেন। এখান থেকে প্রমাণিত হয় তাঁর কোনও কথার গুরুত্ব বাংলাদেশের লোকরাই দিচ্ছেন না। রিজভি সাহেবের কথাবার্তা বেলুনের মতো ব্য়াপার। এইসব ছুটকে, ফুটকেরা রিজভির মতো লোকরা ওই বেলুনের মতো ফুলতে চায়, ফুলে মনে হচ্ছে.... একটা পিন মেরে দিলেই বেলুন চুপসে যাবে। আমরা মুর্শিদাবাদের মানুষই ওঁদের বর্ডারের থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে আটকে দেব। ধারেকাছে ভিড়তে দেব না।" 


মালদার তৃণমূলের সংখ্য়ালঘু সেলের নেতা তো আবার বাংলাদেশ দখল করে নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন। মালদা তৃণমূল সংখ্য়ালঘু সেলের সভাপতি টিঙ্কুর রহমান বিশ্বাস বলেন, "কালকেও আমরা দেখেছি BNP নেতা, আমাদের মানবিক মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়কে ব্য়ঙ্গ করছিলেন কালকে। আমি বলতে চাই আমরা সংখ্য়ালঘু মুসলিম যারা আছি এখানে, আমাদের জন্য় যথেষ্ট বাংলাদেশ। আমি কালকেও বলেছি, বর্ডার খুলে দিন ১৫ মিনিটের জন্য়, বাংলাদেশ দখল করে নেব আমরা। পুলিশ লাগবে না, ফোর্সও লাগবে না। বাংলাদেশ দখল করা কোনও বড় ব্য়াপার নয়। আমরা যারা সংখ্য়ালঘু মুসলিম আছি পশ্চিমবঙ্গে আমরাই যথেষ্ট দখল করার জন্য় এই বাংলাদেশ।"