ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা: এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মৃত রোগীর পরিবারের আনা চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ খারিজ করল ক্রেতা সুরক্ষা আদালত। ৫০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের মৃতের স্ত্রীর দাবিও খারিজ করেছে আদালত। অভিযোগ থেকে মুক্তি মেলায় স্বস্তিতে চিকিৎসক। 


এ যেন শাপমুক্তি। দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর অবশেষে অভিযোগ থেকে রেহাই। মৃত রোগীর স্ত্রীর আনা চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ খারিজ করল ক্রেতা সুরক্ষা আদালত। আইনি লড়াই শেষে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন চিকিৎসক অরিন্দম রায়চৌধুরী। ঘটনার সূত্রপাত কোভিককালে। বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করেন চিকিৎসক অরিন্দম রায়চৌধুরী। 


২০২০ সালের জুলাই মাসে কাশির উপসর্গ নিয়ে আসেন প্রসেনজিৎ সাঁপুই নামে এক ব্যক্তি। ওই রোগীকে দেখে বেশ কিছু পরামর্শ দেন চিকিৎসক অরিন্দম রায়চৌধুরী। চিকিৎসকের দাবি, শ্বাসকষ্ট হলে রোগীকে হাসপাতালে আসতে বলেছিলেন তিনি।  


অবস্থার অবনতি হওয়ায় ৭ দিন পর ফের বেসরকারি ওই হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হয় প্রসেনজিৎ সাঁপুইকে রক্তে অক্সিজেন স্যাচুরেশনের মাত্রা ৬০ শতাংশ হওয়ায় তৎক্ষণাৎ ভর্তি করানো হয় তাঁকে। প্রথমে আংশিক ও পরে সম্পূর্ণ ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয় রোগীকে ১৪ আগস্ট মৃত্যু হয় প্রসেনজিৎ সাঁপুইয়ের।


এর পরেই চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে মামলা করেন মৃতের স্ত্রী তপতী সাঁপুই। ৫০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের দাবি তোলেন তিনি। দীর্ঘ শুনানির পর চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ খারিজ করেছে আদালত। সেই সঙ্গে মৃতের স্ত্রীর তোলা ক্ষতিপূরণের দাবিও খারিজ করেছে ক্রেতা সুরক্ষা আদালত। চিকিৎসক অরিন্দম রায়চৌধুরীর দাবি, উপসর্গ থাকলেও রোগীর করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছিল। 


চিকিৎসক অরিন্দম রায়চৌধুরী বলছেন, করোনা (Corona) আক্রান্ত ছিলেন না। রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছিল। তবে নানা উপসর্গ ছিল। সঠিক চিকিৎসা করা হয়েছিল। ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের এই রায়কে দৃষ্টান্ত হিসেবে তুলে ধরছে চিকিৎসক মহল। 


এর আগে অ্যাডিনো-আতঙ্কের মধ্যেই চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগ ঘিরে বি সি রায় হাসপাতালে উত্তেজনা ছড়ায়। দত্তপুকুরের বাসিন্দা দেড়বছরের শিশুর জ্বর, শ্বাসকষ্টের সমস্যা থাকায়, বুধবার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরিবারের অভিযোগ, চিকিৎসার গাফিলতির কারণে শিশুর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। বি সি রায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের প্রতিক্রিয়া মেলেনি। 


অ্যাডিনো-আতঙ্কের মধ্যেই বি সি রায় হাসপাতালে বেড়েছিল শিশু মৃত্যুর হার। এদিন আরও এক শিশুর মৃত্যু হয়। বেসরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এই নিয়ে ২ মাসে রাজ্যে মৃত্যু হল ১৩৮ জন শিশুর। জ্বর ও শ্বাসকষ্টের সমস্যা থাকায়, বনগাঁ মহকুমা হাসপাতাল থেকে ৭ মাস বয়সী শিশুকে বি সি রায় হাসপাতালে আনা হয়। আইসিইউ-তে থাকা ওই শিশুর সিভিয়ার নিউমোনিয়ার কারণে মৃত্যু হয়েছে বলে হাসপাতালের রিপোর্টে জানানো হয়।