Kali Puja 2025: পুজোর দিনে চোখে দেখতে পেতেন অন্ধ পুরোহিত, সেরে যেত যক্ষ্মা! একসঙ্গে ৩ কালী প্রতিমার আরাধনা হয় একই মন্দিরে
Birbhum Lavpur Donaipur Kali Puja: বীরভূমের ঐতিহ্যপূর্ণ কালী পুজোগুলির মধ্যে অন্যতম হল লাভপুরের দোনাইপুরের মা কালী। এই পুজোর বিশেষত্ব হল, এখানে একটি মন্দিরের মধ্যে তিনটি কালীমূর্তিকে পুজো করা হয়

ভাস্কর মুখোপাধ্যায়,বীরভূম: আজ কালীপুজো। দিকে দিকে মায়ের আরাধনায় মগ্ন ভক্তরা। কোথাও কেবল আবেগ, চোখের জল.. কোথাও আবার ঠাকুর দেখার ধুম। তবে জাঁকজমকপূর্ণ পরিচিত কালীপুজোর পাশাপাশি, বিভিন্ন জায়গায় এই পুজো নিয়ে বিভিন্ন অদ্ভুত সব রীতি রয়েছে। বিভিন্ন অজানা রীতি মেনে বিভিন্ন জায়গায় করা হয় দেবীর আরাধনা। ঠিক তেমনই হল বীরভূমের ঐতিহ্যপূর্ণ লাভপুরের দোনাইপুরের মা কালী পুজো। এই পুজোর বিশেষত্ব হল, এখানে ৩টি কালীমূর্তি একসঙ্গে পুজো হয়।
বীরভূমের ঐতিহ্যপূর্ণ কালী পুজোগুলির মধ্যে অন্যতম হল লাভপুরের দোনাইপুরের মা কালী। এই পুজোর বিশেষত্ব হল, এখানে একটি মন্দিরের মধ্যে তিনটি কালীমূর্তিকে পুজো করা হয়। এর মধ্যে বড়মার উচ্চতা ২৬ ফুট। জনশ্রুতি আছে প্রায় আড়াইশ বছর আগে লাভপুরের বন্দ্যোপাধ্যায় পদাধিকারী জমিদার এই গ্রামে মা কালীর পুজো শুরু করেন। কিন্তু কোনোও এক অজানা কারণে তাঁরা এই পুজোর ভার দিয়ে দেন দোনাইপুরের পাঠকদের।
পাঠক বংশের ত্রৈলক্যনাথ পাঠক এক জন তান্ত্রিক ছিলেন। তিনি স্বপ্নাদেশে এই মন্দিরে 'ট্যাবা কালী' প্রতিষ্ঠা করেন। এই ট্যাবা কালীর মাহাত্ম্য ছিল, শিশুদের ট্যাবা রোগ হলে এই মা কালীর দেওয়া কবজ ধারণ করলে ট্যাবা রোগ সেরে যায়। (সেই সময়ে টিবি বা যক্ষ্মাকে চলতি কথায় ট্যাবা রোগ বলা হত)। এই বিশ্বাসে প্রতি শনিবার মঙ্গলবার এবং অমাবস্যায় প্রচুর ভক্তের ভিড় হয়। ত্রৈলক্যনাথ নিঃসন্তান ছিলেন। তার অবর্তমানে গ্রামের চক্রবর্তী পরিবার মায়ের পুজো করে আসেছে।
প্রায় দেড়শ বছরেরও বেশি সময় ধরে একইভাবে মা এখানে পূজিত হয়ে আসছেন। একই মন্দিরের মধ্যে তিনটি কালীমূর্তি পুজো করা হয়। তিনটি মূর্তির মধ্যে মাঝে থাকেন বড়মা। এই কালী মূর্তির উচ্চতা প্রায় ২৬ ফুট। বাম পাশে থাকেন ট্যাবা কালী, ডান দিকে থাকে মা বিশ্বেশ্বরী। তাদের উচ্চতা ১২ ফুট। কালীপুজোর রাতে একজন তান্ত্রিক ও তিনজন পুরোহিত পুজো করেন। সারাবছর মন্দিরে মা কালীর কাঠামো রেখে সেখানে নিত্য সেবা করা হয়। এই পুজোর চক্রবর্তী বংশের পূজো।
বর্তমানে বংশজ তথা মন্দিরের সেবায়েত সঞ্জয় চক্রবর্তী জানিয়েছেন, তাদের পূর্বপুরুষ এই পূজার প্রচলন শুরু করেন। কথিত আছে যিনি পুজো প্রথম শুরু করেন তিনি চোখে দেখতে পেতেন না। তাই সকলেই তাকে কানাকর্তা বলে ডাকতেন। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় কালীপুজোর দিন তিনি সমস্ত কিছু স্পষ্টভাবেই দেখতে পেতেন। দোনাইপুরের কালীপুজোর বিশেষত্ব হলো বিসর্জন। সেদিন পুজো চলাকালীন মায়ের কাছে দেওয়া আলতা ও সিঁদুর নিয়ে গ্রামের সকলে মাখেন। তারপর মন্দির লাগোয়া পুকুরে এক সময়ে তিনটি মূর্তি বিসর্জন করা হয়।






















