কলকাতা: গরুপাচার মামলায় (Cattle Smuggling Case) এবার অনুব্রত মণ্ডল-ঘনিষ্ঠ বিদ্যুৎবরণ গায়েনের বোলপুরের কালিকাপুরের বাড়িতে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (CBI)-র হানা। বোলপুর পুরসভার গাড়ির খালাসি ছিলেন বিদ্যুৎ। ২০১১-র পালাবদলের পর তাঁর চাকরি পাকা হয়। সেই থেকে উত্থান বিদ্যুৎবরণের।


এ বার অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ বিদ্যুতের বাড়িতে সিবিআই


স্থানীয় সূত্রে দাবি, অনুব্রতকে বাবা বলে ডাকতেন বিদ্যুৎ। অনুব্রত তাঁকে একাধিক সংস্থার ডিরেক্টর বানিয়েছেন বলে সিবিআই সূত্রে দাবি। গরুপাচার মামলায় এবার সেই বিদ্যুৎবরণই সিবিআইয়ের নজরে। রবিবার দুপুরে তাঁর বাড়িতে পৌঁছন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা।


গোয়েন্দা সূত্রে জানা যাচ্ছে, দু'দিন আগে 'ভোলে ব্যোম' চালকলে সিবিআই-এর যে দল পৌঁছয়, তারাই বিদ্যুতের বাড়িতে পৌঁছেে। তবে গত কয়েক দিন ধরেই তিনি বাড়িতে নেই বলে জানা গিয়েছে।  


গরুপাচার মামলায় (Cattle Smuggling Case) অনুব্রতকে গ্রেফতারের পর সিবিআই-এর নজরে ছিলেন অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ বিদ্যুৎবরণও। ২০১১-য় তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরই তিনি ফুলেফেঁপে ওঠেন। একসময় বোলপুর পুরসভার গাড়ির খালাসি হিসেবে কাজ করা বিদ্যুৎ ২০১১ সালে বোলপুর পুরসভায় স্থায়ী চাকরি পান। তাঁরও বিপুল সম্পত্তির হদিশ মিলেছে।


আরও পড়ুন: Cattle Smuggling Case: 'গরুপাচারে প্রত্যক্ষ মদত ছিল অনুব্রতর', সিবিআই-এর এই দাবিতেই জামিন খারিজ কেষ্টর


আদতে জয়নগরের বাসিন্দা। বিশ্বভারতীর একটি ক্যাম্পাসে কাজ করতেন বিদ্যুতের বাবা। সেই সূত্রেই বোলপুরে আসা তাঁর। পালাবদলের পর অনুব্রতর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে তাঁর। তদন্তে নেমে সিবিআই জানতে পেরেছে, 'এএনএম অ্যাগ্রোকেম ফুডস প্রাইভেট লিমিটেড সংস্থা'র দ্বিতীয় ডিরেক্টরশিপ ছিল বিদ্যুতের নামে, যার শেয়ার ক্য়াপিটাল প্রায় ১ কোটি টাকা। এ ছাড়াও রিয়েল এস্টেট সংস্থা 'নীড় ডেভলপার্স'-এরও দ্বহিতীয় দ্বিতীয় ডিরেক্টরশিপ ছিল তাঁর নামে। ওই সংস্থার শেয়ার ক্যাপিটাল প্রায় দেড় কোটি টাকা। 


কী করে দুই সংস্থার ডিরেক্টরশিপ বিদ্যুতের নামে, উঠছে প্রশ্ন। এমনকি চালকলেও বিদ্যুৎকেও দেখা যেত বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়। কিন্তু বিদ্যুতের নাগাল পাওয়া যায়নি এখনও পর্যন্ত। তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালাচ্ছেন গোয়েন্দারা। ২২ নম্বর ওয়ার্ডে একাধিক বাড়ি এবং জমিও রয়েছে বিদ্যুতের, দাবি সিবিআই সূত্রে। পুরসভার সামান্য কর্মী বিদ্যুতের সম্পত্তির সঙ্গেও তাঁর আয়ের সঙ্গতি নেই বলে দাবি গোয়েন্দাদের।


গাড়ির খালাসি থেকে সংস্থার ডিরেক্টর বিদ্যুৎ!


এর আগে, শনিবার আসানসোল (Asansol) বিশেষ সিবিআই আদালতে (Special CBI Court) কেস ডায়েরি জমা দেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা।  তাতে এ যাবৎ তদন্তে যা তথ্যপ্রমাণ মিলেছে, তা তুলে ধরেন তাঁরা। তাতে একের পর এক বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছেন গোয়েন্দারা। তাঁরা জানিয়েছেন, সীমান্তে গরুপাচারে সেফ প্যাসেজ তৈরি করা, পরিবহণ ও সীমান্ত পারাপারে অনুব্রতর যে সরাসরি যোগ ছিল সে সম্পর্কে প্রচুর তথ্যপ্রমাণ তাদের হাতে রয়েছে। সিবিআই-এর দাবি, অনুব্রতর নিজের নামে, ঘনিষ্ঠ ও দূর সম্পর্কের আত্মীয়দের নামে বিপুল সম্পত্তি রয়েছে, যার সঙ্গে কারও আয়ের সঙ্গতি নেই।