অর্ণব মুখোপাধ্যায়, পার্থপ্রতিম বিশ্বাস ও সুকান্ত মুখোপাধ্যায়, কলকাতা : ট্রাফিক বিধি ভঙ্গে, পরিবহণ দফতর জরিমানার অঙ্ক বাড়ানোর পরেই পথে নেমে আরও কড়া হাতে রাশ ধরল পুলিশ। বর্ধিত হারে ফাইন গুনতে হল আইনভঙ্গকারীকের। জরিমানা বৃদ্ধির প্রতিবাদে সরব হয়েছে বাস মালিক ও অ্যাপক্যাব সংগঠন। চলছে রাজনৈতিক তরজা।


গাড়ি বা বাইক নিয়ে রাস্তায় বেরোলে কিন্তু সাবধান ! কারণ, এবার থেকে ট্রাফিক আইন ভাঙলেই গুণতে হবে মোটা অঙ্কের জরিমানা। বিনা হেলমেটে ধরা পড়লে আর ১০০ টাকা ফাইন দিয়ে পার পাওয়া যাবে না। দিতে হবে ১ হাজার টাকা। অর্থাৎ আগের চেয়ে ১০ গুণ বেশি।


বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালালে ফাইন ৫ হাজার টাকা। আগে এই অপরাধে ছোট গাড়ির ক্ষেত্রে ফাইনের অঙ্ক ছিল ৪০০ টাকা। আর বড় গাড়ির ক্ষেত্রে ফাইন ধার্য ছিল ১ হাজার টাকা। এখন দুটো ক্ষেত্রেই তা বাড়িয়ে করা হয়েছে ৫ হাজার টাকা। 


আরও পড়ুন ; সাবধান ! বেপরোয়া গাড়ি চালালেই দিতে হবে আরও জরিমানা, জানুন কত ?


রাস্তায় গাড়ি নিয়ে রেষারেষি করলে প্রথমবার ৫ হাজার টাকা ফাইন। দ্বিতীয়বার একই অপরাধ করলে গুণতে হবে ১০ হাজার টাকা। ড্রাইভিং লাইসেন্স আছে, কিন্তু চালকের সঙ্গে নেই, এমন ক্ষেত্রে প্রথমবার ফাইন দিতে হবে ৫০০টাকা। একই ভুলে দ্বিতীয়বার দেড় হাজার টাকা জরিমানা। 


শহরে ট্রাফিক বিধিভঙ্গের প্রবণতা এবং বেপরোয়া গতিতে লাগাম পরাতে জরিমানার অঙ্ক বাড়িয়েছে পরিবহণ দফতর। নতুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হতেই, কলকাতার পথে কড়াকড়ি। সাধারণতন্ত্র দিবসে রাসবিহারী মোড়ে দেখা গেল পুলিশি তত্পরতার ছবি। হেলমেটবিহীন বাইক সওয়ারিদের ১০০-র বদলে জরিমানা দিতে হল হাজার টাকা।


পরিবহণ মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইভ স্লোগানে থাকবে। আমি চাই না, ফাইন থেকে টাকা আসুক। আমি চাই দুর্ঘটনা না ঘটুক। সব ঠিকঠাক চলুক।


এদিকে ট্রাফিক বিধি ভঙ্গে ফাইন বৃদ্ধির প্রতিবাদে সরব হয়েছে একাধিক বাস ও অ্যাপক্যাব সংগঠন। বাণিজ্যিক পরিবহণের সঙ্গে যুক্ত মালিক সংগঠন প্রতিবাদে যাচ্ছে।


সংগঠন সূত্রে খবর, নতুন ট্রাফিক বিধি প্রত্যাহারের আর্জি জানিয়ে বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী ও পরিবহণমন্ত্রীকে চিঠি দেওয়া হবে। 


রাজ্যের এই সিদ্ধান্তে সমালোচনায় সরব হয়েছে বিরোধীরাও। রাজ্য বিজেপি-র সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, রাজ্যের কোষাগার ফাঁকা। তাই কড়াকড়ি।


বেপরোয়া গতিতে লাগাম পরাতে ২০১৯ সালে কড়া পদক্ষেপ করে কেন্দ্র। এক ধাক্কায় অনেকটা বাড়ানো হয় জরিমানার অংক। তখন রাজ্য সরকার জানায়, নতুন মোটর ভেহিকেলস আইন রাজ্যে লাগু হবে না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই কড়াকড়ির রাস্তাতেই হাঁটল রাজ্য পরিবহণ দফতর।