কলকাতা: ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজে বউবাজারে (Bowbazar) বিপর্যয়। যা নিয়ে অব্যাহত তরজা। পরপর বিপত্তির জন্য তৃণমূলকেই ফের কাঠগড়ায় তুলেছেন দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। অর্বাচিনের মতো কথা, পাল্টা জবাব তৃণমূলের। এই ঘটনায় একযোগে কেন্দ্র ও রাজ্যকেই দায়ী করেছে সিপিএম।
আড়াই বছরের ব্যবধানে দু’বার বিপর্যয়: মাত্র আড়াই বছরের ব্যবধানে দু’বার বিপর্যয়। বউবাজারে একই জায়গায়, ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর (East-West Metro) নির্মাণে বারবার বিপত্তি। ২০১৯-এর সেপ্টেম্বরের পর, এবারও দুর্গাপিটুরি লেনে (Durga Pituri Lane) পর পর বাড়িতে ফাটল। রাতারাতি ঘর ছাড়া বহু পরিবার।
ভিটে ছেড়ে হোটেলে ঠাঁই নিতে বাধ্য হয়েছেন ১৪১ জন। এই পরিস্থিতিতে একটাই প্রশ্ন সকলের মনে ঘুরপাক খাচ্ছে। কেন বারবার একই জায়গায় ঘটছে বিপত্তি? এই বিপত্তির দায় কার? রুট বদলের জেরেই কি বারবার বিপর্যয়?
কী ছিল প্রাথমিক প্ল্যান? ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর জন্য প্রাথমিকভাবে যে রুট নির্ধারিত হয়, সেখানে বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিটের নীচ দিয়ে সরাসরি শিয়ালদহ ও লালদিঘিকে জোড়বার কথা ছিল। ২০০৮-এর ২৭ অক্টোবর - সল্টলেক সেক্টর ফাইভ থেকে শিয়ালদহ, বউবাজার, লালদিঘি হয়ে হাওড়া ময়দান পর্যন্ত প্রস্তাবিত সেই রুট অনুমোদন পায়। কিন্তু সেন্ট্রালের কাছে নতুন স্টেশন করা নিয়ে জমি জট তৈরি হয়। ২০১২ সাল থেকে কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে এই নিয়ে চিঠি-চাপাটি চলে।
পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত: এরই মধ্যে সেক্টর ফাইভ থেকে শিয়ালদা অবধি হয়ে মেট্রোর কাজ থমকে যায়। ২০১৪ সালের পরে মেট্রোর রুট পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। লালদিঘি থেকে এসপ্ল্যানেডে নিয়ে যাওয়া হয় মেট্রোর সুড়ঙ্গ। সেখান থেকে সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার হয়ে বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিট।
এই প্রেক্ষাপটে মেট্রো বিপর্যয়ের জন্য রবিবারও রাজ্যের ঘাড়েই পুরোপুরি দায় চাপিয়েছে বিজেপি।
বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষের কথায়, মেয়র আগে নিজে দেখুন, মুখ্যমন্ত্রীই তো রুট ঘুরিয়েছেন, তারজন্যই বারবার সমস্যা, গায়ের জোর করবেন, আগে ওদের ক্ষমা চাওয়া উচিত। সবমিলিয়ে বউবাজার-বিপর্যয়ে অব্যাহত তরজায় রাজ্যের ওপরেই দায় চাপালেন দিলীপ ঘোষ।
অন্যদিকে তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায়ের কথায়, দিলীপ অর্বাচিনের মতো কথা বলে, এটা টেকনিক্যাল বিষয়, অত্যাধুনিক পদ্ধতি নেওয়া হয়েছে, রুটের বিষয়টি মেট্রো দেখেছে, দিলীপ একথা বলে হাওয়ায় ভেসে থাকতে চায়।
দুই সরকারকেই দায় বামেদের: বউবাজারে বারবার বিপত্তের নেপথ্যে কেন্দ্র ও রাজ্য, দুই সরকারকেই দায়ী করেছে বামেরা। সিপিএম নেতা তন্ময় ভট্টাচার্যের দাবি, পরিকল্পনার অভাব, রাজ্য এক পয়সাও দেয়নি, কোনও দায় নেয়নি, তারজন্যই মানুষ এই অবস্থায় পড়েছে, কেন্দ্র-রাজ্য দু’পক্ষই দায়ী।
তবে ভুক্তভোগী মানুষগুলো এত জটিলতায় পড়তে চান না। তাঁদের একটাই প্রশ্ন, কবে ফিরতে পারবেন নিজের বাড়িতে?