সমীরণ পাল ও আব্দুল ওয়াহাব, উত্তর ২৪ পরগনা : উমা-বিদায়ের লগ্নে কাছাকাছি দুই বাংলা। এপারে উত্তর ২৪ পরগনার টাকি, ওপারে বাংলাদেশের সাতক্ষীরা। ইছামতীতে প্রতিমা নিরঞ্জন দেখতে ভিড় করলেন দুই পাড়ের মানুষ। উত্‍সবের আবহে মুছে গেল সীমান্তের বেড়াজাল। 


দুই বাংলার মিলনক্ষেত্র


এক পাড়ে ভারত (India), একপাড়ে বাংলাদেশ (Bangladesh)। দুই দেশকে ছুঁয়ে মাঝখান দিয়ে বয়ে চলেছে ইছামতী। দশমীতে এই নদীই হয়ে ওঠে ভারত-বাংলাদেশের মিলনক্ষেত্র। উমার বিদায়বেলায় মিশে যায় দুই বাংলার হৃদয়। প্রতিবারের মতো, বুধবারও ভারত-বাংলাদেশ, দুই দেশেরই প্রতিমা বিসর্জন হয় ইছামতীতে। আর এই দৃশ্যের সাক্ষী হতে ভিড় করেন অসংখ্য মানুষ। 


কড়া নজরদারি


অন্যান্য বারের মতো এবারও নদীতে ছিল কড়া নজরদারি। করোনার কারণে, গত দু’বছর বন্ধ ছিল মিলন উৎসব। তবে রীতি-রেওয়াজে কোনও ছেদ পড়েনি। প্রত্যেক বছর দশমীর দিন দুপুরে টাকি-পূর্বের জমিদারবাড়ির প্রতিমা নিরঞ্জন করা হয় ইছামতী নদীতে। এরপর অন্যান্য বারোয়ারি পুজো এবং বাড়ির প্রতিমা বিসর্জন শুরু হয়। 



আসছে বছর আবার হবে


বাপের বাড়ি থেকে আবার কৈলাসে পাড়ি উমার। ঢাকের বোলে বিসর্জনের সুর। আরও একটা বছরের প্রতীক্ষা। প্রতিমা নিরঞ্জনের পরেই শুরু হয় বিজয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়। সঙ্গে কোলাকুলি, মিষ্টিমুখ মাস্ট। রকমারি মিষ্টিতে যেন উৎসব শেষের কষা স্বাদ ঢেকে নিয়ে নতুন লড়াই শুরুর চেষ্টা।


বেজে গিয়েছে বিসর্জনের বাজনা ৷ ছেলে-মেয়েদের নিয়ে বাপের বাড়ি থেকে কৈলাসে পাড়ি উমার। আনন্দে উচ্ছ্বাসের মাঝেই মিশেছে বিষণ্ণতার সুর৷ মণ্ডপে মণ্ডপে দেবী-বরণের পাশাপাশি সিঁদুর খেলা। এরপর মা-কে বিদায় জানানোর পালা। সিঁদুর খেলে, মিষ্টিমুখে প্রতিমা নিরঞ্জনের পর কোলাকুলি, শুভেচ্ছা বিনিময়, মিষ্টিমুখ৷ বাঙালির চিরাচরিত রীতি। হাসি মুখে মাকে বিদায় জানিয়ে আরও একটা বছরের অপেক্ষা৷ এখন শুধু দু’চোখ ভরে মাকে দেখে নেওয়া আর ঢাকের তালে মনে মনে বলা, আসছে বছর আবার এসো মা৷


মিষ্টির বাহার


ট্র্যাডিশনাল রসগোল্লা বা কড়া পাকের সন্দেশই হোক আর হাল ফ্যাশনের চকোলেট সন্দেশ হোক। দশমীর সকাল থেকে দোকানে দোকানে তাই মিষ্টি কেনার ভিড়। বেজায় ব্যস্ত মিষ্টির দোকানের কর্মচারীরাও। আনন্দ উচ্ছ্বাসের মাঝেই বিষণ্ণতার সুর। উৎসব শেষ। থেকে যাক মিষ্টিমুখের রেশ।


আরও পড়ুন- রাজনীতির পরত সরিয়ে সিঁদুর খেলায় মাতলেন অগ্নিমিত্রা পাল, অংশ নিলেন ধুনুচি নাচে