অতসী মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: মত ও পথ একপাশে রেখে এক ফ্রেমে ওঁরা। বরেণ্য পরিচালকের মৃত্যু কাছাকাছি আনল ওঁদের তিনজনকে। তিনজন অর্থাৎ বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু (biman basu), তৃণমূল বিধায়ক ইন্দ্রনীল সেন (indranil sen) এবং রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (sukanta majumdar)। পাঁচ বারের জাতীয় পুরস্কারজয়ী চিত্রপরিচালককে (tarun majumdar) শ্রদ্ধা জানাতে এলেন তিন রাজনৈতিক দলের তিন মুখ।
শ্রদ্ধা জানালেন বিমান, সুকান্ত ও ইন্দ্রনীল
প্রয়াত নবতিপর চিত্রপরিচালক আজীবন বাম মনোভাবাপন্ন বলে পরিচিত ছিলেন। বামেদের একাধিক কর্মসূচিতেও দেখা গিয়েছে তাঁকে। হাসপাতালে ভর্তি থাকার সময় তরুণ মজুমদারকে দেখতে এসেছিলেন বিমান বসু। এদিনও আসেন। শ্রদ্ধা জানিয়ে যান। অল্প ব্যবধানে একই ফ্রেমে ধরা পড়েন তৃণমূল বিধায়ক ইন্দ্রনীল সেন। সংবাদমাধ্যমকে প্রতিক্রিয়া দেওয়ার সময় আপ্রাণ সংযত থাকার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু একসময় কিছুটা হলেও ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণায় চলে যান। বলেন, 'বাংলা সংস্কৃতি জগতের একটা অধ্যায় চলে গেল। ওঁর বেশ কিছু ছবিতে আমি গান করেছি। হেমন্ত মুখোপাধ্যায়-তরুণ মজুমদার একটা জুটি ছিলেন। তার পর শিবাজী চট্টোপাধ্যায়। এবং অনেক নতুন নতুন নায়ক-নায়িকাকে উনি সুযোগ দিয়েছেন। '
'মতাদর্শে কিছু যায় আসে না'
শ্রদ্ধা জানাতে এসে রাজ্য় বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, 'দাদার কীর্তি হোক বা শ্রীমান পৃথ্বীরাজ। এই ছবিগুলো সব বাংলা চলচ্চিত্রের এক একটা মাইলফলক। মনে হয় না এই ধরনের ছবি এখন আর তৈরি হয়। বাংলা চলচ্চিত্র জগতে, বাংলা বুদ্ধিজীবী জগতে এটা একটা বিরাট বড় ক্ষতি। এই ছবিগুলো দেখে বড় হয়েছি। স্বাভাবিক ভাবেই মনে হচ্ছে ছোটবেলার অনেকটা চলে গেল।' কিন্তু তরুণ মজুমদার যে সম্পূর্ণ ভিন্ন মেরুর রাজনৈতিক মতাদর্শে বিশ্বাস করতেন? রাজ্য বিজেপি সভাপতির প্রতিক্রিয়া, 'তাতে কিছু যায় আসে না। কেউ যদি ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শে বিশ্বাসী হয়েও এমন কিছু করেন যাতে দেশের উন্নতি হয় সেটা জনগণের পক্ষে ভালো। বিজেপি এমনই রাজনীতিতে বিশ্বাস করে।'
দেশের চলচ্চিত্রের মানোন্নয়নে তাঁর অবদান যে অস্বীকার করার নয়, সে কথা রাজনৈতিক মতাদর্শ নির্বিশেষে সকলেই মানেন। হয়তো সে কারণেই এই নক্ষত্রকে শ্রদ্ধা জানাতে আসার জন্য রাজনৈতিক মত ও পথের দ্বন্দ্ব দূরে রাখতে বিশেষ অসুবিধা হল না ওঁদের তিন জনের।
আরও পড়ুন:'এক ইতিহাস আজ চলে গেলেন', তরুণ মজুমদারের প্রয়াণে শোকপ্রকাশ ব্রাত্য বসুর