মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, অনির্বাণ বিশ্বাস, কলকাতা: বিজেপি (BJP) -তৃণমূলকে (TMC) আরএসএসের ২ সন্তান বলে মন্তব্য করলেন বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য । সর্বভারতীয় স্তরে ঐক্যের কথা বলেও, এরাজ্যে তৃণমূলের সঙ্গে হাত ধরাধরি নিয়ে তীব্র আপত্তি শোনা গেল সিপিএমের রাজ্যসভার সাংসদ তথা বর্ষীয়ান নেতার মুখে। কোন দিকে যাচ্ছে তবে জোট পরিস্থিতি? নতুন করে জল্পনা শুরু হল রাজনৈতিক মহলে।

Continues below advertisement

'তৃণমূলের সঙ্গে ঐক্য নয়': সিপিএমের রাজ্যসভার সাংসদ বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলছেন, 'সর্বভারতীয় স্তরে আমরা ঐক্য করছি তার মানে এই নয় যে তৃণমূলের সঙ্গে ঐক্য'। 

'বাংলায় লড়াই তৃণমূল ও বিজেপি, দু'দলের বিরুদ্ধেই': ২৪-এর লোকসভা ভোটে বাংলায় তাঁদের লড়াই তৃণমূল ও বিজেপি, দু'দলের বিরুদ্ধেই!  কয়েকদিন আগেই পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছিলেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি! এবার আরও এক ধাপ এগিয়ে তৃণমূলকে বিজেপির দ্বিতীয় দল বলে নিশানা করলেন সিপিএমের রাজ্যসভার সাংসদ ও আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য়। 

Continues below advertisement

বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের (Bikash Ranjan Bhattacharya) কথায়, তৃণমূল হচ্ছে বিজেপির দ্বিতীয় দল। আরএসএসের ২ টি সন্তান। একটি বিজেপি একটি তৃণমূল। আরএসএসের মূল লক্ষ্য হচ্ছে কমিউনিস্ট বিরোধিতা। আমাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে রাজনীতি ও ধর্মের যে সংমিশ্রন তার বিরুদ্ধে লড়াই করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা। সেজন্যই আমরা তৃণমূলের বিরুদ্ধে। তৃণমূল-বিজেপি আমাদের কাছে একই শরিক। এর আগে, ইন্ডিয়া জোটের বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে মঞ্চ ভাগ করে নেওয়ায়, প্রশ্ন উঠেছিল দলীয় কর্মীদের একাংশের মধ্যেই। যা নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। 

১৯ শে ডিসেম্বর, বিরোধী ইন্ডিয়া জোটের বৈঠকেও সীতারাম ইয়েচুরি আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মাঝে ছিল শুধু রাহুল গান্ধীর আসন। কিন্তু সেই বৈঠকেও আসন রফা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে উঠতে পারেনি ইন্ডিয়া জোটের শরিকরা। আর এর মধ্যেই সিপিএম নেতার বক্তব্য তৈরি হয়েছে চাপানউতোর। 

এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের  রাজ্য় সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার বলছেন, RSS আর সিপিএম ১৯২৫ সালে তৈরি। অন্তর্নিহিত সম্পর্ক। একজন বলে আজাদি ঝুটা হ্যায় আরেকজন বলে হিন্দুরাষ্ট্র। আর সেলিমরা যত এগুলো বলবেন তত ভালো। এরাজ্যে এমনিতেই তো শূন্য।

২১-এর বিধানসভা ভোটে কংগ্রেস ও আব্বাস সিদ্দিকির দল ISF-এর সঙ্গে সংযুক্ত মোর্চা তৈরি করে ভোটের ময়দানে নেমেছিল বামেরা। যদিও বিধানসভায় শূন্য হয়ে গেছে সিপিএম। তবে আসন্ন লোকসভা ভোটে ফের কি একবার ISF-এর সঙ্গে একসাথে ভোটের ময়দানে নামতে পারে বামেরা?  

জোট নিয় নৌশাদ সিদ্দিকি বলছেন, শুধু মীনাক্ষী দি নয়, যারা সিনিয়র লিডারও আছেন তাঁদেরকেও প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হচ্ছে।  তাঁরাও চাইছে না। 'INDIA' যে জোট হয়েছে সেই জোটের আমি বিরোধী নই। সেই জোটের আমি বিরোধিতা করছি না। কিন্তু সেই জোটে এমন কিছু রাজনৈতিক দল আছে যাদের দ্বারাই বিভিন্ন রাজ্যের গণতন্ত্র বিপন্ন হয়েছে। যারা ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করে তাঁরাও ওই জোটের মধ্যে আছে। সুতরাং তাঁদের সঙ্গে থাকতে পারি না। 

জয়প্রকাশ মজুমদারের কথায়, নৌশাদকে সামনে রেখে ইন্ডিয়া জোট বাঁচিয়ে সিপিএমের প্রার্থী দিতে পারে। আইএসএফ ধর্মনিরপেক্ষ হচ্ছে হিন্দু ভোটারদের জায়গায় প্রার্থী দেয় না কেন? কিছুদিন আগে কংগ্রেস হাইকম্যান্ডের সামনে, তৃণমূলের সঙ্গে জোট নিয়ে তীব্র আপত্তি জানিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেসের নেতারা। এবার বঙ্গ সিপিএম থেকেও উঠে আসছে সেই বার্তা।