পূর্ণেন্দু সিংহ,  বাঁকুড়া: এ যেন একেবারে স্বপ্নের মতো। যা সত্যি হওয়ার সাধ পেতে চলেছেন এক আদিবাসী কন্য়া। ২৬ জানুয়ারি প্রজাতন্ত্র দিবসে দিল্লির রাজপথে প্যারেডে অংশ নেবেন বাঁকুড়ার জঙ্গল মহলের আদিবাসী কন্যা সুস্মিতা সোরেন। খাতড়ার চিরুনগর গ্রামের সুস্মিতা সোরেনের এই সাফল্যে খুশীর হাওয়া এলাকা জুড়ে।                             

  


সুস্মিতার বাবা সহদেব সোরেন পেশায় স্থানীয় সুপুর হাই স্কুলের শিক্ষক, মা মমতা সোরেন প্রাথমিক শিক্ষিকা হলেও প্রত্যন্ত চিরুনগর গ্রাম থেকে দিল্লির রাজপথ সুস্মিতার এই জার্নিটা মোটেই সহজ ছিল না।                                                         


খড়বন প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষার পাঠ শেষ করে সুস্মিতা। এর পর গড় রাইপুর হাই স্কুল থেকে মাধ্যমিক ও খাতড়ার কংসাবতী শিশু বিদ্যালয় থেকে উচ্চ মাধ্যমিক। শেষে বর্তমানে বাঁকুড়া সম্মিলনী কলেজে সংস্কৃত অনার্সের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী সে।


এই কলেজে পড়াশোনা করতে এসেই এন.এস.এস অর্থাৎ জাতীয় সেবা প্রকল্পে নিজের নাম লেখানোর সুযোগ পায় সে। পরে চলতি বছরে নভেম্বর মাসে দেশের পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিকে নিয়ে বাছাই পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। আর সেখান থেকেই এরাজ্যের আটজন প্রজাতন্ত্র দিবসে দিল্লিতে প্যারেডে অংশ নেওয়ার ছাড়পত্র পেয়েছেন, জঙ্গল মহলের সুস্মিতা সোরেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম।


নির্বাচিত স্বেচ্ছাসেবকদের ১ জানুয়ারী থেকে ৩১ জানুয়ারী পর্যন্ত দিল্লিতে ক্যাম্পে রাখা হবে । আর সেকারণেই আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই সুস্মিতারা দিল্লির উদ্দেশে রওনা দেবে বলে খবর। স্কুল জীবনেই সুস্মিতার এন.এস.এসে যোগ দেওয়ার ইচ্ছে থাকলেও তখন সেই সুযোগ হয়নি। আর তাই কলেজে এসে সেই সুযোগ পেয়ে আর হাতছাড়া করতে চাইনি সে। সুস্মিতা জানিয়েছেন, প্রথম দিকে মা, বাবা একটু নিমরাজি থাকলেও এখন সবাই সমানভাবে সমর্থন করছেন এবং উৎসাহ দিচ্ছেন।


তাঁদের কলেজের এই ছাত্রীর সাফল্যে খুশী বাঁকুড়া সম্মিলনী কলেজের জুলজি বিভাগের অধ্যাপক ও এন.এস.এস ইউনিট-১ এর পোগ্রাম অফিসার সুরজিৎ মজুমদার। তিনি বলেন, '২০১৪ সালে সমাপ্তি সিংহমহাপাত্রের হাত ধরে আমাদের দিল্লি যাত্রা। এর পর একে একে অনেকেই গেছে। এবার নবতম সংযোজন সুস্মিতা সোরেন। তাঁর এই সাফল্যে তাঁরা প্রত্যেকেই খুব খুশি বলে তিনি জানান।