দার্জিলিং: নকশালবাড়ির তৃণমূলনেত্রীর বাড়ি থেকে উদ্ধার রাসায়নিক তেজস্ক্রিয় 'ক্যালিফোর্নিয়াম' নয়। ডিপার্টমেন্ট অফ অ্য়াটমিক এনার্জির রিপোর্ট অনুসারে জানিয়ে দিল দার্জিলিং জেলা পুলিশ। পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামীর কাছ থেকে সন্দেহজনক পদার্থ উদ্ধারের বিষয়টি পুলিশকে জানায় সেনা দফতর। এরপর সেটি পাঠানো হয় এনডিআরএফ-এর বিশেষ উইং-এ। (Darjeeling News)
এনডিআরএফ-এর এই বিশেষ উইং তেজস্ক্রিয় পদার্থ নিয়ে গবেষণা করে। সেখানে পরীক্ষার পর এনডিআরএফ জানিয়ে দেয় এটি তেজস্ক্রিয় পদার্থ ক্যালিফোর্নিয়াম নয়। এরপর সেটি পাঠানো হয় ডিপার্টমেন্ট অফ অ্য়াটমিক এনার্জিকে। সেখান থেকে রিপোর্ট আসার পরই এটি সুনিশ্চিত হয় যে উদ্ধার হওয়া রাসায়নিক তেজস্ক্রিয় নয়। (TMC News)
নকশালবাড়িতে গ্রেফতার হন তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষের স্বামী। অভিযোগ ওঠে, তাঁর কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে ভয়ঙ্কর তেজস্ক্রিয় পদার্থ ক্যালিফোর্নিয়াম। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে বিহার যেতেও উদ্যোগী হয় দার্জিলিং জেলা পুলিশ। কিন্তু পরীক্ষা করে দেখা গেল, উদ্ধার হওয়া ওই রাসায়নিক ক্যালিফোর্নিয়াম নয়।
গত মঙ্গলবার, কেন্দ্রীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী এবং পানিঘাটা ফাঁড়ির পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে নকশালবাড়ি ব্লকের বেলগাছি চা-বাগান এলাকায় অভিযান চালান সেনা বাহিনীর গোয়েন্দারা। গ্রেফতার করা হয়, ফ্রান্সিস এক্কা নামের এক ব্যক্তিকে। ফ্রান্সিস কার্শিয়ং বন বিভাগের কর্মী। তাঁর স্ত্রী অমৃতা এক্কা তৃণমূল পরিচালিত নকশালবাড়ির পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ। বলা হয়, ফ্রান্সিসের কাছ থেকে তেজস্ক্রিয় পদার্থ ক্যালিফোর্নিয়াম
এবং DRDO-র নথি উদ্ধার হয়েছে।
ক্যালিফোর্নিয়াম একটি মারাত্মক তেজস্ক্রিয় পদার্থ। প্রাকৃতিক পরিবেশে ‘ক্যালিফোর্নিয়াম’ পাওয়া যায় না। সেটি পরীক্ষাগারে তৈরি করা হয়।
সেই নিয়ে বিস্ফোরক দাবি করেন বিজেপি-র অর্জুন সিংহ। তাঁর বক্তব্য ছিল, "ক্যালিফোর্নিয়াম পরমাণু বোমা তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। আমাদের কাছে উনপুট আছে যে, নবান্নের নির্দেশে বিজেপি নেতাদের খুন করার চক্রান্ত হচ্ছে। এমন ভাবে খুন, যাতে কেউ বুঝতে মা পারে। পাশ দিয়ে গেলসে আপনার শরীর গলে পড়ে যাবে।"
যদিও গোড়াতেই অভিযোগ খারিজ করে দেন তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তাঁর বক্তব্য ছিল, "কিছুদিন পর মাটি তুলে এনে অর্জুন বলবেন এটা মঙ্গল গ্রহের মাটি। কী ভাবে মঙ্গল গ্রহ থেকে নাসা হয়ে ভারত, বাংলাদেশ হয়ে বাংলায় ঢুকেছে জানাবেন উনি।"
এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন ওঠে, যা উদ্ধার হয়েছে তা কি সত্য়িই তেজস্ক্রিয় পদার্থ ক্যালিফোর্নিয়াম? এমনটা হলে সেটি নকশালবাড়িতে কোথা থেকে এল?
এই তেজস্ক্রিয় পদার্থ যে কোনও সাধারণ মানুষের কাছে থাকা সম্ভব নয়, তাহলে তৃণমূল নেত্রীর স্বামীর কাছে কোথা থেকে এল? যদিও শেষ পর্যন্ত পরীক্ষায় দেখা গেল, ওই পদার্থ ক্যালিফোর্নিয়াম নয়।