হিন্দোল দে, সত্যজিৎ বৈদ্য ও বিশ্বজিৎ দাস, কলকাতা: ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস মামলাতেও সিবিআই হাজিরা এড়ালেন অনুব্রত মণ্ডল। শনিবারের থেকেও বেশি অসুস্থ রয়েছেন তিনি, জানালেন বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতির আইনজীবী। সিজিও কমপ্লেক্সে পাঠানো হল ইমেল।
ফের গরহাজির:
শনিবার গরুপাচার মামলায় ষষ্ঠবার তলব করা হয়েছিল বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মন্ডলকে। নিজাম প্যালেসে হাজিরা দিতে বলা হয়েছিল তাঁকে। সেখানে যাননি। রবিবারও ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস মামলায় CGO কমপ্লেক্সে গেলেন না তিনি।
কী কারণ:
অনুব্রত মন্ডলের আইনজীবীর দাবি, শারীরিক অসুস্থতার কারণেই CBI দফতরে যেতে পারছেন না তিনি। ১৬ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর, শুক্রবার রাতে SSKM থেকে ছাড়া পান অনুব্রত মণ্ডল। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেতেই সিবিআইয়ের জোড়া তলব পান বীরভূমের তৃণমূল নেতা। তলব গিরে শনিবার বিকেল থেকেই টানটান নাটকীয় পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। শেষপর্যন্ত শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে হাজিরা এড়িয়ে গিয়েছেন তিনি। শনিবার গরহাজির হওয়ায় রবিবার তিনি আদৌও ভোট পরবর্তী হিংসার মামলায় সিবিআইয়ের তলবে হাজিরা দেবেন কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল।
কোন মামলায় তলব:
রাজ্যে ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস নিয়ে সিবিআই তদন্ত চলছে। ভোটের ফল বেরনোর পর বীরভূমের ইলামবাজারে এক বিজেপি কর্মীকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ ওঠে। সিবিআই সূত্রে দাবি, সেই মামলাতেই রবিবার দুপুর আড়াইটেয় CGO কমপ্লেক্সে হাজিরা দিতে বলা হয়েছিল অনুব্রতকে। রবিবার দুপুর ১২টায় বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতির চিনার পার্কের ফ্ল্যাটে পৌঁছন তাঁর আইনজীবী সঞ্জীব দাঁ। তিনি বলেন, 'অনুব্রত মন্ডলের বুকে প্রচণ্ড ব্যথা রয়েছে, দুটো আর্টারি ব্লকেজ, শ্বাসকষ্ট অনেক বেড়েছে, কালকের পর থেকে শরীর আরও খারাপ, সিবিআই এসে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সহযোগিতা করব। তৎপরতা তুঙ্গে ছিল CGO কমপ্লেক্সে। সূত্রের খবর, অনুব্রত মণ্ডলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রশ্নের তালিকা তৈরি করে রেখেছিলেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। কিন্তু নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও, CBI দফতরে আসেননি অনুব্রত। ইমেল মারফৎ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে অনুপস্থিতির কারণ।
তৃণমূল নেতা ফিরহাদ হাকিম বলেন, 'অনুব্রত মন্ডলের স্বাস্থ্য না কি জিজ্ঞাসাবাদ অগ্রাধিকার কোনটা।'
বিজেপির কটাক্ষ:
অনুব্রত মন্ডলের গরহাজিরা নিয়ে কটাক্ষ করেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, 'উনি তো দেশ ছেড়ে চলে যেতে পারবেন না, আজ হোক, কাল হোক সিবিআইয়ের কাছে যেতে হবে, এর আগে যাঁরা ভুবনেশ্বরে গেছিলেন তাঁরাও অনেক নাটক করেছিলেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত ওখানে গিয়ে ভাত খেয়ে আসতে হয়েছে, উনি অন্যায় না করে থাকলে কথা বলা উচিত, আর গন্ডগোল করে থাকলে নিশ্চয় একদিন না একদিন ওখানে যেতে হবে।'
এরপর কী পদক্ষেপ?
সিবিআই সূত্রে খবর, দিল্লিতে সদর দফতরের সঙ্গে কথা বলে এই বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: "রাজনীতির শুরুতে সবাই অনভিজ্ঞ থাকে", বঙ্গ বিজেপিতে এবার ‘অভিজ্ঞতা’ তরজা দিলীপ-সুকান্তর