সুকান্ত মুখোপাধ্যায় এবং ব্রতদীপ ভট্টাচার্য, বোলপুর: সকাল থেকে দাঁড়িয়ে ছিলেন সিবিআই আধিকারিকরা। কখনও এই গেট, কখনও আবার অন্য গেট। ক্রমাগত চেষ্টা করেও বোলপুরের ভোলে ব্য়োম রাইস মিলে ঢুকতে পারছিলেন না সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা। তারপর প্রায় ৪০ মিনিট পরে মিলের কর্মীরা আসেন।
কেন এত দেরি?
মিলের নিরাপত্তারক্ষীদের দাবি তাদের কাছে চাবি ছিল না। চাবি এনে তারপর গেট খোলা হয়।
শেষ পর্যন্ত রাইস মিলের অফিসে এবং আরও একাধিক জায়গায় তল্লাশি শুরু করেছেন সিবিআই আধিকারিকরা। মিলের ভিতরে বেশ কিছু জায়গায় বাইক ও সাইকেল রয়েছে। বেশ কয়েকটি গাড়িও রয়েছে মিলের ভিতরে।
একাধিক প্রশ্ন:
মিল ঘিরে একাধিক প্রশ্ন উঠেছে। প্রথমে বলা হয়েছে মিলে ঢোকার অনুমতি নেই। তারপর দীর্ঘক্ষণ ধরে কথা বলেন, ডাকাডাকি করেন। কিন্তু কোনও সাড়া মেলেনি। সংবাদমাধ্যমে তা দেখানো শুরু হওয়ার বেশ কিছুক্ষণ পরে বেরিয়ে আসেন মিলের নিরাপত্তাকর্মীরা। তখন দাবি করা হয় চাবি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। যখন বাকিরা ভিতরেই রয়েছেন, তখন চাবি কীভাবে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না? এই প্রশ্ন করলেও অবশ্য উত্তর মেলেনি।
একাধিক গাড়ি:
রাইস মিল চত্বরের ভিতরে একাধিক গাড়ি দেখা গিয়েছে। সেগুলি কার? কারা সেখানে রেখে গিয়েছে? উঠতে শুরু হয়েছে এমনই সব প্রশ্ন।
যেখানে রাইস মিল রয়েছে, সেই ঠিকানাতেই একাধিক সংস্থার হদিশ মিলেছে। সেই সংস্থাগুলির মালিকানার তালিকায় নাম পাওয়া গিয়েছে অনুব্রক মণ্ডলের পরিবারের সদস্যদের। ওই সংস্থাগুলির শেয়ার ক্যাপিটালও চোখ কপালে তোলার মতো। কীভাবে একই ঠিকানায় একাধিক সংস্থা হতে পারে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ওই সংস্থাগুলি তৈরির টাকা কোথা থেকে এসেছে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। সব মিলিয়ে একাধিক তথ্যের খোঁজে ওই রাইস মিলে তল্লাশি শুরু করেছে সিবিআই। তখনই প্রথমে তাদের বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে।
ইতিমধ্যেই গরুপাচার মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে অনুব্রত মণ্ডলকে। আগেই গ্রেফতার হয়েছেন তাঁর দেহরক্ষী সায়গলও। তাঁদের সম্পত্তির দিকেও নজর দিয়েছে সিবিআই। অনুব্রত মণ্ডলকে জেরা করে ফ্রিজ করা হয়েছে প্রায় ১৭ কোটি টাকার ফিক্সড ডিপোজিট। আরও যা যা সম্পত্তি হয়েছে বলে অভিযোগক উঠছে তার উৎস জানার চেষ্টা করছে সিবিআই। সূত্রের খবর, অনুব্রত মণ্ডল ও তাঁর আত্মীয়দের আর কোথায় স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি রয়েছে? তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তথ্য চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে একাধিক রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি ব্যাঙ্কে।
আরও পড়ুন: বোলপুরের রাইস মিলের মধ্যে সার সার এসইউভি ! আর কী আছে সেখানে ?