কলকাতা: শিক্ষা নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ওএমআর শিট কারচুপি মামলায় (CBI On Teachers Recruitment Scam ) এবার সিবিআইয়ের স্ক্য়ানারে এস বসু রায় অ্যান্ড কোম্পানির (S Basu Roy and Company) প্রজেক্ট ম্যানেজার। ইতিমধ্যেই মুম্বইয়ে গিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন সিবিআই অফিসাররা। এই মামলায় আগেই গ্রেফতার হয়েছেন এস বসু রায় অ্যান্ড কোম্পানির ডেটা প্রসেসিং প্রোগ্রামার পার্থ সেন। গ্রেফতার করা হয়েছিল সংস্থার ডিরেক্টর কৌশিক মাজি। সিবিআই সূত্রে খবর, জিজ্ঞাসাবাদে একাধিক তথ্য প্রমাণ মিলেছে, যা আগামীদিনে আদালতে পেশ করা হবে।


প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি ও তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যের ভূমিকা নিয়েই অনেক আগে থেকেই তদন্ত শুরু করেছিল কেন্দ্রীয় এজেন্সি। আর এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল, এস বসু রায় অ্যান্ড কোম্পানির ভূমিকা। এবার সেই সংস্থার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল কলকাতা হাইকোর্টে। এস বসু রায় অ্যান্ড কোম্পানির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। 


বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় উল্লেখ করেছিলেন, পর্ষদের বাইরে থাকা কোন সংস্থাকে 'কনফিডেনশিয়াল সেকশন' বলে অভিহিত করা যায় না। আইন অনুসারে পর্ষদের হাতে এই ধরনের ক্ষমতা দেওয়া আছে কি না, তাও স্পষ্ট নয়। এরপরেই স্ক্যানারে আসে এস বসু রায় অ্যান্ড কোম্পানির ভূমিকা। সংস্থার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল হাইকোর্টের। এর আগে প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি তদন্ত মামলায় সিবিআই হাইকোর্টে যে রিপোর্ট পেশ করে, তাতেই উল্লেখ করা হয়, মানিক ভট্টাচার্যের বয়ান থেকে জানা গিয়েছিল, ২০১৪ র টেটের OMR সরবরাহের জন্য কোনও টেন্ডার ডাকা হয়নি। টেন্ডার ডাকা হয়েছিল ২০১২-র টেটের জন্য। সেখানেই প্রথম বরাত পেয়েছিল OMR সরবরাহ ও মূল্য়ায়নকারী সংস্থা এস বসু রায় অ্যান্ড কোম্পানি।


আরও পড়ুন, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বিক্ষোভের মুখে রাজ্যপাল


 সিবিআইয়ের দাবি, জেরায় সেসময় মানিক ভট্টাচার্য জানিয়েছিলেন, ভালো কাজ করায়, এবং অন্য কেউ টেন্ডার জমা না দেওয়ায় বরাত দেওয়া হয়েছিল এই কোম্পানিকে। এই কোম্পানিকে 'confidential section' বলে অভিহিত করেছিল পর্ষদ। হলফনামায়, এস বসু রায় অ্যান্ড কোম্পানির তরফেও জানানো হয়েছিল যে, ২০১৩ সালে অগ্রিম ১০ লাখ টাকা দিয়েছিল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। সিবিআইয়ের সেই রিপোর্টে সেসময় অসন্তুষ্ট হয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায়। বলেছিলেন, বরাতপ্রাপ্ত সংস্থা অগ্রিম চাইলই না, অথচ তাকে ১০ লাখ টাকা অগ্রিম দিল পর্ষদ। এটা যদি বেআইনি না হয়, তাহলে কোনটাকে বেআইনি বলে আমার জানা নেই। ওই সংস্থারই বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।