ভা্সকর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর : এবার পৌষ মেলার ভার্চুয়াল উদ্বোধন (Poush Mela to be Virtually Inaugurated) করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। রবিবার সকাল ১১টা নাগাদ মেলার উদ্বোধন হবে। চলবে বৃহস্পতিবার ২৮ তারিখ পর্যন্ত। উদ্বোধনে উপস্থিত থাকবেন মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা, ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখ, জেলার দুই সাংসদ, বিধায়ক, বিশ্বভারতীর প্রতিনিধি-সহ অন্যরা। জেলা শাসক বিধান রায় জানান, মুখ্যমন্ত্রী ফোনের মাধ্যমে মেলা উদ্বোধনের পাশাপাশি তাঁর বক্তব্য রাখবেন।
এদিকে মেলা ঘিরে প্রস্তুতি প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে। এবার ১২০০-র বেশি স্টল আসছে। কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এবারই প্রথম বিশ্বভারতীর মাঠে পৌষ মেলা করছে রাজ্য সরকার।
দীর্ঘ টালবাহানার প্রায় তিন বছর পর শান্তিনিকেতনের পূর্বপল্লির মাঠে বসতে চলেছে ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলা। ২০১৯ সালে শেষ বার শান্তিনিকেতনের পূর্বপল্লির মাঠে হয়েছিল ঐতিহ্যবাহী পৌষ মেলা। তারপর থেকে আর হয়নি মেলা ৷ তবে বোলপুর ডাকবাংলো মাঠে ২০২১ ও '২২ সালে বিকল্প পৌষ মেলা করেছিল রাজ্য সরকার।
এবার উপাচার্য হিসাবে বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর মেয়াদ শেষ হতেই সকলে মনে করেছিল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ পৌষ মেলা করবেন ৷ কিন্তু, তা করেননি ৷ এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকার মেলা করার জন্য বিশ্বভারতীর কাছে পৌষ মেলার মাঠ চেয়ে আবেদন করে। দীর্ঘ টালবাহানার পর মাঠ দেয় বিশ্বভারতী। অর্থাৎ, ২০১৯ সালের পর পূর্বপল্লির মাঠে হচ্ছে পৌষ মেলা। তবে, এই মেলার আয়োজনে রাজ্য সরকার ৷ এদিকে মেলার প্লট বুকিং নিয়ে এবার ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে ৷ ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভের জেরে প্রথমে বন্ধও হয়ে যায় প্লট বুকিংয়ের অফিস ৷ পরে অবশ্য প্লট বুকিং শুরু হয়।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালে কোভিড পরিস্থিতির জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল মেলা। তবে, এরপর থেকেই তৎকালীন বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর সঙ্গে শুরু হয় রাজ্য সরকারের সংঘাত। সংঘাত এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে তাঁর একাধিক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সরব হয় তৃণমূল। এমনকী, পড়ুয়া, আশ্রমিক, প্রাক্তনীরাও। তাই ২০২১ ও ২০২২ সালে পূর্বপল্লির মাঠে পৌষ মেলা বন্ধ করে দেন বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। যা নিয়ে নিন্দার ঝড় ওঠে সর্বত্র। তবে, বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চ ও বোলপুর পৌরসভা ওই দুই বছর ডাকবাংলো মাঠে বিকল্প মেলার আয়োজন করেছিল ৷
পৌষ মেলা (Poush Mela) আয়োজিত না হলেও রীতি মেনে পৌষ উৎসবের (Poush Utsav) আয়োজন করা হয় বিশ্বভারতীতে (Visva-Bharati University)। ভোরে বৈতালিকের পর সকালে ব্রহ্ম উপাসনা হয় ছাতিমতলায়। উপাসনায় অংশ নেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী (Vidyut Chakraborty)। উপস্থিত ছিলেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য অধ্যাপক ও ছাত্রছাত্রীরা। তিনদিন ধরে চলে পৌষ উৎসব।
শান্তিনিকেতনে পৌষ উৎসবকে কেন্দ্র করে ২৩ ডিসেম্বর থেকে পূর্বপল্লির মাঠে শুরু হয় পৌষমেলা ৷ ঐতিহ্যবাহী এই মেলার টানে লাল মাটির দেশে ভিড় জমান দেশ, বিদেশের পর্যটকরা। পসরা বসে রকমারি জিনিসের। কিন্তু ২০২১ ও ২০২২ সালে বন্ধ করে দেওয়া হয় পৌষমেলা।