সৌভিক মজুমদার, সঞ্চয়ন মিত্র, সৌমেন চক্রবর্তী, কলকাতা: হাওড়ার পাঁচলায় গাড়ি থেকে টাকা উদ্ধারের ঘটনায় গ্রেফতারির ১৭ দিন পর ঝাড়খণ্ডের ৩ বিধায়ক সহ ৫ জনের অন্তর্বর্তী জামিন মঞ্জুর করল কলকাতা হাইকোর্ট।
৫ জনকে শর্তসাপেক্ষে ৩ মাসের অন্তর্বর্তী জামিন দিল ডিভিশন বেঞ্চ। নিয়োগ-দুর্নীতি মামলায় কোটি কোটি টাকা উদ্ধারের ঘটনা ঘিরে রাজ্যে যখন তোলপাড় চলছিল, তার মধ্যেই গত ৩০ জুলাই হাওড়ার পাঁচলায় কালো রঙের এই SUV থেকে উদ্ধার হয় প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা! রাজ্য পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন।
গাড়িতে থাকা ঝাড়খণ্ডের ৩ কংগ্রেস বিধায়ক - ইরফান আনসারি, রাজেশ কাচ্ছাপ ও নমন বিক্সল ও তাঁদের ২ সঙ্গীকেও গ্রেফতার করে পুলিশ। বিজেপির বিরুদ্ধে ৪ বিধায়ককে কাজে লাগিয়ে ঝাড়খণ্ডে জেএমএম এর সঙ্গে তাদের জোট সরকার ফেলার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করে কংগ্রেস।
সিআইডি তদন্তেও একই অভিযোগ উঠে আসে। বুধবার কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি ও অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে অভিযুক্তপক্ষের আইনজীবী বলেন, টাকা উদ্ধার ধর্তব্যযোগ্য অপরাধ নয়। তার জন্য হেফাজতে নেওয়ার প্রয়োজন নেই। অভিযুক্তদের একজনের ৩টি পেট্রোল পাম্প আছে। একজন ব্যবসায়ী। তাঁদের কাছে এই টাকা থাকতেই পারে।
বিধায়কদের গাড়ি থেকে টাকা উদ্ধারের ঘটনায় ঘোড়া কেনাবেচার অভিযোগ তুলে প্রথম এফআইআর করেছিলেন যিনি, ঝাড়খণ্ডের বারমো’র সেই কংগ্রেস বিধায়ক কুমার জয়মঙ্গলের আইনজীবী বলেন, আমার মক্কেল একজন বিধায়ক। তাঁকে অর্থের বিনিময়ে দল পরিবর্তনের কথা বলা হয়। আমি জামিনের বিরোধিতা করছি।
সরকার আইনজীবীও বলেন, তদন্ত প্রাথমিক পর্যায়ে আছে। ধৃতরা প্রবাবশালী। তাঁদের জামিন দিলে তদন্ত ব্যাহত হবে। তাছাড়া আদিবাসী উৎসবের জন্য শাড়ি কেনার কথা বললেও, তাঁদের কাছ থেকে কোনো শাড়ি মেলেনি। বরং কিছু জাল বিল উদ্ধার হয়েছে।
বিচারপতি বলেন, অভিযোগকারী কংগ্রেস বিধায়ক কুমার জয়মঙ্গলের সঙ্গে অভিযুক্তদের কথোপকথনের কোনও ট্র্যাকিং লিস্টের উল্লেখ এখনও পর্যন্ত তদন্তে নেই।
কুমার জয়মঙ্গলের সঙ্গে ধৃত ৩ বিধায়কের কথা হয়েছিল কিনা, সেই সংক্রান্ত কোনও বিবৃতি, হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ বা ইলেকট্রনিক নথির উল্লেখ ১৫ দিনের তদন্তে কেস ডায়েরিতে উল্লেখ করা হয়নি।
এরপরই ধৃত ৩ বিধায়ক সহ ৫ জনের জামিন মঞ্জুর করেন বিচারপতি। রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ''আদালতের রায় সবাইকে মানতে হবে। আমরা এবিষয়ে চিন্তিত নই। ঝাড়খণ্ডে আজ না হয় কাল বিজেপির সরকার হবে।'' এই মামলার পরবর্তী শুনানি ১০ নভেম্বর।
শর্ত সাপেক্ষে ৩ মাসের অন্তর্বতী জামিন মঞ্জুর
১) ১ লাখ টাকা বন্ড
২) কলকাতা ছেড়ে যেতে পারবে না।
৩) তাদ্দন্তে সহযোগিতা করতে হবে।
৪) সপ্তাহে ১ দিন তদন্তকারী অফিসারের সাথে দেখা করতে হবে।
৫) মামলার বিচার হবে MLA MP কোর্টে