কলকাতা : SCC’র নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে তোলপাড় রাজ্য! এই প্রেক্ষাপটেই এবিপি আনন্দকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে চাঞ্চল্যকর দাবি করেন, তৃণমূল আমলে SSC’র প্রথম চেয়ারম্যান চিত্তরঞ্জন মণ্ডল ( Chittaranjan Mandal )। তিনি দাবি করেন, ' প্যাডের পর প্যাড। প্রচুর সুপারিশ। বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রচন্ড চাপ ছিল । কোথাও তালিকা করে দেওয়া, চাকরি করে দেওয়া,  নেতারাই সুপারিশ করত। ' পার্থ চট্টোপাধ্যায় সম্পর্কেও বিস্ফোরক দাবি করেন তিনি। এই নিয়েই বুধবার এবিপি আনন্দ-র ঘণ্টাখানেক সঙ্গে সুমন অনুষ্ঠানে মুখ খোলেন তিনি।




    • SSC তো খাতায়-কলমে একটি স্বশাসিত সংস্থা। তাহলে কীভাবে এত চাপ আসত ? 

      এই নিয়ে SSC’র প্রথম চেয়ারম্যান (School Service Commission chairman ) চিত্তরঞ্জন মণ্ডল দাবি করেন, এটি পুরোপুরি স্বশাসিত সংস্থা নয় মোটেই, এর নিয়ম কানুন নির্ধারন করে সরকারই। টাকা বরাদ্দও করে সরকারই। SSC’র চেয়ারম্যান পদটিকে অনেকেই রাজনৈতিক নিয়োগ বলে থাকেন, সেটি শ্রুতিকটূ হলেও পুরোপুরি অস্বীকার করা যায় না। তাই সরকার চালায় যে দল, তাদের একটা প্রভাব মানতেই হয়। পার্থ চট্টোপাধ্যায় তখন শিক্ষামন্ত্রী না থাকলেও, তৃণমূলের মহাসচিব ছিলেন। তাই তিনি যখন কারও কথা বলছেন, তখন আর অন্যথা করার উপায় থাকে কি ?
      SSC নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে যখন উত্তাল রাজ্য, তখন পার্থ চট্টোপাধ্যায় সম্পর্কে বিস্ফোরক দাবি করেছেন SSC’র প্রাক্তন চেয়ারম্যান! তাঁর দাবি, '' চাপ বাড়তেই থাকল। নতি স্বীকার করিনি। কিন্তু, চাপ বাড়তেই থাকল। অক্টোবর মাসে পার্থ চট্টোপাধ্যায় ডাকলেন। বললেন, ছেড়ে দিন।  উনি দলের মহাসচিব।  দোর্দণ্ডপ্রতাপ।  খুব খারাপ লেগেছিল সেদিন। ''






  • শুধু পার্থ চট্টোপাধ্যায় নন, দলের অন্যান্য নেতা মন্ত্রীদের তরফেও আসত সুপারিশ। তাদের কথাও কি মানতে হত, আর হলে কীভাবেই বা মানতে হত ? 

    ' যিনি চেয়ারম্যান থাকেন তাঁর একটা দায়িত্ব থেকেই যায়। সব সময় সুপারিশ মানা হত না। আর আমি তো একা নই, একটা কমিশনও নিয়োজিত ছিল। কমিশনের সকলেই আমার সঙ্গে সহমত ছিলেন। কি্ন্তু মুশকিল হল, নেতা মন্ত্রীরা নিজেদের নিয়মের ঊর্ধ্বে মনে করেন। কিন্তু আমি তাঁদের নাম বলতে পারব না। প্রমাণ আমার কাছে নেই। আমি মন্ত্রী, আইন আবার কী ! আমি মন্ত্রী, আমিই আইন ! ' , মন্তব্য TMC আমলের SSC’র প্রথম চেয়ারম্যান চিত্তরঞ্জন মণ্ডলের। 


  • তৃণমূল দল করতেন চিত্তরঞ্জন মণ্ডল, ২১ জুলাইয়ের মঞ্চেও থেকেছেন। তাহলে সমস্যার কথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানাননি ? 

    মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো নিয়োগের দিনই বলেছিলেন , নিয়ম মেনে কাজ করতে। তাই তিনি সেলফ চেকিং-এর নানা পদক্ষেপ নেন, জানালেন চিত্তরঞ্জন। পরবর্তীতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাজের পরিধি আরও বেড়ে যায়। তারপর আর কথা হয়নি। ব্রাত্য বসুকে তিনি জানিয়েছিলেন। তিনি একেবারে পদ ছাড়তে বারণ করেছিলেন। তবে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ই বাড়িতে ডেকে বলেন, ছেড়ে দিতে। 


  • কুণাল ঘোষ এই পরিপ্রেক্ষিতে মন্তব্য করেন, চিত্তরঞ্জন মণ্ডল একসময় তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে চলে যান, তার কথায় কতটুকু সারবত্তা আছে ! তিনি কি সত্যিই বিজেপিতে গিয়েছিলেন ? 

    কুণাল ঘোষ একটু ঝুঁকি নিয়ে ফেলেছেন। দল মনে করে, আমি এতদিন দলটা করেও রাজনীতির র-ও বুঝি না। উনি যে এই মন্তব্য করলেন, পরে বিপদে পড়ে যাবেন না তো ? উনি বলেছেন, সিবিআই-এর কাছে যেতে। সেটা আমি যাব কি না, সেটা তো আমি ঠিক করব। আর তাছাড়া ' বাজার গরম করা ' মন্তব্যটি খুবই বেদনাদায়ক।  
    আর বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পিছনে দুটি কারণ আছে। এক তাঁদের তরফে অনুরোধ এসেছিল। তাছাড়া এই দলটায় কে আছে, কে নেই , খুব বড় নেতা ছাড়া তো বোঝা যায় না ! আমি বসে গেলেও তো, পার্টি কী করছে, না করছে, সেই নিয়ে সাধারণ মানুষের থেকে কথা শুনতে হত ! 


  • এই মুহূর্তে কি বিজেপির সঙ্গে যুক্ত আছেন ?

    আমি প্রথম দিকে কিছু কাজ করলেও, ইদানীং নিজস্ব কিছু কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ায় একটা শূন্যস্থান সৃষ্টি হয়েছে। 

    সব মিলিয়ে SSC’র নিয়োগ দুর্নীতি প্রায় প্রতিদিনই নতুন মোড় নিচ্ছে।