আবীর ইসলাম, বীরভূম: শিক্ষক দিবসে বিশ্বভারতীর উপাচার্যকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে গেলেন আন্দোলনরত পড়ুয়ারা। দেখা করেননি উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। তাঁর বাড়ির সামনে পুষ্পস্তবক রেখে ফিরে আসেন পড়ুয়ারা। এর আগে গতকাল রবীন্দ্রসঙ্গীত গেয়ে প্রতিবাদ মিছিল করেন তাঁরা। রাতে ধর্না মঞ্চ থেকে হেঁয়ে গান গাইতে গাইতে তাঁরা উপাচার্যর বাড়ির সামনে যান। হাত বেঁধে মিছিল করে প্রতিবাদ জানান আন্দোলনরত পড়ুয়ারা। 


হাইকোর্টের নির্দেশে স্থান পরিবর্তন হলেও আন্দোলন অব্যাহত বিশ্বভারতীতে। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বাড়ির গেটে দুধ-কলা রেখে এসেছিলেন আন্দোলনরত পড়ুয়ারা।  এবার ফুল। সেবার তাঁদের দাবি ছিল, উপাচার্য জানিয়েছিলেন, বাড়ি থেকে বেরোতে না পারায় তাঁর খাওয়াদাওয়ায় সমস্যা হচ্ছে। তাই মানবিক কারণে এবার থেকে তিন বেলা উপাচার্যর বাড়ির সামনে খাবার রেখে আসা হবে বলে আন্দোলনরত পড়ুয়ারা জানিয়েছেন।


তিন পড়ুয়াকে বরখাস্তের প্রতিবাদে টানা পাঁচদিন ধরে বিশ্বভারতীর উপাচার্যর বাড়ি ঘেরাও করে রাখেন পড়ুয়ারা। আজ সকালে কংগ্রেসের তরফে বকুলতলা মোড়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হবে। এর আগে প্রধানমন্ত্রীর কাছে নিজের নিরাপত্তা চেয়ে চিঠি লেখেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। জেলা পুলিশের কাছেও ই-মেল করে নিরাপত্তা চেয়েছিলেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য।


গত ৩ সেপ্টেম্বর বিশ্বভারতীর অচলাবস্থা কাটাতে হস্তক্ষেপ করে কলকাতা হাইকোর্ট। ৩ পড়ুয়াকে বহিষ্কারের প্রতিবাদে, উপাচার্যের বাড়ির সামনে মঞ্চ বেঁধে অবস্থানে বসেছিলেন ছাত্র-ছাত্রীদের একাংশ। সেই প্রেক্ষিতেই ৩ সেপ্টেম্বর কড়া নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট।



বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫০ মিটারের মধ্যে কোনওরকম বিক্ষোভ করা যাবে না। আজ দুপুর ৩টে থেকে প্রশাসনিক ভবন, উপাচার্যের বাসস্থান সহ যেখানে যত তালা ঝোলানো ছিল, সব তালা ভেঙে দিতে হবে শান্তিনিকেতন থানাকে। আজ বিশ্বভারতীকাণ্ডে অন্তর্বর্তী এই নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। আদালত সূত্রে খবর, হাইকোর্ট নির্দেশে বলেছে, বিশ্বভারতীর কোনও কর্মীকে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশে বাধা দেওয়া যাবে না।



পাশাপাশি জানানো হয় উপাচার্যের নিরাপত্তার জন্য ৩ জন পুলিশ কর্মীকে নিয়োগ করতে হবে। চালু করতে হবে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরের সমস্ত সিসি ক্যামেরা। কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা নিয়ে শান্তিনিকেতন থানাকে আদালতে রিপোর্ট জমা দিতে বলেছে হাইকোর্ট। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় যাতে স্বাভাবিকভাবে চলে সেদিকে প্রশাসনকে কড়া নজর রাখারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এদিন অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশে কলকাতা হাইকোর্টের মন্তব্য, 'এটা ছাত্র ইউনিয়ন, ট্রেড ইউনিয়ন নয়।’