কলকাতা : শেখ শাহজাহানকে (Seikh Shahjahan) সিবিআইয়ের (CBI Investigation) হাতে তুলে দিতেই হবে পুলিশকে । জরুরি শুনানির আর্জি জানিয়েছিল রাজ্য। তাতে সাড়া দিল না সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) । রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে যেতে বললেন বিচারপতি সঞ্জীব খন্না । কোনও নির্দেশ না দিয়ে রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে যাওয়ার পরামর্শ।


সন্দেশখালির ঘটনায় কার্যত উত্তাল গোটা দেশ। গত ৫ জানুয়ারি রেশন দুর্নীতির তদন্তে, সন্দেশখালিতে (Sandeshkhali Incident) শেখ শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গেছিল ED। সঙ্গে ছিলেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। ওই বাড়িতে ঢোকার আগেই ED অফিসার এবং CRPF জওয়ানদের ওপর বর্বরোচিত হামলা চালায় একাধিক দুষ্কৃতী। ইডি অফিসারের মাথা ফাটে। প্রাণ বাঁচাতে টোটোয় চেপে পালান তাঁরা। অভিযোগ, সেই হামলার মাস্টারমাইন্ড ছিলেন তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানই। কিন্তু সেই শেখ শাহজাহানের হদিশ পায়নি রাজ্য পুলিশ। যদিও আগাম জামিনের জন্য আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। মামলাকারী হিসেবে ওকালতনামায় সই করেছেন। তবুও পুলিশ তাঁর টিকি ছুঁতে পারেনি। লাগাতার বিক্ষোভের জেরে শেষমেশ ২৯ ফেব্রুয়ারি সকালে মিনাখাঁ থেকে শেখ শাহজাহানকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এই ঘটনার প্রতিবাদে রাজ্যে এসে সুর চড়িয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও। এহেন সন্দেশখালির ঘটনায় অবিলম্বে শেখ শাহজাহানকে সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। ইডির উপরে হামলার ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয় প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। আজই বিকেল ৪.৩০টার মধ্যে শেখ শাহজাহানকে হস্তান্তরের নির্দেশ দেওয়া হয়। ওই সময়ের মধ্যে সিবিআইকে নথি দেওয়ারও নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। সন্দেশখালিকাণ্ডে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়ে ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, '৫০ দিন পালিয়ে থাকার পর ২৯ ফেব্রুয়ারি গ্রেফতার হন শেখ শাহজাহান। শেখ শাহজাহান একজন সাধারণ নাগরিক নন, তিনি নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। যে রাজনৈতিক দলের হয়ে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন, সেটা রাজ্য়ের শাসক দল। ন্য়ায়বিচারের স্বার্থে, স্থানীয়দের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্যেই সিবিআই।'


সন্দেশখালিকাণ্ডে হাইকোর্টের নির্দেশে প্রশ্নের মুখে পড়ে পুলিশ । সন্দেশখালিকাণ্ডে সিবিআই-নির্দেশ দিয়ে পুলিশকে তুলোধনা করে হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ, পুলিশ পক্ষপাতদুষ্ট, অভিযুক্তকে রক্ষা করতে, লুকোচুরি খেলেছে। অভিযুক্ত রাজনৈতিকভাবে অত্য়ন্ত প্রভাবশালী। অভিযুক্ত দেখিয়ে দিয়েছেন, সুযোগ পেলে তদন্তকে প্রভাবিত করতে পারেন। অভিযুক্ত দেখিয়ে দিয়েছেন, পুলিশের হাতে তদন্ত থাকলে প্রভাবিত করতে পারেন।


হাইকোর্টের আরও বক্তব্য, রেশন দুর্নীতির মামলা অত্য়ন্ত গুরুত্বপূর্ণ, রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের নাম এসেছে। প্রভাবশালীদের মধ্যে শেখ শাহজাহানের নামও আছে। মানুষের আস্থা ফেরাতে স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ তদন্ত প্রয়োজন। মানুষের বিশ্বাসের ভিত নড়ে গেছে, এনিয়ে কোনও দ্বিধা নেই। সিবিআইকে দেওয়ার জন্য এর থেকে উপযুক্ত মামলা আর হতে পারে না।'