অনির্বাণ বিশ্বাস, উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, বিশ্বজিত্ দাস,কলকাতা: কাশীপুরে (Cossipore Case) বিজেপির যুব মোর্চা নেতার রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় ময়নাতদন্তের রিপোর্ট সামনে আসার পর থেকে একটাই প্রশ্ন জোরাল হচ্ছে, তাহলে কি আত্মহত্যাই করেছিলেন অর্জুন চৌরাসিয়া? কিন্তু, এই প্রশ্নের চূড়ান্ত উত্তর যতক্ষণ না পাওয়া যাচ্ছে, ততক্ষণ রাজনৈতিক কথার লড়াই আগের মতোই চলছে। বিজেপি এখনও খুনের তত্ত্বেই অনড়।
বিজেপি-র (BJP) প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, "সবাই আন্দাজে বলছে। কোর্টে মুখবন্ধ খামে জমা দেওয়া হয়েছে। সেই খামটা কি খুলে কোর্টে বলেছে? যদি ঝুলিয়ে দেয় গলায় তো দাগ থাকবেই। যদি দড়ি দিয়ে শ্বাসবন্ধ করে দেয়, তাহলেও দাগ থাকবে। কিন্তু মৃত্যু কী কারণে হয়েছে সেটা জানতে হবে। কে মেরেছে, সেটাও জানতে হবে।"
খোদ অমিত শাহ তাঁর বঙ্গ সফরের সূচি কাটছাঁট করে মৃত যুব বিজেপি নেতার রহস্যমৃত্যুর ঘটনাস্থলে পৌঁছেছিলেন। পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। রাজনৈতিক খুন বলে দাবি করেছিলেন। এমনকি গোটা ঘটনায় সিবিআই সিবিআই তদন্ত হওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তাঁকে বলতে শোনা যায়, "আমরা চাই এই ঘটনার সিবিআই তদন্ত হোক। এক বছরের মধ্যে দেশের কোনও প্রান্তে এত মামলা সিবিআইকে দেওয়া হয়নি, বাংলার মতো। এটাই প্রমাণ করে আদালত আর এখানকার প্রশাসন-পুলিশের ওপর ভরসা নেই।"
প্রত্যাশিতভাবেই অমিত শাহের সুরই শোনা যাচ্ছে বঙ্গ বিজেপি নেতাদের গলাতেও। কিন্তু, ময়ানতদন্তের রিপোর্ট সামনে আসা মাত্রই, তাকে হাতিয়ার করে তৃণমূল পাল্টা প্রশ্ন তুলছে, খোদ দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কীভাবে তদন্তের আগেই খুন বলে দিয়েছিলেন? রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম তাই বলেন, "এটা ভাল দিক। লাশ ধরার রাজনীতি ঠিক নয়। যেটা বিজেপি করেছে বা অমিত শাহ এখানে এসে করেছে, সেটা হোম মিনিস্টারের পক্ষে শোভা পায় না। তিনি বিজেপির নেতা হোন বা গুজরাত দাঙ্গার নায়ক, কিন্তু উনি এখন হোম মিনিস্টার অফ ইন্ডিয়া। ওনার এখানে এসে রাজনৈতিক খুন বলাটা অত্যন্ত দায়িত্বজ্ঞানহীনতার কাজ। এখন ওরা বুঝতে পারছে। রাজ্যপালের কাছে গিয়েও নাটক করেছে। আসলে খবরে থাকতে চাইছে।" এই আবহেই রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠছে, যুব নেতার রহস্য-মৃত্যু ইস্যুতে কী অস্বস্তিতে পড়ল বিজেপি?