পূর্ণেন্দু সিংহ, বাঁকুড়া: বাঁকুড়া শহরের লালবাজার মাঝিপাড়া এলাকায় আগুনে পুড়ে মৃত্যু হল ২জনের। ঘটনায় গুরুতর জখম আরও ৩ জন। দমকল ও পুলিশ এসে বাড়িতে থাকা ৫ জনকে উদ্ধার করে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যায়। সেখানে নিতাই পাল ও মিনা পাল নামে দু'জনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে. আজ ভোরে প্রবল শব্দে কেঁপে ওঠে গোটা এলাকা। ঘুম ভেঙে স্থানীয়রা বাড়ির বাইরে বেরিয়ে এসে দেখেন স্থানীয় নিতাই পালের বাড়ি দাউদাউ করে জ্বলছে। ভেঙে পড়েছে বাড়ির একাংশ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে দমকল ও বাঁকুড়া সদর থানার পুলিশ। আগুনের গ্রাসে থাকা বাড়ি থেকে মোট ৫ জনকে উদ্ধার করে প্রথমে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই দুজনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। অপর ৩ জনকে পরে দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে স্থানান্তরিত করা হয়। জানা গেছে মৃত ২ জনের নাম নিতাই পাল ও মীনা পাল। প্রাথমিকভাবে স্থানীয়দের দাবি রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার ফেটেই ওই বাড়িতে আগুন লেগেছে। আগুন লাগার কারণ খতিয়ে দেখছে পুলিশ ও দমকল।
গত ডিসেম্বর মাসে নিউ আলিপুরের দুর্গাপুর ব্রিজের তলায় ঝুপড়িতে আগুন লাগে। প্রায় ২ ঘণ্টা ধরে তাণ্ডব চলে আগুনের লেলিহান শিখার। গত ২১ ডিসেম্বর কাটতেই শনিবার আগুন লাগে নিউ আলিপুরের রেল ইয়ার্ডের ঠিক পাশে, দুর্গাপুর ব্রিজের তলায় থাকা ঝুপড়িগুলিতে। আগুনের লেলিহান শিখা ব্রিজের ওপর পর্যন্ত উঠে আসে।
একসময় তো মনে হতে থাকে আগুনে ব্রিজেরও বড় কোনও ক্ষতির আশঙ্কা তৈরি হয়। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন স্থানীয়রা। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে চলে আসে দমকল। কিন্তু ব্রিজের তলায় এলাকা একেবারেই ঘিঞ্জি হওয়ায় সেখানে প্রথমে ঢোকা যায়নি। দুর্গাপুর ব্রিজের ওপর থেকে শুরু হয় জল দেওয়ার কাজ। ঘটনাস্থলের পাশেই 121 TA গাঢ়ওয়াল রাইফেলসের ক্যাম্প রয়েছে। কমান্ডিং অফিসার কর্নেল সমরজিৎ রায়ের নেতৃত্বে ছুটে আসেন সেনা জওয়ানরা। হাত লাগান আগুন নেভানোর কাজে। আগুন নেভানোর কাজে একসময় জলের অভাব হলে ক্যাম্পের দরজা খুলে দেয় সেনা। সেখানকার রিজার্ভারের পাশাপাশি জওয়ানদের পানীয় জলের ট্যাঙ্কের জলও ব্যবহার করা হয় আগুন নেভানোর কাজে। এরপর একে একে দমকলের প্রায় ১৬টি ইঞ্জিন এসে আগুন নেভায়। কিন্তু ততক্ষণে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে সব। ঘটনাস্থলে পৌঁছন মেয়র ফিরহার হাকিম এবং বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। দুজনে মিলে আগুন নেভানোর কাজের তদারকি করেন। স্থানীয়রা দাবি করেন, প্রায় ৩ হাজার মানুষ এই ঝুপড়িতে বাস করেন। ভুক্তভোগীদের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দেন স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর।
আরও পড়ুন: East Burdwan: ভাড়াটিয়ার তথ্য থানায় জমা দেওয়ার আবেদন, প্রচারে নামল পুলিশ