তুহিন অধিকারী এবং অনির্বাণ বিশ্বাস, বাঁকুড়া: নিজের লোকসভা কেন্দ্র বিষ্ণপুরেই বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁর বিরুদ্ধে পড়ল পোস্টার! পোস্টারে তাঁকে জনগণ বিরোধী বলে উল্লেখ করে, লোকসভা ভোটে প্রার্থী না করার দাবি তোলা হয়েছে। বিজেপির অভিযোগ, এর নেপথ্যে রয়েছে তৃণমূল। পাল্টা গেরুয়া শিবিরের গোষ্ঠীকোন্দলকে নিশানা করেছে শাসকদল। এই পোস্টারকে গুরুত্ব দিতে নারাজ সৌমিত্র। 


কোথাও লেখা, বিষ্ণুপুর বিধানসভার টিকিট বিক্রির কান্ডারী। কোনওটায় আবার লেখা, জনগণ বিরোধী সৌমিত্র নিপাত যাক। বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদের বিরুদ্ধে তাঁর শহরেই পড়ল এমন একাধিক পোস্টার।যেখানে বিধানসভা, পঞ্চায়েত ও পুরভোটে বিজেপির খারাপ ফলের জন্য সাংসদ সৌমিত্র খাঁ-কে দায়ি করা হয়েছে। সৌমিত্রর জন্য় বিষ্ণুপুর বিধানসভা, কোতুলপুর বিধানসভা, বড়জোড়া বিধানসভা হাতছাড়া, বিষ্ণুপুর পুরসভা, সোনামুখী পুরসভা, হাতছাড়া কোতুলপুর ইন্দাস বিধানসভার সমস্ত পঞ্চায়েত হাতছাড়া। পোস্টারে অভিযোগ, সৌমিত্রর জন্য়ই বিষ্ণুপুর, কোতুলপুর, বড়জোড়া বিধানসভা আসনগুলি বিজেপির হাতছাড়া হয়েছে।
 
 কোনও পোস্টারে সৌমিত্র খাঁকে আর প্রার্থী না করার দাবিও উঠেছে। তাতে লেখা, ১০ বছরের অবসান চাই। তিন বছরে চার জেলা সভাপতি পরিবর্তনকারী, মিথ্য়াচারী, ব্য়াভিচারকারী দুষ্কৃতী সৌমিত্র দূর হঠো। যখন হয় বিজেপি কর্মীদের ওপর অত্য়াচার। তখনই এলাকা ছেড়ে সৌমিত্র পালায়। ১০ বছরের অবসান চাই। সৌমিত্র দালালের বিদায় চাই। রবিবার বিষ্ণপুরে, বিজেপি সাংগঠনিক জেলা পার্টি অফিসের সামনে পড়েছে এমনই একাধিক পোস্টার। কিন্তু কে বা কারা এই পোস্টার দিয়েছে তা স্পষ্ট নয়। কোনও পোস্টারের নীচে লেখা- বিষ্ণুপুর লোকসভা রাজনৈতিক দূষণ বিরোধী সামাজিক সচেতন জনগণ। কোনওটার নীচে লেখা, নিবেদন করছেন - বিষ্ণুপুরের শুভ বুদ্ধি সম্পন্ন শিক্ষিত অনুশাসিত জনগণ। 


বিজেপির অভিযোগ, পোস্টার টাঙানোর নেপথ্য়ে রয়েছে তৃণমূল। বিষ্ণুপুর বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ বলেছেন, যাঁরা করছেন, তাঁরা ভাল থাকবেন। কারণ, বিজেপি বাংলায় ৩৫টা সিট পাবে। নিশ্চিন্তে থাকবেন। ভারতবর্ষে রাম মন্দির তৈরি হচ্ছে, তাই আগামী বছরের জন্য় সবাইকে প্রীতি ও শুভেচ্ছা। ভাল থাকবেন। বিষ্ণুপুর লোকসভায় বিজেপি ৩ লক্ষ ভোটে জিতব এটা নিশ্চিতভাবে বলা যায়। যদিও এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই ফের বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ।


আরও পড়ুন, নতুন বছরে পেট্রোল ও ডিজেলের দর কমল একাধিক শহরে, কলকাতায় কত ?


২০১১-এর বিধানসভা ভোটে কোতুলপুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে কংগ্রেসের টিকিটে জিতে বিধায়ক হন সৌমিত্র খাঁ। কিন্তু বছর ঘুরতে না ঘুরতেই যোগ দেন তৃণমূলে।২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে তৃণমূলের হয়ে বিষ্ণুপুরের সাংসদ হন সৌমিত্র খাঁ। উনিশের লোকসভা ভোটের আগে আগে ফের রাজনৈতিক শিবির বদলে যোগ দেন বিজেপিতে। বিজেপি হয়ে লোকসভা ভোটে জিতে দ্বিতীয় বার সাংসদ হন সৌমিত্র। এবার, আরেক লোকসভা ভোটের মুখে সেই সৌমিত্র খাঁর নামে তাঁরই লোকসভা কেন্দ্রে পড়ল পোস্টার!