কলকাতা: জাতীয় কর্মসমিতির নামে প্রবীণ নেতাদের তৃণমূলে (TMC) কোণঠাসা করে দেওয়া হচ্ছে বলে এ বার অভিযোগ তুললেন রাজ্য বিজেপি-র প্রাক্তন সভাপতি তথা বিজেপি-র সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। তাঁর দাবি, রাজ্যে সম্পূর্ণ ভাবে ক্ষমতা হস্তগত করার পরিকল্পনার অঙ্গ এই সিদ্ধান্ত। প্রবীণদের সরিয়ে নবীনদের হাতে দলের রাশ তুলে দেওয়ার পথে এগোচ্ছে তৃণমূল (TMC)।
তৃণমূলের অন্দরে দ্বন্দ্ব চলছে বলে খবর উঠে আসছে বেশ কয়েক মাস আগে থেকেই। সম্প্রতি তা চরমে ওঠে। নেপথ্যে ছিল 'এক ব্যক্তি, এক পদ' নীতির পক্ষে অভিষেকের সওয়াল। সেই পরিস্থিতিতে শনিবার কালীঘাটে দলের নেতাদের নিয়ে জরুরি বৈঠক করেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে দলের জাতীয় কর্মসমিতির (TMC National Working Committee) ঘোষণা করেন তিনি। তাতে নিজেকে রাখার পাশাপাশি দলের ১৯ জন নেতা-নেত্রীকে সামিল করেন।
কিন্তু এর পিছনে আসলে রাজ্যে দলের নেতৃত্ব তরুণ প্রজন্মের হাতে তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বলে মন্তব্য করেন দিলীপ। ফোনে এবিপি আনন্দকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, "দেখুন, তৃণমূলের আবার জাতীয় কর্মসমিতি। সেটা কী আমি বুঝি না। রাজ্যের সিনিয়র নেতাদের জাতীয় কর্মসমিতিতে পাঠিয়ে দিয়ে, রাজ্যে ক্ষমতা হস্তগত করার পরিকল্পনা রয়েছে। যাঁরা মোটামুটি অভিজ্ঞ নেতা, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাঁ হাত, ডান হাত বলে পরিচিত, সকলকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে, যাতে রাজ্যে ক্ষমতার রাশ থাকে জুনিয়র টিমের হাতে।"
আরও পড়ুন: TMC Update: তৃণমূলের জাতীয় কর্মসমিতিতে অভিষেক, মমতা ছাড়া ১৯ জন, কালীঘাটের বৈঠকে সিদ্ধান্ত
উল্লেখ্য, এ দিন কালীঘাটের বৈঠকে জাতীয় কর্মসমিতির ঘোষণা করেন মমতা। নিজের পাশাপাশি তাতে সদস্য হিসেবে মোট ২০ জনের নাম রাখা হয়েছে। এই তালিকায় রয়েছেন, মমতা নিজে, অমিত মিত্র, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুব্রত বক্সি, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee), ফিরহাদ হাকিম, বুলুচিক বরাইক, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, কাকলি ঘোষ দস্তিদার, সুখেন্দুশেখর রায়, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, অসীমা পাত্র, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, যশবন্ত সিনহা, মলয় ঘটক, রাজেশ ত্রিপাঠী, অনুব্রত মণ্ডল, অরূপ বিশ্বাস এবং গৌতম দেব।
দীর্ঘ সময় ধরেই দলে 'এক ব্যক্তি, এক পদ' নীতির পক্ষে সওয়াল করে আসছিলেন অভিষেক। সেই নিয়ে টানাপোড়েনের মধ্যেই সম্প্রতি নতুন করে 'এক ব্য়ক্তি, এক পদ' নিয়ে দাবি জোরাল হতে শুরু করে। নেটমাধ্যমে অভিষেকের সমর্থনে এগিয়ে আসেন ছোট-বড় বহু তৃণমূল নেতাই। তার মধ্যেই এ দিন কালীঘাটে জরুরি বৈঠক করেন মমতা। সেখানেই দলের জাতীয় কর্মসমিতির ঘোষণা করেন তিনি।