শুভেন্দু ভট্টাচার্য, মাথাভাঙা: পাওয়ার গ্রিড কর্পোরেশনকে জমি দিয়েও মেলেনি ক্ষতিপূরণ। এমনই অভিযোগে ক্ষতিপূরণের দাবিতে এবার অনশনে বসলেন কোচবিহারের মাথাভাঙার ৫০ জন জমিদাতা। এ নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। তবে কোনও মন্তব্য করতে চাননি পাওয়ার গ্রিড কর্পোরেশনের স্থানীয় ম্যানেজার।


পাওয়ার গ্রিড কর্পোরশেনকে জমি দিয়েও ক্ষতিপূরণের অর্থ মেলেনি বলে অভিযোগ। সেই অর্থের দাবিতেই অধিগৃহীত জমির গেটের সামনে মঞ্চ বেঁধে শুরু হল অনশন। মঙ্গলবার কোচবিহারের মাথাভাঙার দইভাঙ্গিতে আন্দোলন শুরু করলেন জমিদাতাদের একাংশ।


২০১৬ সালে পাওয়ার গ্রিড নির্মাণে মাথাভাঙার হাজরাহাট ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ১৭৩ একর জমি অধিগ্রহণ করে পাওয়ার গ্রিড কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া। তার মধ্যে বসতবাড়িও পাশাপাশি ছিল কৃষিজমি।


অভিযোগ, সেই জমি বিক্রি নিয়েই হয়েছে দুর্নীতি। যাঁরা জমি দিয়েছেন, তাঁরা সকলে ক্ষতিপূরণ পাননি। টাকা পেয়েছেন বাইরের লোক। আন্দোলনকারীদের দাবি, প্রশাসনকে বারবার জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি। মুখ্যমন্ত্রীকেও চিঠি দিয়েছেন। শেষপর্যন্ত বেছে নিয়েছেন অনশনের পথ।


মাথাভাঙার জমিদাতা ভজন মণ্ডল বলেন, ২০১৬ সালে জমি নিয়েছ। ক্ষতিপূরণ পাইনি। বাইররের লোক ক্ষতিপূরণ পেয়েছে। বাধ্য হয়ে অনশনে। আরেক জমিদাতা ভালন সরকার বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলনকরছি। গ্রামের কিছু দালাল, বাইরের দালাল ঠকিয়ে জমি নিয়েছে। আসল জমির মালিক টাকা পায়নি। বাইরের লোক পেয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী এবিষয়ে সাহায্য করুন।


জমিদাতাদের একাংশের এই অভিযোগ ঘিরেই সরগরম জেলার রাজনীতি। দুর্নীতির জন্য, রাজ্যের শাসকদলের দিকেই আঙুল তুলেছে বিজেপি। কোচবিহারে বিজেপি আহ্বায়ক অভিজিৎ বর্মন বলেন, বেশ কয়েক বছর ধরেই সমস্যা। যারা প্রকৃত মালিক তারা পায়নি। অসুর কমিউনিটির নামদিয়ে অন্যরা টাকা তুলেছে। তৃণমূল রয়েছে এর পেছনে।


পাল্টা কেন্দ্রের নীতির সমালোচনায় সরব হয়েছে তৃণমূল। কোচবিহারের তৃণমূল নেতা পার্থপ্রতিম রায় বলেন, পাওয়ার গ্রিড কেন্দ্রীয় সংস্থা। কৃষকদের বঞ্চনা করছে। এটাই কেন্দ্রের নীতি। কৃষকদের মেরা ফলেছে উত্তরপ্রদেশে, কৃষকদের নিয়ে।


এ বিষয়ে পাওয়ার গ্রিড কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়ার মাথাভাঙার ম্যানেজার সতনুকুমার ভৌমিক বলেন, বিষয়টি তাঁর জানা নেই। এ নিয়ে যা বলার রিজিওনাল হেড কোয়াটার্স থেকে বলবে। 


২০১৬-২০২১। পেরিয়ে গিয়েছে ৫ বছর। আন্দোলনকারীরা চান, অবিলম্বে মিলুক তাঁদের প্রাপ্য টাকা।