সনৎ ঝা, দার্জিলিং: সিপিএম রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য জীবেশ সরকারকে জমি মাফিয়া বলে উল্লেখ করে নিউ জলপাইগুড়ি থানায় অভিযোগ দায়ের। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তুঙ্গে উঠেছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। তাৎপর্যপূর্ণভাবে প্রতিবাদে সামিল হয়েছে তৃণমূল ও বিজেপি। 


মুখ্যমন্ত্রী  মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, শিলিগুড়িতে নানারকম চক্রান্ত হচ্ছে। জমি দখল ওখানে তো রুটিন হয়ে গেছে। যে করবে টেক স্ট্রং অ্যাকশন। গৌরব দেখতে পাচ্ছি না। আমার নেতা ওদের নেতা- এসব চলবে না।


এক সপ্তাহ আগে নবান্নে প্রশাসনিক বৈঠকে জমি মাফিয়াদের বিরুদ্ধে পুলিশ-প্রশাসনকে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। আর সেই নির্দেশ পাওয়ার পরই তৎপর হয়েছে শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেট। নদীর চর দখল করার অভিযোগে গত ২ দিনে মোট ৪০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। 


পুলিশি ধরপাকড়ের মধ্যেই সোমবার নিউ জলপাইগুড়ি থানায় জমি মাফিয়া হিসেবে কয়েকজনের নাম দিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন অংশুমান বিশ্বাস নামে শিলিগুড়ির এক বাসিন্দা। আর সেই অভিযোগপত্রেই নাম রয়েছে জীবেশ সরকারের।


যিনি সদ্য সিপিএম রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য হয়েছেন। আর তারপরই এহেন হেভিওয়েট সিপিএম নেতার নামে জমি মাফিয়ার অভিযোগ দায়ের ঘিরে ঘিরে উত্তাল উত্তরবঙ্গের রাজনীতি।


সিপিএম রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য জীবেশ সরকারের কথায়, আমি কি সেটা শিলিগুড়ির মানুষ জানে। আমার হয়ে পার্টি নেতৃত্ব পুলিশের সঙ্গে দেখা করেছে। কালিমালিপ্ত করতেই এই ধরনের অভিযোগ করা হচ্ছে। নজিরবিহীনভাবে এই ইস্যুতে একযোগে প্রতিবাদ জানিয়েছে তৃণমূল ও বিজেপি।  


দার্জিলিং জেলার তৃণমূল কংগ্রস চেয়ারম্যান অলোক চক্রবর্তীর জানিয়েছেন, অংশুমান বিশ্বাসের সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই। কেন অভিযোগ করেছেন, কী অভিযোগ সেটা খতিয়ে দেখছি। তবে জীবেশ সরকার ভাল লোক। এর সঙ্গে উনি জড়িত থাকতে পারেন না।


ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ির বিজেপি বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্যায় বলছেন, নবান্নের নির্দেশেই জমি মাফিয়া ধরপাকড়ের কাজ চলছে। তবে দেখে দেখে বিরোধীদের ধরা হচ্ছে। আসল তো তৃণমূলের লোকজন। তাঁদের ধরা হচ্ছে না। বিরোধী নেতার নাম করে অভিযোগ হয়ে যাচ্ছে।


তবে অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেট   ACP রাজেন ছেত্রী জানান, অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখে অভিযান করছি। অভিযান চলছে। এইটুকু দেবে বাকিটা ফেলে দেবে। এদিন নিউ জলপাইগুড়ি থানায় যান ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ির বিজেপি বিধায়ক। অন্যদিকে পুরো ঘটনার তদন্তের দাবি জানিয়ে শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনারের কাছে স্মারকলিপি জমা দিয়েছে সিপিএম।