ভাস্কর মুখোপাধ্য়ায়, ইলামবাজার: নীতিমতো নির্দেশ জারি করে বন্ধ রাখা হয়েছে জাতীয় এবং রাজ্য সড়কে তোলা আদায়। কিন্তু তার পরও রাজ্য সড়কে দাদাগিরি চলছেই বলে অভিযোগ। রাস্তায় গাড়ি দাঁড় করিয়ে তোলা আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ জেলা পুলিশের একাংশের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় বীরভূম পুলিশের দুই কর্মীকে ক্লোজ করা হল। কিন্তু নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও টাকা তোলা হচ্ছিল কেন, উঠছে প্রশ্ন। (Birbhum News)
রাজ্য এবং প্রধান সড়কের উপর বালি, পাথরের ট্রাক দাঁড়ি করিয়ে তোলা আদায়ের অভিযোগ আজকের নয়। কিন্তু নির্দেশ জারি করে বারণ করা সত্ত্বেও বীরভূম জেলা পুলিশের একাংশ তোলা আদায় বন্ধ করেনি বলে অভিযোগ। এবার সেই নিয়ে কড়া পদক্ষেপ করলেন জেলা পুলিশের সুপার রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায়। তোলায় বন্ধ করতে কড়া নির্দেশ দিলেন তিনি। সেই সঙ্গে তোলা আদায়ের অভিযোগে ক্লোজ করা হল দুই পুলিশ কর্মীকে। (Birbhum Police)
জেলা পুলিশ সূত্রে খবর, কড়া নির্দেশ জারি করেছেন রাজনারায়ণ। তার জেরে গত ২৯ অগাস্ট থেকে নলহাটি থেকে জয়দেব, ইলামবাজার, খয়রাশোলের ভীমগড় পর্যন্ত থানার কোনও গাড়ি আর বড় রাস্তায় উঠছে না। তোলা আদায় বন্ধ করতেই এমন সিদ্ধান্ত বলে জানা গিয়েছে। কোথাও কোনও ব্যতিক্রম ঘটলে সেই নিয়ে জবাবদিবি করতেও বলা হয়েছে স্পষ্ট করে।
আরও পড়ুন: Birbhum News: ২ মিনিটের ঝড়ে লন্ডভন্ড লাভপুরের সাউগ্রাম, ধ্বংসস্তূপে পরিণত একের পর এক ঘর
কিন্তু এর পরেও টাকা নেওয়া বন্ধ হয়নি বলে অভিযোগ। সোমবারই ইলামবাজার থানার অন্তর্গত ১৪ নম্বর সড়কে এমন দৃশ্য চোখে পড়ে বলে জানা গিয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, রাজ্য সড়কে দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছিল পুলিশের টহলদারি গাড়ি। প্রশ্ন করলে, গাড়িতে থাকা পুলিশ কর্মী জানান, তদন্ত করতে গিয়েছিলেন তিনি।
সোমবার দেখা যায়, ইলামবাজার থানার জয়দেব ফাঁড়ির এলাকার অন্তর্গত থাকা ১৪নং সড়ক থেকে জয়দেব যাওয়ার রাস্তায় পুলিশের গাড়ি দাঁড়িয়ে রয়েছে। রাস্তার পাশে কেন দাঁড়িয়ে রয়েছেন জিজ্ঞাসা করা হয় এক পুলিশ কর্মীকে। প্রশ্ন শুনেই কার্যত মুখ ঢেকে ছুট লাগান তিনি। বাকি যাঁরা দাঁড়িয়ে ছিলেন, তাঁরাও দৌড় লাগান।
রাস্তা ট্রাক চালকদের জিজ্ঞেস করলে, তাঁরা জানান, এখনও এখনও টাকা দিতে হচ্ছে। জয়দেব থেকে বালি নিয়ে কলকাতা যাওয়া এক ট্রাকের চালক জানান, তাঁর ট্রাকে বালি অন্ডার লোড। তার পরেও জয়দেবে থেকে একটু এসে পুলিশকে ৩০০ টাকা দিতে হয়েছে। একই অভিযোগ অন্য আর এক ট্রাক চালকেরও।
জেলা পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, প্রতিটি থানাকে পুলিশ সুপার রাজনারায়ণ নির্দেশ দিয়েছেন যে, ‘প্রকৃত কারণ’ ছাড়া কোনও পুলিশ গাড়ি বড় রাস্তায় উঠবে না। গাড়ি থানা ছেড়ে কেন রাস্তায় উঠছে, তা ডেপুটি পুলিশ সুপার, এসডিপিও পদমর্যাদার কোনও আধিকারিককে জানাতে হবে।
বীরভূম থেকে রোজ শয়ে শয়ে বালি-পাথরের গাড়ি কলকাতা এবং ভিন্ জেলায় যায়। বালি, পাথর তো বটেই, কখনও কখনও কয়লা বা অন্য পণ্যবাহী গাড়ি দাঁড় করিয়ে বীরভূমের প্রতিটি থানা এলাকায় পুলিশ টাকা তোলে বলে ট্রাক এবং ডাম্পার চালকেরাও একাধিক বার অভিযোগ করেছেন। নির্দেশ আসার পরও তা বন্ধ হয়নি বলে অভিযোগ।