শুভেন্দু ভট্টাচার্য, কোচবিহার : দু-বছর দোল-হোলির (Holi Festival 2022) আনন্দ ভুলিয়ে দিয়েছিল করোনা (Corona Pandemic)। প্রভাব পড়েছিল আবির ব্যবসাতেও (Colour Making Business)। অবশেষে করোনা পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হতে, ঘুরে দাঁড়িয়েছে কোচবিহারের (CoochBehar) আবির ব্যবসা। প্রতিবছর দোল ও হোলিতে আবিরের রঙয়েই রঙিন হয়ে ওঠে কোচবিহার। বিপুল চাহিদা থাকে, প্রতিবেশী রাজ্য অসমের একাংশেও। কিন্তু, গত ২ বছরে বদলেছে ছবিটা। কার্যত বে-রঙিন হয়ে উঠেছিল জেলার আবির ব্যবসায়ীদের জীবন। কারণ কোভিডকালে সেভাবে হয়নি রঙের খেলা। তবে এবার করোনার দাপট অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আসায় ফের চাহিদা বেড়েছে আবিরের। এখন সবাই চাইছেন করোনার কালো দিন পুরোপুরি সরে গিয়ে, রঙের উৎসবকে ঘিরে আবার রঙিন হয়ে উঠুক চারপাশ।


আগামী ১৮ মার্চ দোল উৎসব। হাতে মাত্র দিন দশেক সময়। তাই জোরকদমে আবির তৈরির কাজ চলছে কোচবিহারের অমরতলায়। পাশাপাশি শহরের আরও দু-তিন জায়গায় আবির তৈরি হয়। বাক্সবন্দি হতে না হতেই, তা চলে যাচ্ছে বাজারে। সুদিন ফেরার স্বস্তিতে আবির প্রস্তুতকারীরা বলছিলেন, ২ বছর খারাপ গেছে, অসম থেকে ও অর্ডার আসেনি। এবার আশার আলো। তবে প্রতিযোগিতার বাজার তৈরি হয়েছে, কারণ অনেক জায়গায় যন্ত্রের সাহায্যে বেশি উৎপাদন হয়। এদিকে, জমে উঠেছে কোচবিহারের দোলের বাজারও। পাইকারী ব্যবসায়ীদের দাবি, গড়ে কোচবিহারে প্রতিবছর ৩৫ থেকে ৪০ লক্ষ টাকার আবিরের ব্যবসা হয়। ভাল বিক্রি বাট্টা হওয়ায় আবির প্রস্তুতকারীদের পাশাপাশি আশার আলো দেখেছেন ব্যবসায়ীরাও। কোচবিহারের স্থাীয় বাজারের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ভাল রেসপন্স পাচ্ছি, আগামী ৫-৭ দিন ব্যবসা বাড়বে, শুরু থেকেই চাহিদা আছে।


আরও পড়ুন- রঙ মেখে হুল্লোড় নয় শুধু, দোলের খাবারে থাক সাবেকিয়ানার ছোঁয়া


এদিকে, পূরাণ মতে জানা যায়, অসুরদের রাজা ছিল হিরণ্যকশিপু। সে চাইত সবাই তাকে ঈশ্বরের মতো পুজো করবে এবং মেনে চলবে। কিন্তু তার ছেলে প্রহ্লাদ তার পূজারি না হয়ে ভগবান বিষ্ণুর পূজারি ছিলেন। ছেলের এমন মনোভাব দেখে হিরণ্য়কশিপু ঠিক করে সে প্রহ্লাদকে হত্যা করবে। সেই ভাবনা অনুযায়ী সে হোলিকা নামে তার এক আত্মীয়কে কাজে লাগায় যাতে সে প্রহ্লাদকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করতে পারে। কিন্তু দেখা যায়, যখন আগুন জ্বলছে, তখন প্রহ্লাদ ভগবান বিষ্ণুর নাম উচ্চারণ করতে থাকে। সবশেষে দেখা যায়, ওই আগুনে প্রহ্লাদ দিব্যি জীবিত রয়েছেন। কিন্তু হোলিকা মারা গিয়েছে। তাই এই উৎসবকে অনেক জায়গায় হোলিকাদহন নামেও ডাকা হয়।