কলকাতা : 'তাজপুর বন্দরে পরিকাঠামো তৈরি।' বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন থেকে টেন্ডারের জন্য আহ্বান জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই পরিস্থিতিতে উঠছে নানা প্রশ্ন। এবার সম্মেলনে মঞ্চ আলো করে দেখা গেল রিলায়েন্স গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান মুকেশ আম্বানিকে। কিন্তু, এদিন দেখা গেল না আদানি গোষ্ঠীর কর্ণধার গৌতম আদানিকে। যাকে নিয়ে সংসদে কম তোলপাড় হয়নি। এই পরিস্থিতিতে লোকসভা ভোটের আগে আগে বাংলার বাণিজ্য সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঘনিষ্ঠ গৌতম আদানির অনুপস্থিতি ঘিরে উঠেছে প্রশ্ন। এর উপর আবার তাজপুর বন্দরের টেন্ডারের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর আহ্বান, সেই জল্পনার আগুনে ঘি ঢেলেছে। আদানি কি বেঁকে বসেছেন ?  তাই তাজপুরে ফের টেন্ডার, এমনই প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি।


গত বছর সেপ্টেম্বর মাস নাগাদ আদানি গোষ্ঠীর তাজপুরে সমুদ্র বন্দর (Tajpur Port) তৈরির বরাত পাওয়ার কথা জানা যায়। এর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)। সমুদ্র বন্দর তৈরিতে সব মিলিয়ে প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা খরচ হবে বলে জানান তিনি। নবান্নের (Nabanna) তরফে দাবি করা হয়, এতে প্রত্যক্ষ ভাবে কর্মসংস্থান হবে ২৫ হাজার কোটি টাকা।


তাজপুরে সমুদ্র বন্দর তৈরির জন্য গ্লোবাল টেন্ডার ডেকেছিল রাজ্য সরকার। নবান্ন সূত্রে জানা যায়, তাতে অংশ নেয় গৌতম আদানির সংস্থা, আদানি পোর্টস অ্যান্ড স্পেশাল ইকোনমিক জোন, জিন্দল গ্রুপ-সহ একাধিক সংস্থা। কিন্তু, সবাইকে পিছনে ফেলে বাংলার তাজপুর গভীর সমুদ্র বন্দর তৈরির বরাত পায় আদানিরাই। তাজপুরে বন্দির তৈরি সংক্রান্ত প্রক্রিয়া চলছিল বেশ কিছু দিন ধরেই। কিছু আইনি জটিলতা দেখা দেয়। সেই জটিলতা কাটিয়ে তাজপুর সমুদ্র বন্দর তৈরির বরাত পায় আদানি গোষ্ঠীই। এনিয়ে রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে মেলে ছাড়পত্রও।


ফিরহাদ হাকিম সেই সময় জানিয়েছিলেন,'অনেক দিন ধরেই তাজপুরে বন্দর করার জন্য টেন্ডার ও ডিপিআর প্রসেস চলছিল। দু’জন অংশগ্রহণ করেছিল এ বিষয়ে। তাজপুর বন্দর করতে সর্বোচ্চ দরপত্র দিয়েছে আদানি গোষ্ঠী।’


এরপর মার্কিন সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের বিস্ফোরক রিপোর্টে বিতর্কের মুখে পড়ে গৌতম আদানি গোষ্ঠী। তা নিয়ে তোলপাড় হয় সারা দেশ। সেই ইস্যুতে জড়ায় তৃণমূলও। টাকার বিনিময়ে সংসদে আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে প্রশ্ন তোলার অভিযোগে ওঠে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রর বিরুদ্ধে। এই অভিযোগে তাঁকে লোকসভা থেকে বহিষ্কারের সুপারিশ করেছে সংসদের নীতি কমিটি। এই পরিস্থিতিতে আজ তাজপুর বন্দর নিয়ে টেন্ডারের আহ্বান। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "তাজপুরে প্রস্তাবিত গভীর সমুদ্র বন্দর তৈরি। আপনারা টেন্ডারে অংশগ্রহণ করতে পারেন। ২৫ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প এটি।"