কলকাতা: প্রাপ্য বকেয়া নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে টানাপোড়েন চলছেই। সেই আবহেই ১০০ দিনের কাজের টাকায় দুর্নীতির অভিযোগও রয়েছে। সেই আবহেই ভুয়ো জব কার্ড খুজে বের করতে, চার সদস্যের কমিটি গঠন করা হল। কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম ওই কমিটি গঠন করে দিয়েছেন। কেন্দ্রীয় সরকার, রাজ্য সরকার, CAG এবং অ্যাকাউন্ট জেনারেলের একজন করে প্রতিনিধি নিয়ে গঠিত ওই কমিটি বিষয়টি তদন্ত করে দেখবে। পাশাপাশি ন্যায্য প্রাপকদের টাকা মিটিয়ে দেওয়ার পক্ষে সওয়ালও করলেন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি শিবজ্ঞানম। (MGNREGA Funds)


বৃহস্পতিবার ১০০ দিনের কাজে দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে ওই কমিটি গঠন করেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি শিবজ্ঞানম। তিনি জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই দুর্নীতির যে টাকা উদ্ধার হয়েছে, তা সঠিক হাতে যাক। দুর্নীতির তদন্ত হবে, কিন্তু যারা ন্যায্য প্রাপক তাদের কি হবে? এই প্রশ্নও তোলেন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি শিবজ্ঞানম। তিনি বলেন, "কারা কাজ করেছেন, কারা ন্যায্য প্রাপক, সেই তালিকা রাজ্যের কাছে আছে। তাঁদের টাকা দিয়ে দেওয়া হোক। আদালত তাঁদের কাছে যাবে। তাঁদের প্রশাসনের কাছে যেতে হবে না।" (Calcutta High Court)


১০০ দিনের কাজ করেও টাকতা না পেয়ে তাঁকে ৩২৭ জন পোস্টকার্ড পাঠিয়েছেন, টাকা না পাওয়ার অভিযোগ জানিয়েছেন বলে বৃহস্পতিবার জানান হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি। শুধু তাই নয়, ১০০ দিনের প্রকল্পে কাজ চালু করতে কেন্দ্র এবং রাজ্যকে উদ্যোগী হতে হবে বলে জানান তিনি। এর পাল্টা কেন্দ্রের আইনজীবী বলেন, "দুর্নীতি হয়েছে বলে হলফনামায় জানিয়েছে রাজ্য। এখনও অনেক টাকা উদ্ধার হয়নি। ভুয়ো জবকার্ড দেখার দায়িত্ব রাজ্যের।" পুরুলিয়া-সহ বেশ কিছু জায়গায় বিপুল দুর্নীতির খোঁজ মিলেছে, আদালতের নির্দেশ পেলে তদন্ত করতে প্রস্তুত বলে জানায় CBI-ও। সব শুনে ওই কমিটি গড়েন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি শিবজ্ঞানম।


আরও পড়ুন: Suvendu Adhikari: রামমন্দির উদ্বোধনের দিনই ‘সম্প্রীতি মিছিল’ মমতার, কেন্দ্রীয় বাহিনীও মোতায়েন নয়, আদালতে শুভেন্দুর আর্জি খারিজ


১০০ দিনের কাজের বকেয়া টাকা নিয়ে কেন্দ্র এবং রাজ্যের মধ্যে দীর্ঘ দিন ধরেই সংঘাত চলছে। রাজ্যের তরফে হিসেব দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ কেন্দ্রের। যদিও রাজ্যের দাবি, তালিকা ধরে সব তথ্য পাঠানো হয়েছিল। তার পরও টাকা আটকে রাখা হয়েছে। ১০০ দিনের কাজের বকেয়া না মেটানোয় রাজ্যের বিজেপি নেতাদের ভূমিকা নিয়েও সরব হয়েছে তৃণমূল। নির্বাচনী ময়দানে লড়াইয়ে পেরে না উঠে,  গেরুয়া শিবিরের নেতারাই কেন্দ্রকে চিঠি লিখে বকেয়া আটকে রাখতে বলেন বলে অভিযোগ জোড়াফুল শিবিরের।  সেই নিয়ে একাধিক বার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্প্রতি দিল্লি গিয়ে বকেয়া টাকা নিয়ে বৈঠকও করেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে। এই টানাপোড়েনের মাঝে কাজ করেও প্রায় দু'বছর ধরে টাকা পাননি বহু মানুষ। তাঁদের নিয়ে দিল্লিতে ধর্নায় বসেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। এবার ন্যায্য প্রাপকদের টাকা মিটিয়ে দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করলেন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি শিবজ্ঞানমও।