পার্থপ্রতিম ঘোষ, কলকাতা: মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনায় শিশুমৃত্যুর পর, আজ খুলল বড়িশা স্কুল (Barisha School)। লালবাজারের নির্দেশে মেনে এদিন স্কুলের বাইরে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পড়ুয়াদের নিয়ে অভিভাবকদের ডায়মন্ড হারবার রোডে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। নির্দিষ্ট জায়গা দিয়ে রাস্তাপারাপার করানো হচ্ছে। স্কুলে যাওয়া-আসার সময় যাতে সকলেই ফুটপাত ব্যবহার করেন, তার ওপর নজর রাখছেন পুলিশ কর্মীরা। অভিভাবকরা বলছেন, এই নজরদারি আগে থাকলে এভাবে প্রাণ যেত না ৭ বছরের ফুটফুটে শিশুর। এই পুলিশি তৎপরতা কতদিন বজায় থাকে, সেটাই দেখার বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
আজ খুলল বড়িশা স্কুল: একমিনিটও একজায়গায় স্থির হয়ে দাঁড়াত না ৭ বছরের ফুটফুটে ছেলেটা। সে - ই আজ চিরঘুমে। চিরঘুমে সৌরনীলের দূরন্তপনা।তার দুষ্টুমিভরা মুখ। বেপরোয়া লরিতে পিষে সাত বছরের ফুটফুটে শিশুর মৃত্য়ুর ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছে শহরবাসীকে। আর প্রাণোচ্ছ্ল ছেলেটা চলে যাওয়ার পর, সতর্ক হয়েছে পুলিশ। রবিবার ছুটির দিনেও দেখা গিয়েছিল, বেহালা চৌরাস্তায় (Behala accident) কড়া পুলিশি প্রহরা। শনিবারের মতো, রবিবারও রাস্তায় বসানো হয়েছিল ব্য়ারিকেড (Kolkata accident) । আর মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনার পর আজ সপ্তাহের প্রথম দিন খুলল বড়িশা স্কুল।
৭ বছরের শিশুর মৃত্যুর পর কড়াকড়ি। পুলিশ দাঁড়িয়ে। কোনও দুর্ঘটনা যাতে না ঘটে। বেরিয়ার বসানো হচ্ছে। সবটা হচ্ছে ৭ বছরের শিশুর মৃত্য়ুর পর। মৃত শিশুর মা দীপিকা সরকার গতকাল বলেন, “পরিবর্তন হয়েছে। আগে হলে ছেলেটা আমার যেত না। আমার সঙ্গে থাকত। তবু এখন হয়েছে, আর বাচ্চাগুলোতো বেঁচে যাবে। তাদের ভবিষ্যত তাদের মায়ের কোল আমার মতো হবে না। আগে হলে আমারও হতো না।’’ কিন্তু সৌরনীলের এই মৃত্যুর দায় কার? তা নিয়ে হাজারো প্রশ্নের মাঝেই, সিসি ক্য়ামেরার ফুটেজ বলছে, শুক্রবার ট্রাফিক আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে জেব্রা ক্রসিংয়ের সামনে স্টপলাইন পেরিয়ে দাঁড়িয়েছিল একাধিক গাড়ি। ছোট্ট সৌরনীলের কাছে খুবই শক্ত বানান ছিল ট্রাফিক সিগন্যাল। তাই পরীক্ষা দিতে বেরনোর আগে, বানানটা ভালোভাবে শিখিয়ে দিয়েছিলেন মা। ভাবতেও পারেননি সেই ট্রাফিকই এই ভয়ঙ্কর পরিণতির অন্যতম এক কারণ হবে। দীপিকা সরকার বলেন, “ওদের সাবজেক্ট আছে, তাতে ট্রাফিক সিগন্য়ালের ওপর পড়া আছে। কোন সিগন্য়াল হলে পার হব। কোথা দিয়ে জেব্রা ক্রসিং পার, সেটা ওদের পড়ার মধ্য়ে। বানান ভুল হয় বলে, ট্রাফিক সিগন্য়াল বানানটা একটু কঠিন তো, সিঁড়িতে জুতো পরাচ্ছি, তখন বলে দিলাম, বাবা, ট্রাফিক সিগন্য়াল বানানটা। সদ্য় শুনে গেলে, পরীক্ষার সময় বাচ্চার মাথার মধ্য়ে থাকে বলে, আমার ছেলেটা পড়াশোনায় খুব ভাল ছিল, ফুল মার্কস পায় জানেন সবটাতে।’’
আরও পড়ুন: Murshidabad News: নবগ্রামে পুলিশ লকআপে পিটিয়ে মারার অভিযোগ, খুনের অভিযোগ দায়ের মৃতের পরিবারের