সমীরণ পাল এবং শুভেন্দু ভট্টাচার্য, কলকাতা: বাংলাদেশের আন্দোলনের আঁচ এসে পড়ল সীমান্ত বাণিজ্যে। অশান্তির জেরে শনিবার থেকে কার্যত বন্ধ হয়ে গেল আমদানি-রফতানি। বিপদে পড়েছে ব্যবসায়ীরা। এর জেরে কি ফের বাড়বে জিনিসপত্রের দাম? আশঙ্কায় সাধারণ মানুষ।
সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের জন্য ৩০ শতাংশ সংরক্ষণের প্রতিবাদে, অগ্নিগর্ভ বাংলাদেশ। লম্বা হচ্ছে মৃত্যু মিছিল। এবার অশান্ত বাংলাদেশের আঁচ এসে পড়ল চ্যাংড়াবান্ধা এবং পেট্রাপোল সীমান্তে। শনিবার থেকে কার্যত বন্ধ হয়ে গিয়েছে এপার-ওপারের মধ্য়ে আমদানি-রফতানি। যার জন্য বিপদে পড়েছে ব্যবসায়ীরা।
ভারত বাংলাদেশ বাণিজ্যকেন্দ্রে গাড়ি বন্ধ। ভুটান, ভারত থেকে আসা গাড়ি সারি দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। বাংলাদেশে পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক ব্যবসায় প্রভাব ফেলেছে। চ্যাংড়াবান্ধা এক্সপোটার্স অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে খবর, স্বাভাবিক সময়, এই চেকপোস্ট দিয়ে দিনে ৩০০-র কাছাকাছি ট্রাক যাতায়াত করে বাংলাদেশ, ভারত এবং ভুটানে। যার ফলে প্রতিদিন প্রায় আড়াইকোটি টাকার ব্যবসা হয়।
চ্যাংড়াবান্ধার মুদ্রা বিনিময়কারী বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, 'আমাদের বাংলাদেশের ওপর নির্ভর ব্যবসা। আমাদের এখানে টাকা এত কম লোকজন আসছে। খুব সমস্যা। গাড়ি ঘোড়া নেই।' চ্যাংড়াবান্ধা এক্সপোটার্স অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক অমরজিৎ রায় বলেন, 'এখানে ব্যবসা পুরোপুরি বন্ধ। ট্রাক বন্ধ। কাঁচা পণ্য, আদা, রসুনের গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে।' প্রায় একই অবস্থা উত্তর ২৪ পরগনার পেট্রাপোল সীমান্তে।
পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন সূত্রের খবর, শনিবার কয়েকটি ট্রাক সীমান্ত পেরোনোর পরই বন্ধ হয়ে যায় রফতানি। পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, 'সকালে ৩০-৩৫ গাড়ি গেছিল। তারপর থেকে বন্ধ। আমাদের ফোন করে জানানো হয় বন্ধ রাখতে রফতানি। আমাদের অসুবিধা নেই। ওরাই এখন আমদানি করতে চাইছে না।' কবে স্বাভাবিক হয় পরিস্থিতি এখন সেটাই দেখার।
এদিকে, আমদানি রফতানি বন্ধে প্রভাব পড়েছে হাওড়া পাইকারি মাছ বাজারে। অন্য অনেক মাছের মত বন্ধ ইলিশ মাছ সরবরাহ। যেখানে প্রতিদিন ১০০ টন টেংরা, ভেটকি, পাবদা, পাঙ্গাস, পমফ্রেট সহ বিভিন্ন ধরনের মাছ বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা হত তা গত তিন চার দিন পুরোপুরি বন্ধ। এর ফলে প্রতিদিন গড়ে আড়াই কোটি টাকা লোকসান হচ্ছে।
এবারে ইলিশ আমদানির জন্যে চিঠি লেখার কাজ শুরু হলেও ইলিশ পাওয়া যাবে কিনা তা এখনো নিশ্চিত নয়। এইরকম অশান্তি চললে এবারে ওপার বাংলার ইলিশ নাও ঢুকতে পারে বলে আশঙ্কা। আপাতত কলকাতার ব্যবসায়ীরা তাকিয়ে আছেন কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। তারপরই ফের শুরু হতে পারে ব্যবসা।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে