পূর্ণেন্দু সিংহ, বাঁকুড়া : ফের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকে বিতরণ করা খাবারে টিকিটিকি পাওয়ার অভিযোগ উঠল ! এবার ঘটনাস্থল বাঁকুড়ার হাটগ্রাম উত্তরপাড়া আইসিডিএস সেন্টার। তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় অন্তত ২০ জন শিশুকে। অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন অতিরিক্ত জেলাশাসক।


ময়ূরেশ্বর, চাঁচল, নামখানার পর এবার বাঁকুড়ার হাটগ্রাম উত্তরপাড়া। ফের আইসিডিএস সেন্টারের খাবারে টিকটিকি মেলার অভিযোগ উঠল ! বৃহস্পতিবার সকালে হাটগ্রাম উত্তরপাড়া অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকে খাবার দেওয়া হয়। অভিযোগ, বাড়িতে নিয়ে গিয়ে টিফিন বক্স খুলতেই দেখা যায় ডালের মধ্যে ভাসছে টিকটিকি !


অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী পূর্ণিমা অধিকারী বলেন, আমার রান্নাঘরটা অন্ধকার। দু'টো উনুন জ্বলে। সেই অন্ধকারে... ডাল যেটা হয়েছিল সেই ডালটায় একটা টিকিটিকি পড়ে গিয়েছিল। খাবারটা যে মা প্রথম নিয়ে গেছে, সে মনে হয় ঢাকা দিয়ে রেখে দিয়েছিল যে পরে খাওয়াব। বাকিটা ডিস্ট্রিবিউট হয়ে গেছে, জানতে পারিনি।

এলাকার আরও অনেক শিশুই ততক্ষণে ওই খাবার খেয়ে ফেলেছে। খবর ছড়িয়ে পড়তেই তড়িঘড়ি শিশুদের নিয়ে হাসপাতালে ছুটে যান অভিভাবকরা। আপাতত বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ওই শিশুদের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।


দিন দুয়েক আগেই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের খিচুড়িতে টিকটিকি মেলার অভিযোগ ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ায় খণ্ডঘোষে। সেই খাবার খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে কয়েকজন পড়ুয়া, দাবি স্থানীয়দের। ঘটনায় পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে বিক্ষোভ দেখান অভিভাবকরা। অসুস্থ শিশুদের চিকিৎসায় গ্রামে যায় মেডিক্যাল টিম। 'গাইডলাইন মেনে দেওয়া হয়নি খাবার, গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।' এমনই আশ্বাস দেন ব্লক চাইল্ড ডেভেলপমেন্ট প্রোজেক্ট অফিসার ।


এর আগে কার্যত ভূরি ভূরি অভিযোগ উঠেছিল মিড ডে মিল নিয়ে। প্রকল্পের  (Midday Meal Project) হাল হকিকত খতিয়ে দেখতে গত ফেব্রুারিতেই ৮ দিনে ৮ জেলায় ঘুরে দেখেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা (Central Team)। সঙ্গে ছিলেন রাজ্য সরকারের আধিকারিকরা। 


মিড ডে মিলের বাস্তবায়ন খতিয়ে দেখতে ৮ দিন ধরে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরেছে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। রাজ্যে মিড ডে মিল নিয়ে সামনে এসেছে একাধিক অভিযোগ। কোথাও মিড ডে মিলের মধ্য়ে মিলেছে সাপ। কোথাও ড্রামে পাওয়া গেছে মরা ইঁদুর। কোথাও খিচুড়ির মধ্য়ে টিকটিকি মেলার অভিযোগ। আর ঠিক এই প্রেক্ষাপটেই মিড ডে মিলের বাস্তবায়ন খতিয়ে দেখতে ২৯ জানুয়ারি রাজ্য়ে আসে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। মিড মিলের সুবিধা কারা পাচ্ছে ? রাজ্য সরকার স্কুলগুলিকে কীভাবে টাকা পাঠাচ্ছে ? যে টাকা  স্কুলগুলিতে বরাদ্দ হচ্ছে, তা কতটা কার্যকরী হচ্ছে ? মিড ডে মিলের পরিকাঠামো কেমন ? রান্নাঘরের কী অবস্থা ? ছাত্র-ছাত্রীরা পর্যাপ্ত পুষ্টি পাচ্ছে কি না ? খাবার পরীক্ষা হয় কিনা ? ৮ দিনে ৮ জেলার ৩০টি স্কুলে  রাজ্য় সরকারি আধিকারিকদের সঙ্গে নিয়ে, তারা খতিয়ে দেখেন।