হিন্দোল দে, ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী ও শিবাশিস মৌলিক : আজ বিজেপির (BJP) নবান্ন অভিযান (Nabanna Abhijan)। দিলীপ ঘোষ, সুকান্ত মজুমদার ও শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে তিন দিক থেকে মিছিল আসবে নবান্নর দিকে। পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রস্তুত পুলিশও। বিভিন্ন জায়গায় থাকছে ত্রিস্তরীয় ব্যারিকেড, জলকামান, কাঁদানে গ্যাস। মোতায়েন থাকবেন প্রায় ২ হাজার পুলিশকর্মী।


দুর্নীতি-ইস্যুতে মঙ্গলবার বিজেপির নবান্ন অভিযান। পঞ্চায়েত ভোটের আগে এই কর্মসূচিতে ভর করে পালে হাওয়া টানতে মরিয়া গেরুয়া শিবির। মঙ্গলবার তিন দিক থেকে বিজেপির মিছিল আসবে নবান্নের দিকে। কলেজ স্কোয়ার থেকে আসা মিছিলের নেতৃত্বে থাকবেন দিলীপ ঘোষ। হাওড়া ময়দান থেকে আসা মিছিলের সামনে থাকবেন সুকান্ত মজুমদার। আর  শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে মিছিল আসবে সাঁতরাগাছি থেকে। বিজেপি যখন মিছিল করে নবান্ন অবধি পৌঁছোতে মরিয়া, তখন পুলিশও মিছিল আটকাতে সবরকম ব্যবস্থা নিচ্ছে। বিভিন্ন জায়গায় রাখা হচ্ছে বাঁশ, গার্ডরেল, অ্যালুমিনিয়ামের ত্রিস্তরীয় ব্যারিকেড। 
 
দিলীপ ঘোষের নেতৃত্বে প্রথম মিছিল, কলেজ স্কোয়ার থেকে M G রোড, সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ, হাওড়া ব্রিজ অ্যাপ্রোচ রোড হয়ে এগোনোর কথা। পুলিশ সূত্রে খবর, এই মিছিলকে আটকাতে, হাওড়া ব্রিজে ওঠার মুখে থাকবে ত্রিস্তরীয় ব্যারিকেড। হাওড়া ময়দানের দিক থেকে সুকান্ত মজুমদারের নেতৃত্বে আসা মিছিলকে আটকাতে সেখানেই ব্যারিকেড রাখা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে যে মিছিল সাঁতরাগাছি থেকে আসবে সাঁতরাগাছি ব্রিজের মুখে ব্যারিকেড দিয়ে, তাকে আটকানো হবে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। পুলিশ সূত্রে খবর, দ্বিতীয় হুগলি সেতুর ৮টি র‍্যাম্পের প্রত্যেকটিতে মোতায়েন থাকবে পুলিশ।


বিজেপির নবান্ন অভিযানের জন্য, মঙ্গলবার কলকাতা পুলিশের প্রায় দু’হাজার কর্মী মোতায়েন থাকবেন। ১৮ জন ডেপুটি কমিশনার, ৩২ জন অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার, ৬২ জন ইন্সপেক্টর , ৫ জন জয়েন্ট পুলিশ কমিশনার, স্পেশাল পুলিশ কমিশনার-সহ, একাধিক উচ্চপদস্থ পুলিশকর্তা দায়িত্বে থাকবেন। এছাড়া ৫টি জল কামান, দু’টি বজ্র এবং কাঁদানে গ্যাসও প্রস্তুত রাখা হবে। ড্রোনের মাধ্যমে চলবে নজরদারি।


মঙ্গলবার বিজেপির নবান্ন অভিযান। পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রস্তুত পুলিশ। এপ্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ১০০ জন আইপিএসকে নামানো হয়েছে আটকানোর জন্য। আমরা শান্তিপূর্ণ করব, পুলিশকেও সেই খেয়াল রাখতে হবে।


অবরুদ্ধ হতে পারে কোন কোন রাস্তা ?


মঙ্গলবার কাজের দিন। বিজেপির কলেজ স্কোয়ারের কর্মসূচি ঘিরে যানজটের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। তাই উত্তর শহরতলি থেকে, সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ দিয়ে আসা, হাওড়ামুখী গাড়িগুলিকে মহাত্মা গাঁধী রোডের বদলে বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিট, স্ট্র্যান্ড রোড দিয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হবে। কলকাতা পুলিশের তরফে জারি করা ট্রাফিক সংক্রান্ত নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, কলেজ স্ট্রিট, এম জি রোড, স্ট্র্যান্ড রোড, হাওড়া ব্রিজ এবং দ্বিতীয় হুগলি সেতু বন্ধ থাকার সময় বিভিন্ন রাস্তা দিয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হবে গাড়ির অভিমুখ। সকাল ১১ থেকে বেলা ৩টের মধ্যে, কলেজ স্ট্রিটে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে। ফলে ওই সময় লেনিন সরণি, মৌলালি, এজেসি বোস রোড ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বেলা ১২টা থেকে বিজেপির কর্মসূচি শেষ না হওয়া অবধি, এম জি রোডের বদলে এপিসি রোড, এজেসি বোস রোড ব্যবহার করা যাবে। ধরা যাবে শিয়ালদা ফ্লাইওভার, আমহার্স্ট স্ট্রিট, বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিট কিংবা সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ। একই সময়ে স্ট্র্যান্ড রোডের বদলে কিংসওয়ে, আর আর অ্যাভিনিউ, সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ দিয়ে গাড়ি চলাচল করতে পারে। নয় তো কিংসওয়ে, আর আর অ্যাভিনিউ হয়ে ধরা যেতে পারে রেড রোড। সকাল ৮টা থেকে কর্মসূচি শেষ না হওয়া অবধি, দ্বিতীয় হুগলি ব্রিজ ব্যবহার না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে নিত্যযাত্রীদের। সেক্ষেত্রে এজেসি বোস রোড, এক্সাইড মোড়, জওহরলাল নেহরু রোড, সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ ব্যবহার করা যাবে।