শুভেন্দু ভট্টাচার্য,  কোচবিহার : ২০২০-র ৮ই নভেম্বর। জন্মদিনের সকালে, স্বামীর ফোনের অপেক্ষায় ছিলেন বধূ। কিন্তু সেই ফোন আর আসেনি বরং বজ্রাঘাতের মত আসে স্বামীর মৃত্যু সংবাদ । দু বছর আগে, ৭ই নভেম্বর, জম্মু-কাশ্মীরের কুপওয়াড়ায় জঙ্গিদের গুলিতে মৃত্যু হয়, কোচবিহারের দিনহাটার বাসিন্দা, বিএসএফ জওয়ান সুদীপ সরকারের। 


কীর্তি চক্র সম্মান প্রদানের কথা ঘোষণা করল ভারত সরকার
স্বাধীনতা দিবসে, তাঁকে, মরণোত্তর, কীর্তি চক্র সম্মান প্রদানের কথা ঘোষণা করল ভারত সরকার। নিহত জওয়ানের মেয়ে শুভ্রা সরকার আবেগপ্রবণ হয়ে বললেন, ' বাবা আমাদের কাছে খুব ইমপর্ট্যান্ট। বাবার জন্য গর্বিত। মায়ের জন্মদিন ছিল সেদিন। আমরা অপেক্ষায় ছিলাম বাবা ফোন করবে। তখনই বাড়িতে ফোন .. মৃত্যু সংবাদ আসে। 


জঙ্গিদের খতম করে নিজেও হারিয়েছিলেন প্রাণ
সুদীপ সরকারের বাড়ি ত্রিপুরায়। ২০১৬ থেকে কোচবিহারে স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে থাকতেন।  জম্মু-কাশ্মীরে, নিয়ন্ত্রণ রেখায়, টহলদারির দায়িত্বে ছিলেন ১৬৯ নম্বর ব্যাটেলিয়ানের এই জওয়ান।  সেনা সূত্রে খবর, ২০২০-র ৭ই নভেম্বর, কুপওয়াড়ায় নিয়ন্ত্রণ রেখায়, ডিউটি করছিলেন সুদীপ।

সেই সময়, অনুপ্রবেশের চেষ্টা করে একাধিক পাকিস্তানি জঙ্গি। ভারতীয় জওয়ানরা জঙ্গিদের পরিকল্পনা বানচাল করে দেয়। এরপরই ভারতীয় জওয়ানদের লক্ষ্য করে গুলিবৃষ্টি শুরু করে জঙ্গিরা। জঙ্গিদের ছোঁড়া গুলি এসে লাগে সুদীপের বুকে। রক্তাক্ত গুলিবিদ্ধ অবস্থাতেও, পাল্টা গুলি চালান তিনি। তাঁর গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যায় এক জঙ্গি। এরপর মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন, বছর ৩৭-এর সুদীপ সরকারও। এই সাহসিকতার জন্য, তাঁকে, মরণোত্তর, কীর্তি চক্র সম্মানে ভূষিত করতে চলেছে ভারত সরকার। 


মৃত জওয়ানর স্ত্রী রুম্পা সরকার জানালেন, তিনিও স্বামীর মতো দেশের সেবা করতে চান । আগামী বছর, প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে হবে সম্মান প্রদান অনুষ্ঠান।