ময়ুখ ঠাকুর চক্রবর্তী, কলকাতা: খাস কলকাতায় শিশু বিক্রির (Child Trafficking) চক্রের হদিশ ঘিরে চাঞ্চল্য মহানগরে! পুলিশ সূত্রে খবর, আইভিএফ (IVF Centre) সেন্টারগুলোর আড়ালেই এই শিশু পাচারের চক্র চলত! টার্গেট করা হত নিঃসন্তান দম্পতিদের। ৪ থেকে সাড়ে ৪ লক্ষ টাকা খরচ করলেই মিলবে সদ্যোজাত (Newborn) , দেওয়া হত এমনই টোপ। 


আর কী জানা গেল?
প্রাথমিক ভাবে যা জানা গিয়েছে, তা শুনে চোখ কপালে উঠে যাওয়ার পরিস্থিতি অনেকেরই। অভিযোগ, সদ্যোজাত হাতে তুলে দেওয়ার আগে দম্পতিকে নিজের বাড়ি ছেড়ে ভাড়া বাড়িতে থাকার পরামর্শ দেওয়া হত। সদ্যোজাতকে হাতে পাওয়ার পরই বাড়ি ফিরতেন দম্পতি। সম্প্রতি আনন্দপুর থানা এলাকায় এক মহিলার কন্যাসন্তান নিখোঁজ হয়ে যায়। কন্যাকে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে সন্তান ছাড়াই ফিরে আসেন ওই মহিলা। সেখান থেকেই গোটা শিশু বিক্রির চক্রের হদিশ মেলে। এই ঘটনায় ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর আগে সিআইডি তদন্তে গোটা রাজ্যেই ছড়িয়ে থাকা শিশু পাচার চক্রের একটি জাল উঠে আসে। তার পাঁচ বছর পর আনন্দপুর থানা এলাকার এই ঘটনা চমকে দিয়েছে অনেককেই। আপাতত যা জানা যাচ্ছে, তাতে এক নিঃসন্তান দম্পতি কয়েকদিন আগে আইভিএফ সেন্টারে যান। প্রথমে তাঁরা চিকিৎসকদের পরামর্শ নেন। তার পর, সেখানেই এক মহিলার সঙ্গে ওই দম্পতির পরিচয় হয় বলে তদন্তে উঠে এসেছে। জানা যাচ্ছে, ওই মহিলাই দম্পতিকে জানান, ৪-সাড়ে ৪ লক্ষ টাকার বিনিময়ে ১০-২০ দিন বয়সি সদ্যোজাত শিশু তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। এই কাজের জন্য অগ্রিম বাবদ ওই মহিলাকে কিছু টাকাও দেওয়া হয়েছিল বলে খবর। টাকা হাতে পেতেই তিনি দম্পতিকে জানিয়ে দেন, নিজেদের বাড়িতে তাঁরা থাকতে পারবেন না। এক বছরের জন্য বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র ভাড়া নিতে হবে। কোথায় ভাড়া নিতে হবে, সেটিও তিনি বলে দেবেন। এক বছর পর দম্পতির হাতে সদ্যোজাতকে তুলে দেওয়া হবে। বাড়ি ফিরে তাঁরা বলবেন, আইভিএফ প্রক্রিয়ায় চিকিৎসা করিয়েই এই সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। এভাবেই গোটা প্রক্রিয়া চলে। কিন্তু আনন্দপুরের ঘটনায় একটু গণ্ডগোল হয়েছিল। যাঁর শিশুকে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ, তাঁর মায়ের কাছে সন্তানকে দেখতে না পেয়ে পড়শিরাই পুলিশকে বিষয়টি জানান। পুলিশ আধিকারিকরা মহিলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। প্রথমে তিনি কিছু স্বীকার করেননি, কিন্তু পরে সবটা প্রকাশ্যে আসে। 
গোটা ঘটনা শুনে চমকে ওঠেন দুঁদে আধিকারিকরাও।


আরও পড়ুন:'বাংলায় ৬ লক্ষ পদ লোপ,২ কোটি বেকারের আর্তনাদ শোনা যাচ্ছে', রাজ্যকে নিশানা শুভেন্দুর