সৌভিক মজুমদার, কলকাতা : শিক্ষক বদলির মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ। মামলার শুনানিতে উঠল অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গ। ‘অর্পিতার সঙ্গে শান্তার কোনও কি যোগাযোগ আছে, এত ঘনঘন বদলির সুপারিশপত্র পাচ্ছেন কী করে?’, ৫ বছরে ২ বার বদলির অভিযোগে মামলায় মন্তব্য বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার হয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ অর্পিতা চট্টোপাধ্যায়। তাঁর একাধিক ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছে টাকার পাহাড়।
ঠিক কী হয়েছে
২০১৬ সালে শিলিগুড়ি শ্রীগুরু বিদ্যামন্দির হাইস্কুলে সহ শিক্ষিকা হিসেবে যোগ দেন শান্তা মণ্ডল। আর ২০১৯ সালে প্রধান শিক্ষিকার পদের জন্য পরীক্ষা দিয়ে পাস করে বীরপাড়া গার্লস হাইস্কুলে প্রধান শিক্ষিকার পদে যোগদান করেন। কিন্তু এক বছর পরেই শিলিগুড়ি অমিয় পাল ইন্সটিটিউটে যোগদানের সুপারিশ পান। যে সুপারিশ করে শিক্ষা দফতর। কিন্তু শ্রীগুরু বিদ্যামন্দির হাইস্কুলে থাকতে চাই বলে আবেদন জানান শান্তা মণ্ডল। তারপরই তিন সপ্তাহ আগে শ্রীগুরু বিদ্যামন্দির হাইস্কুলে যোগ দেন তিনি।
যে ঘটনার পরই কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন শ্রীগুরু বিদ্যামন্দিরের সহকারী প্রধান শিক্ষক প্রসূন সুন্দর তরফদার। যে মামলার শুনানিতে শান্তা মণ্ডলকে শ্রীগুরু বিদ্যামন্দির স্কুলে দায়িত্ব সামলাতে বলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। পাশাপাশি নির্দেশ দেন সিবিআই তদন্তের। পাশাপাশি রায়দানের মাঝে তিনি টেনে আনেন অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গ।
ঠিক কেন সিবিআই তদন্তের নির্দেশ
প্রসঙ্গত রাজ্য সরকারের উৎসশ্রী পোর্টালের মাধ্যমে বদলের জন্য আবেদন করতে হয় শিক্ষকদের। পাশাপাশি বদলের জন্য সুপারিশ করতে হয় শিক্ষা দফতরকে। ৫ বছরের মধ্যে একজন শিক্ষিকা কীভাবে সুপারিশ পাচ্ছেন, সেটাই হয়ে ওঠে মামলার ক্ষেত্রে বিবেচ্য বিষয়। কারণ, কলকাতা হাইকোর্টে শিক্ষকদের বদলি সংক্রান্ত একাধিক মামলা আগে হয়েছে। যেখানে শারীরিক অসুস্থতা থাকলেও বদলির নিয়মের ক্ষেত্রে সময়সীমা না অতিক্রান্ত হওয়ায় অনেক শিক্ষককেই দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে স্কুলে যেতে হয়। যা নিয়ে শুনানি রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় আগে বলেছিলেন 'গোলি মারো রুল কো'।
বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ছাড়াও বিচারপতি রাজশেখর মান্থাও আগে উষ্ণাপ্রকাশ করেছিলেন গোটা বিষয় নিয়ে। যার পরই কলকাতা হাইকোর্ট এসএসি শিক্ষক বদলির নিয়মে পাঁচ বছরের সময়সীমার নিয়ম বদলে দেয়। কিন্তু কীভাবে একজন শারীরিকভাবে সুস্থ শিক্ষিকা পাঁচ বছরের মধ্যে দুবার বদলের সুপারিশ পান, তা নিয়েই ক্ষোভপ্রকাশ করেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। যারপরই তিনি বদলির নেপথ্যে বিশাল প্রভাব রয়েছে’ মন্তব্য করে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন- টিএমসিপি-এসএফআইয়ের সংঘাতে উত্তপ্ত প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়