মনোজ বন্দোপাধ্যায়, বীরভূম: টাকার (money) জন্যই খুন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়াকে (engineering student), ইলামবাজারের (ilambazar) হাড় হিম করা ঘটনায় জেনেছে পুলিশ। নিহত ছাত্র সৈয়দ সালাউদ্দিনের 'বন্ধু' শেখ সলমনকে এর মধ্যেই গ্রেফতার (arrest) করা হয়েছে। পুলিশের দাবি, তাঁকে জেরা করে রহস্য়ের কিনারা করা গিয়েছে। 


কী জানা গেল?
শেখ সলমন ও সৈয়দ সালাউদ্দিন-দুজনেরই বাড়ি খয়রাশোলে। দুজনে অনেকদিনের বন্ধু বলেও জেনেছে পুলিশ। ধৃত সলমনের একটি ইটভাটা রয়েছে। সেই ইটভাটার কারণেই বেশ কিছু ধারদেনা হয়ে গিয়েছিল সলমনের। তার জেরেই খুন, দাবি পুলিশের। প্রাথমিক ভাবে উঠে এসেছে, সৈয়দ সালাউদ্দিনকে ডেকে পাঠিয়েছিল শেখ সলমন। দিনভর শান্তিনিকেতনে ঘোরাঘুরি করেন দুজন। মদ্যপানও করেন। এর পর বছর উনিশের ওই ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়া অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে জঙ্গলে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকেই তাঁর বাবার মোবাইলে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করা হয়। গত কাল রাত ১২টা নাগাদ ৩০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ চেয়ে প্রথম ফোন আসে, জানাচ্ছে নিহতের পরিবার। নিহতের মোবাইল থেকেই ফোন করে হুমকি দেওয়া হয়, আরও দাবি তাঁদের। সঙ্গে বলা হয়, পুলিশকে এই নিয়ে কিছু জানালে ছেলেকে ফিরে পাওয়া যাবে না। এর পরই মল্লারপুর থানায় জানান সালাউদ্দিনের বাবা। তার পর দ্বিতীয় ফোনটি আসে। পুলিশের ধারণা, সলমন সম্ভবত বুঝে গিয়েছিলেন ফোনের টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করে তাঁর হদিশ পেয়ে যাবে পুলিশ। তার পরেই পড়ুয়াকে খুনের সিদ্ধান্ত নেয় সে, জানাচ্ছেন তদন্তকারীরা। খোদ বীরভূম জেলা পুলিশের সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী তাকে জেরা করেছেন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই ইলামবাজার জঙ্গল থেকে উদ্ধার হয় সালাউদ্দিনের দেহ।


কী বলছে পুলিশ?
ঘটনাস্থলে পৌঁছচ্ছেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত সলমন স্বীকার করেছেন ইটভাটায় প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা দেনা হয়েছিল তার। সেটা চোকাতেই সালাউদ্দিনের বাবাকে ফোন করে ৩০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ চেয়েছিল। কিন্তু যখন বুঝতে পারে যে টাকা পাওয়ার সম্ভাবনা নেই, বরং পুলিশ তাকে ধরতে পারে, তখনই খুন করে 'বন্ধুকে'। এসপি-র বক্তব্য, খুনের জন্য চাকু অবশ্য আগেই কিনে রেখেছিল সলমন। তদন্তে নেমে অবশ্য আরও একটা বিষয় জেনেছে পুলিশ। ঘটনার ১৫-২০ দিন আগেও এক বার সালাউদ্দিনের থেকে ২-৩ লক্ষ টাকা ধার চেয়েছিল সলমন। কিন্তু পায়নি। তার পর গত সপ্তাহেও এক বার পড়ুয়াকে খুনের চেষ্টা করে, দাবি পুলিশের। যদিও সে বার সালাউদ্দিন আসেননি। শনিবার আর বাঁচতে পারলেন না। হালেই কার্যত এক রকম ভাবে পরিচিতের হাতে খুন হতে হয়েছিল বাগুইআটির দুই কিশোর পড়ুয়াকে। ইলামবাজারের ঘটনাতেও কার্যত সেই ছায়াই দেখছেন অনেকে।


আরও পড়ুন:সিবিআই-ইডির সঙ্গে 'কুকুরের' তুলনা, বিতর্কে জড়ালেন হাসনের তৃণমূল বিধায়ক