সৌমেন চক্রবর্তী, পশ্চিম মেদিনীপুর:বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (Vidyasagar University) রেজিস্ট্রারের নামে জাতপাত তুলে (Caste Discrimination) অপমান করার অভিযোগ তুললেন খোদ ডেপুটি রেজিস্ট্রার। কোতোয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করার পাশাপাশি রাজ্যপাল এবং এসসি কমিশনেও জানিয়েছেন অভিযোগ। যদিও সব অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন রেজিস্ট্রার। বিষয়টি দুঃখজনক, দাবি উপাচার্যের।


যা অভিযোগ...
একদিনও মেলেনি যোগ্য সম্মান। তফশিলি জাতিভুক্ত বলে জুটেছে লাঞ্ছনা আর ঘৃণা। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কিছু হয়নি। বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ তুললেন খোদ ডেপুটি রেজিস্ট্রার অমলকুমার ভুঁইয়া। তাঁর কথায়, 'আমি প্রতিদিন, প্রতি মুহূর্তে অত্যাচারিত হয়েছি। আমার অপরাধ, আমি দলিত সম্প্রদায়ে জন্মগ্রহণ করেছি। দুর্নাম, দুর্নাম, লাঞ্ছনা, ঘৃণা.... তফশিলি জাতি আমার জন্মসূত্রে বলে জয়ন্ত নন্দী এক দিনও আমাকে সম্মান দেননি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও আমার বিচারে সাড়া দিচ্ছে না। জয়ন্ত নন্দীর অঙ্গুলীহেলনে..... ভাইস চ্যান্সেলর চাইলেও জয়ন্ত নন্দী সেটায় বাধা দিচ্ছেন।' ডেপুটি রেজিস্ট্রারের দাবি, এ নিয়ে কোতোয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ করার পাশাপাশি এসসি-এসটি কমিশন এবং রাজ্যপালের কাছেও লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। তবে, যাঁর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ, বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার জয়ন্তকিশোর নন্দীর দাবি, সব অভিযোগ ভিত্তিহীন। ফোনে জানালেন, সব অভিযোগ মিথ্যা। তবে বিচারাধীন বিষয়। তাই এই নিয়ে নিয়ে কোন মন্তব্য করবেন না। বিষয়টি দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছেন উপাচার্য সুশান্ত চক্রবর্তী। বললেন, 'দুঃখজনক বিষয়টি তাড়াতাড়ি সমাধান হোক, এটাই চাইব।' কোতোয়ালি থানা সূত্রে খবর, এফআইআর রুজু হয়েছে, তদন্ত শুরু হয়েছে। গত ২৬জুলাই কোতোয়ালি থানায় ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৪১, ৫০৬ ও এসসি-এসটি প্রিভেনশন অফ অ্যাট্রোসিটি আইনের ৩ নম্বর ধারায় এফআইআর হয় বলে জানা গিয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বৈষম্যমূলক আচরণের অভিযোগ নতুন নয়। গত ফেব্রুয়ারিতে আইআইটি বম্বে ক্যাম্পাসে ১৮ বছরের এক পড়ুয়ার মৃত্যুর খবরে শোরগোল পড়ে যায় বাণিজ্যনগরীতে। সে বারও জাতপাত নিয়ে বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছিল দেশের অন্যতম সেরা উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।


আগেও অভিযোগ...
সাততলা থেকে ঝাঁপ দিয়ে ১৮ বছর বয়সি দর্শন সোলাঙ্কি আত্মঘাতী হন বলে অভিযোগ। দর্শন আদতে গুজরাতের ছেলে, বিটেক পড়ছিলেন। মর্মান্তিক পরিণতির মাস তিনেক আগেই আইআইটি বম্বে-তে ভর্তি হন। দর্শনের সহপাঠীদের দাবি, ক্যাম্পাসে তফসিলি পড়ুয়াদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়, যা কিনা মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয় দর্শনকে। বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে কী হয়েছিল, তা অবশ্য এখনও স্পষ্ট নয়। তদন্ত শেষ হওয়ার পরই তা নিশ্চিত ভবাে বলা সম্ভব হবে।


আরও পড়ুন:'চাকরি হোক, মমতা চান না', মন্তব্য শুভেন্দুর