রঞ্জিত সাউ, কলকাতা: মোমিনপুরে (Mominpore) গোষ্ঠী সংঘর্ষের ঘটনায় উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতি। সেই আবহে সংখ্যালঘুর প্রশ্ন উস্কে দিলেন বিজেপি-র (BJP) সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। বাংলায় প্রকৃত সংখ্যালঘু কারা, প্রশ্ন তুললেন তিনি। তৃণমূল (TMC) এবং সিপিএম (CPM), দুই দলকেই কাঠগড়ায় তুললেন দিলীপ। 


সংখ্যালঘু প্রশ্ন উস্কে দিলেন দিলীপ ঘোষ


মঙ্গলবার সকালে নিয়মমাফিক ইকোপার্কে প্রাতর্ভ্রমণে বোরোন দিলীপ। সেখানেই সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বলেন, ‘‘রাজ্যে প্রকৃত সংখ্যালঘু কারা? তাঁদের কি ধর্মাচরণের অধিকার আছে? ভারতের আট রাজ্যে হিন্দুরা সংখ্যালঘু। সেই নিয়ে রিট পিটিশন জমা পড়েছে। কিন্তু মজার ব্য়াপার হল, দেশভাগের পর থেকে বাংলায় বামেরা এবং তৃণমূল এই বিষয়টিতে উৎসাহ জুগিয়ে আসছে।’’


মোমিনপুরের ঘটনার পর রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী নামানোর দাবি জানিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং রাজ্যপাল লা গণেশনকে চিঠি দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তা নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে দিলীপ বলেন, ‘‘বুদ্ধদেববাবু মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন তসলিমা নাসরিনকে দেশ ছাড়া করার দাবিতে কী করেছিল, সবাই জানে। হঠাৎ কলকাতা অচল হয়ে গেল। তখন সেনা নামানো হয়েছিল। কলকাতা পুলিশের মনোবল আগেই ভেঙে দেওয়া হয়েছে। তারা কেন ঝুঁকি নেবে? তাদের কিছু হলে কে দেখবে?’’ 


আরও পড়ুন: Manik Bhattacharya Arrested : রাতভর জিজ্ঞাসাবাদ, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এবার গ্রেফতার মানিক ভট্টাচার্য


মোমিনপুরের ঘটনার পর সোমবার দিনভর উত্তপ্ত ছিল রাজ্য রাজনীতি। রাজ্য বিজেপি-র সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে আটকানোয় ফুঁসে ওঠে বিজেপি। এ দিন দিলীপের কথাতেও তাঁর আঁচ ধরা পড়ে। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের রাজ্য সভাপতিকে ২০ কিলোমিটার দূরে আটকে রাখা হল। যেখানে উত্তেজনা, সেখানে ১৪৪ ধারা। কেন বিজেপি-কে এত ভয়? কারণ বিজেপি একমাত্র শক্তি, যারা এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে।’’ 


রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন দিলীপ। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এই প্রথম নয়। তৃণমূল জমানায় থানায় ঢুকে পুলিশ পেটানো, ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে। কলকাতার বুকে পুলিশ খুন হয়েছে। অভিযুক্তদের বিহারে লুকিয়ে রাখা হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার দু’মাসের মধ্যে ভবানীপুর থানায় দুষ্কৃতীদের ছাড়িয়ে নেওয়া হয়েছে। তার পর পুলিশের আর হিম্মত আছে কাউকে ধরার? কালিয়াচক থানায় কি হয়েছে? থানায় আগুন লাগিয়ে নথি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। মহিলা পুলিশ কর্মীদের শ্লীলতাহানি করা হয়েছিল। সারা দেশের সমস্ত উগ্রপন্থী এখানে আশ্রয় নেয়। পঞ্জাবের গ্যাংস্টার এখানে সাপুরজিতে লুকিয়ে ছিল। বাংলার পুলিশ তাদের জন্য ফ্রেন্ডলি এবং সরকার তাদের বিরুদ্ধে কিছু করতে চায় না।’’ 


তৃণমূলকে তীব্র আক্রমণ দিলীপের


তৃণমূলের মদতেই রাজ্যে দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য বেড়েছে বলেও কার্যত অভিযোগ করেন দিলীপ। তাঁর কথায়, ‘‘তৃণমূলের ঝান্ডা ধরে আপনি যা ইচ্ছা করতে পারেন। কে বাধা দেবে? সবটাই পুলিশের সামনে হয়। পুলিশ সব জানে। হিন্দুদের পুজোর স্থানে গায়ের জোরে ওরা পতাকা লাগিয়ে দিয়ে যাচ্ছে। খোলার চেষ্টা করলেই ধুন্ধুমার বাধাচ্ছে। সবাই সব জানে।’’